সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের একটি পক্ষ মনে করছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে এবং একজন মেয়র হিসেবে ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বিকল্প কেউ নাই। একইভাবে আওয়ামীলীগের আইভী অনুসারী ও বামপন্থী রাজনীতিকরাও মনে করছেন এমনটা। এমন ধারণায় ঘা ভাসিয়ে দেন বিএনপিরও অনেক নেতাকর্মী, মুলত যাদের সঙ্গে আইভীর সম্পর্ক বেশ ভাল। এমন ধারণার উপর ভিত্তি করে নারায়ণগঞ্জের এক শ্রেণির বিশিষ্ট নাগরিক কিংবা মিডিয়াতেও প্রচারণা চলছে যে, সিটি কর্পোরেশনের আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে আইভীর বিকল্প নাই! তাহলে যেসব শীর্ষ নেতা রয়েছেন নারায়ণগঞ্জের তারা সবাই কি অযোগ্য?
এমন প্রচারণার পর আওয়ামীলীগেরই বিশাল অংশের প্রশ্ন আইভীকে কেন অপ্রতিদ্বন্ধি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে? আওয়ামীলীগের জন্য আইভীর ভুমিকা কি? কি তার ত্যাগ? কি তার অবদান? আর এমন কিইবা দলের জন্য আইভী করেছেন যার জন্য আইভীকেই বারবার দল মুল্যায়ন করবে? নারায়ণগঞ্জে কি সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা করার মত কোনো যোগ্য ব্যক্তি নেই? মেয়র আইভীকেই একমাত্র যোগ্য হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে মেয়র আইভীকে আকাশে তোলার চেষ্টা করছেন কিছু স্বার্থনেশী মহল যারা দোষামোদী করে ভবিষতে আরো দোকানপাট ফ্লাট হাট-ঘাট উপহার হিসেবে পেতে পারে। এমনটা অভিযোগ আওয়ামীলীগেরই বিশাল অংশের নেতাকর্মীদের। যারা আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নতুন কাউকে দেখতে চান।
সিটি কর্পোরেশনে মেয়র আইভীর বিকল্প নাই এমন প্রচারণার পর নারায়ণগঞ্জের প্রায় দুই ডজন নেতার নাম নেতাকর্মীদের মুখে ওঠে এসেছে। যাদের মধ্যে বেশির ভাগ ব্যক্তি দীর্ঘ ৪০/৪৫ বছর ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছেন। এরশাদবিরোধী আন্দালন থেকে শুরু করে বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে যারা হামলা মামলা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিএনপি জামাতের গত সরকার আমলে রাজপথে যারা সক্রিয় ভুমিকা রেখেছেন। এমন সব ব্যক্তিদের রাজপথে ত্যাগ ও ভুমিকার দ্বারে কাছেও নেই মেয়র আইভীর ভুমিকা। শুধুমাত্র ভোটের রাজনীতিই করেন মেয়র আইভী। আওয়ামীলীগের দলীয় কিংবা সাংগঠনিক কার্যক্রমে যার ভুমিকা নাই।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত, মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সম্পাদক শাহনিজাম, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, করোনাকালে মানবতার সেবায় নিয়োজিত আলোচিত লিপি ওসমান, ছাত্র ও যুব সমাজের আইডল একেএম অয়ন ওসমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এমএ রশিদের মত নেতারা কি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হলে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না? উপরোক্ত অনেক নেতাদের চেয়ে বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে মেয়র আইভীর ভুমিকা কি বেশি ছিল? বিএনপি জামাত সরকার আমলে মেয়র আইভী কয়টা মামলায় আসামি হয়েছিলেন. কয়টা মিছিল করেছিলেন? কয়বার কারাভোগ করেছিলেন? নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির একাধিকবারের সাবেক সেক্রেটারি ও সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের মত ব্যক্তিরাও সিটি কর্পোরেশন চালাতে অযোগ্য? এমন সব প্রশ্ন তৈরি হয়েছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে যারা এবার পরিবর্তন চায়। একই সঙ্গে মেয়র আইভীর বিকল্প নাই এমন শ্লোগানে এমন ভাওতাবাজি প্রচারণা বন্ধের দাবিও জানান আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা।