সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানা পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীর আয়োজিত এক দোয়া ও গণভোজ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হয়েছেন আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। এমন ঘটনায় সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী, সচেতন নাগরিক ও সাধারণ মানুষের মাঝে নিন্দার ঝড় ওঠেছে। তারা বলছেন- একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসার অভিযুক্ত একাধিক মামলার আসামি রাসেল আহাম্মেদ নামের এক ব্যক্তির আয়োজিত কর্মসূচিতে কিভাবে কায়সার হাসনাত প্রধান অতিথি হয়ে আসছেন সেটা বোধগম্য নয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৫ই আগস্ট হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আগামী ২২ আগস্ট রবিবার পিরোজপুর ইউনিয়নের কুরবানপুর এলাকায় এক দোয়া ও গণভোজের আয়োজন করেছে রাসেল আহাম্মেদ নামে এক ব্যক্তি।
এই কর্মসূচির বিষয়ে বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে ব্যানার সাটিয়েছে রাসেল আহাম্মেদ। যে ব্যানারে ছবি সহ প্রধান অতিথি হিসেবে দেখানো হয়েছে সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও পিরোজুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম এবং সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুকে। একই ব্যানারে রাসেল আহাম্মেদের ছবিও ছাপানো হয়েছে।
দোয়া ও গণভোজের পূর্বেই এমন ব্যানার বিভিন্ন এলাকায় সাঁটানোর বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ- মুলত আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের ছবি সহ বিভিন্ন এলাকায় রাসেল আহাম্মেদ ব্যানার সাঁটিয়েছে তার মাদক ব্যবসা পাকাপোক্ত করতে। যাতে এলাকায় রাসেল আহাম্মেদ প্রভাববিস্তার করে হরদম মাদক ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে। যেখানে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স সেখানে মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা, যা বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়।
জানাগেছে, কয়েক বছর পূর্বে সোনারগাঁও থানা পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। ওই তালিকায় পিরোজপুর ইউনিয়ন থেকে কুরবানপুর এলাকার সাফায়েত উল্লাহর ছেলে রাসেল আহাম্মেদের নাম তালিকাভু্ক্ত করা হয়। তাকে ৪৫নং মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।
রাসেল আহম্মেদের বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানা ও লালবাগ থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুটি মামলা সহ ৫টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারী মারামারির মামলায় এহাজারভুক্ত আসামি। মামলা নং ৭৮। ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩৭৯/৫০৬ ধারায় ওই মামলাটি দায়ের করা হয়।
এ ছাড়াও ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই একটি মামলায় আসামি হয় রাসেল আহাম্মেদ। যার মামলা নং ৮০/৫৪৮। ২২(গ)/২৫, ১৯৯০সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।
২০১৮ সালের ৪ মার্চ ডিএমপির লালবাগ থানায় ৮/৭৪ নং একটি মাদক মামলার আসামি রাসেল আহাম্মেদ। ১৯(১) এর ৯(খ) এর ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।
২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি সোনারগাঁও থানায় আরেকটি মারামারির মামলায় আসামি হয় রাসেল আহাম্মেদ। যার মামলা নং ২৮। ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৮৯/১১৪/৫০৬ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। এখানে হত্যাচেষ্টার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
২০১৯ সালের ২৮ জুন তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানায় আরেকটি মারামারির মামলা হয়। যার মামলা নং ৭৫। ১৪৩/৩০৭/৩২৬/৩৮৫/৩৭৯/১১৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।