সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। ১১ আগস্ট বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার বিকেলে বৈরী আবহাওয় নারায়ণগঞ্জের সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ সমবেত হন প্রেসক্লাবের সামনে। খুলনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর সংগঠিত জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী বক্তব্য রাখেন তাঁরা এবং অবিলম্বে এসব নির্যাতন বন্ধ করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন হিন্দু নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, বাঙালি জাতির শোকের মাস আগস্ট। ১৫ আগস্টকে সামনে রেখে খুলনার রুপসায় একটি সবযাত্রার মিছিল যাচ্ছিলো। সেই মিছিলটি একজন ইমাম কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার প্রশাসনসহ সবাই বিষয়টির শান্তিপূর্ন সমাধান করে দিয়েছিলো। তারপরেও সেখানে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলো। এরকম বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় প্রতিদিনই হিন্দুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে। সর্বশেষ বগুরায় হামলা করা হলো, সাভারের নবীনগরের এক অধ্যাপককে গুম করে হত্যা করা হলো। এসব কিসের আলামত?
তিনি বলেন, আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সকলে জাতি ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধ করে এ দেশকে স্বাধীন করেছি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। কিন্তু আমরা গভীর দুঃখের সহিত লক্ষ্য করছি একটি কুচক্রী মহল এ দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চোরাগুপ্তা হামলা চালাচ্ছে। মুসলমান ভাইদের বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন থাকবে, ত্যাগের মহিমায় কোরবাণী ঈদ উদযাপিত হয়। কিন্তু তারা কারা যারা কোরবাণী দেয়ার পর সিলেটের কালি মন্দিরে কোরবানীর পশুর উজুড়ী ছিটিয়ে দেয়। এই দুবৃত্তরা কোন নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারী নয়। তারা মুসলমানদেরও ভয় পায়। আর ভয় পায় বলেই তারা দিনের আলোতে নয় রাতের আধারে এ ধরনের অপকর্মগুলো করে। তাই আমাদের আতঙ্কিত হলে চলবেনা। মুসলমান, হিন্দু বৌদ্ধা খ্রীষ্টান আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই কুচক্রী মহলকে প্রতিহত করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এই করোনাকালীন সময়ে সরকারের বলিষ্ঠ ভূমিকায় দেশের বিপর্যয়কে মোটামুটি কাটিয়ে আমরা যখন ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করবো ঠিক তখনি খুলনায় আবারো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানো হলো। আর এ হামলার উদ্দেশ্য হলো দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতীকে বিনষ্ট করে সরকারের উজ্জ্বল ভাবমূর্তীকে ক্ষুন্ন করা।
তাই দেশের সরকার প্রধানের কাছে আমাদের আবেদন, আপনি সকল ক্ষেত্রে সফলতার প্রমান রেখে চলেছেন। যারা এ ধরনের চোরাগুপ্তা হামলার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছে তাদের খুঁজে বের করতে পুলিশ প্রশাসনের ওপর দায়িত্ব দিবেন। এবং আমরা বিশ্বাস করি দেশের চৌকস পুলিশ বাহিনী দুবৃত্তকারীদের খুঁজে বের করে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার এ দুবৃত্তায়ন প্রতিরোধ করতে সফল হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপনের সঞ্চালনায় এসময়ে আরোও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, মহানগরের সভাপতি অরুণ কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা, ফতুল্লা থানা কমিটির সভাপতি রঞ্জিত মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, সোনারগাঁওয়ের সাধারণ সম্পাদক এড. প্রদীপ ভৌমিক, সিদ্ধিরগঞ্জের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সহ-সভাপতি দুলাল রায়, সাধারণ সম্পাদক খোকন বর্মন, সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন রৌদ্র, বন্দরের সভাপতি শংকর দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, যুগ্ম সম্পাদক ভোলানাথ সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন দাস, পূজা পরিষদ নেতা হিমাদ্রি সাহা হিমু, তপন দাস, তপন গোপ সাধু, কৃষ্ণ আচার্য, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বিজয় সরকার, সাধারণ সম্পাদক কালীপদক মল্লিক, সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক রাজীব তালুকদারসহ জেলা ও মহানগর এবং উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।