সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতিতে যে বিবাদমান বিরোধ দ্বন্ধ প্রকট আকার ধারণ করেছে সেই দ্বন্ধ ও বিরোধের আগুনে তা দিচ্ছে আওয়ামীলীগের বেশকটি অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগও। উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বের বাহিরে গিয়ে এখানে রাজনীতি করছেন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারা। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই রাজনীতি করছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বের বাহিরে। এমনটা চললেও আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কোনো ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এখনও।
মহান স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন নিয়ে সোনারগাঁয়ে আওয়ামীলীগের দ্বন্ধের বিষয়টি প্রকাশ্য হয়ে ওঠে। যদিও সিংহভাগ নেতাকর্মী রয়েছেন একদিকে অন্যদিকে ব্যক্তি ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু রয়েছেন অপরদিকে। তার সঙ্গে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রাশেদ ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহামুদও রাজনীতি করছেন। তারা উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বকে পাশ কাটিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের বিরোধ দ্বন্ধকে উস্কে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওটেছে।
গত ১৪ আগস্ট ও ১৫ আগস্ট সোনারগাঁও পৌরসভার সামনের মাঠে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর নেতাকর্মীদের আয়োজিত প্যান্ডেল ভাংচুর করা হয়। মুল কারন হিসেবে জানাগেছে, ওই প্যান্ডেলের কয়েক গজ সামনেই উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুই দফায় প্যান্ডেল ভাংচুরের ঘটনায় আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে দায়ী করেন ডা. বিরু।
পরবর্তীতে ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় দলীয় শৃঙ্খললা ভঙ্গের অভিযোগ তোলা হয়। এর আগে সাদিপুরে এক অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম অভিযোগ তুলেছেন, ডা. বিরু ছাত্রশিবিরের রাজনীতি করতো এবং তার পিতাও স্বাধীনতাবিরোধী ছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল সোনারগাঁয়ে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে ডা. বিরুর পক্ষে অবস্থান নিয়ে কায়সারদের রীতমত শাসিয়েছেন। এর জের ধরে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাইও সেক্রেটারি শহীদ বাদলের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্র্রতি আরেকটি অনুষ্ঠানে ডা. বিরু কায়সারদের বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন। এখন নিয়মিত পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলছে। সেই রেস জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারির মধ্যেও শুরু হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা আওয়ামীলীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোও বিভক্তি হয়ে পড়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড বলতে কিছুই নেই এসব সংগঠনগুলোর মাঝে। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগও উপজেলা আওয়ামীলীগের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে গিয়ে রাজনীতি করছে। তারা ডা. বিরুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু উপজেলা আওয়ামীলীগের মুলধারার রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও সাধারণ সম্পাদক আলী হায়দার অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামীলীগের ডা. বিরুর বলয়ে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাসুদ রানা মানিকও অবস্থান নিয়েছেন এই বলয়ে। যেখানে সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম রবিন রয়েছেন আওয়ামীলীগের মুলধারায়। দীর্ঘদিন যাবত তারা পৃথকভাবে কর্মসূচিও পালন করে আসছেন।
একইভাবে স্বতন্ত্র সংগঠন শ্রমিকলীগের রয়েছে দুটি পাল্টাপাল্টি কমিটি। চূড়ান্ত হয়নি সেখানকার শ্রমিকলীগের কমিটি। কৃষক লীগের অবস্থানও স্পষ্ট নয়। মৎস্যজীবী লীগের অস্তিত্বও পাওয়া যাচ্ছেনা। এসব সংগঠনগুলোর নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।