সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আওয়ামীলীগের দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বেশ ফ্যাসাদে পড়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু। মুলত নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে আওয়ামীলীগের ভিতর থেকে আরেক আওয়ামীলীগ বের করতে চাচ্ছেন এই চিকিৎসক কাম আওয়ামীলীগ নেতা। উপজেলা আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে নিজ অনুগামী নেতাকর্মীদের নিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করতে গিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন তিনি।
দুই দফায় তার অনুগামীদের নির্মিত প্যান্ডেল, ব্যানার ও ফ্যাস্টুন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। যদিও এই ঘটনার জন্য ডাক্তার বিরু উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের অবগত করবেন বলেও মিডিয়াতে জানিয়েছেন। তবে উল্টো অভিযোগ যাচ্ছে বিরুর বিরুদ্ধেই। কারন তিনিই কেবল দলীয় শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করে পৃথক আওয়ামীলীগের বলয় সৃষ্টির পায়তারা করছেন বলে নেতাকর্মীরা অভিযোগ তুলেছেন।
যদিও এসব অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না বিরু অনুগামীরা। তাদের দাবি- জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পৃথক পৃথকভাবে যে কেউ পালন করলেও সেখানে ভাংচুর করাটা সমুচিন নয়। এটা রাজনীতির শিষ্টাচারের মধ্যেও পড়েনা। কারন সেখানে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার ফ্যাস্টুন ছিল। এটা বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করার সামিল।
ঘটনা সুত্রে জানাগেছে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন উপলক্ষ্যে পুরো সোনারগাঁয়ে উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে। আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোন যে, একই প্লাটফর্মে থেকে বঙ্গবন্ধুকে যথাযোগ্য মর্যাদায় সম্মানের সহিত দিবসটি পালন করবে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগ। এর বাহিরে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করবে তাদেরকে প্রতিহত করা হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গত ৮ আগস্ট একটি প্রস্তুতিমুলক সভায়।
কিন্তু উপজেলা আওয়ামীলীগের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আওয়ামীলীগের চেইন অব কমান্ড ও দলীয় শৃঙ্খলাকে পাস কাটিয়ে সোনারগাঁও পৌরসভার সামনের মাঠে একটি কর্মসূচির উদ্যোগ নেন আবু জাফর চৌধুরী বিরু। যেখানে আয়োজন করেছেন তার অনুগামী নেতাকর্মীরা। কিন্তু জাতীয় শোক দিবসের আগের দিন বিকেলে অজ্ঞাতনামা দুবৃর্ত্তরা প্যান্ডেল, ব্যানার, ফ্যাস্টুন, চেয়ার ও মঞ্চ ভাংচুুর করে রেখে যায়। পরবর্তীতে আবারো একই স্থানে কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেন বিরু। জাতীয় শোক দিবসের দিন প্রকাশ্যেই কিছু যুবক বয়সী লোকজন ভাংচুর চালায়। পুণরায় হামলার ঘটনার পর সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম, সোনারগাঁ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান, পরিদর্শক তদন্ত শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় প্যান্ডেল ভাংচুরে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তারা। কিন্তু কর্মসূচি পালনে পরবর্তীতে বিরু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতাও নিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরু অভিযোগ করেছেন, ‘জাতির পিতার শাহাদাতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলা ভাংচুর করে জাতির পিতাকে অবমাননা করেছেন। এটা অবশ্যই অমার্জনীয়। কায়সারের নির্দেশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কিছু উশৃঙ্খল যুবক এ হামলা ও ভাংচুর চালায়। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমি কেন্দ্রে অভিযোগ দিবো।’
অন্যদিকে এখানে উল্লেখ্যযে, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামও এদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করছেন।
এ কারনে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, ২০০১ সালের পর বিএনপি-জামাত জোট সরকার আমলে যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার, ত্যাগী নেতাকর্মী তারা একজোট হয়েছেন এ কারনেই, তারা এবার ২০০৮ সালের পর যেসব কাউয়া হাইব্রিড মার্কা নেতা আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করেছেন তাদেরকে প্রতিহত প্রতিরোধ করার মিশনে।