সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা রামারবাগ এলাকায় কাইল্লা গেসু ও আজমত আলীর সন্ত্রাসী বাহিনীর গ্রেপ্তার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নির্যাতনের শিকার পরিবারগুলো। আগের দিন ফতুল্লা মডেল থানায় গেসু ও আজমত বাহিনীর ৫০ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন হামলায় আহত আজিমের বাবা আব্দুল গফুর।
আহত আজিমের বাবা আব্দুল গফুর দাবি করেন- নিজেরা রাজনীতির সাথে জড়িত না থাকলেও জাতীয় নির্বাচনে একটি পক্ষের হয়ে কাজ করার জেরে এই আক্রমন হয়েছে। সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার দাবি করার পাশাপাশি শান্তিপ্রিয় রামারবাগে নিরাপত্তা ও শান্তি ফেরানোর জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
২৪ রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সন্ত্রাসীদের হামলায় আহতদের স্বজনরা। সংবাদ সম্মেলনে হামলায় আহত আজিমের বাবা আব্দুল গফুর, ফুফু সেলিনা, সিথী, আহত আকাইদের বাবা আব্দুর রাজ্জাক, খালা শাহিদা, ফুফু রওশন, চাচী রাহিমা, আহত নাজমুলের মামা রাজ্জাক এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিউনিটি পুলিশের সহ-সভাপতি ও ফতুল্লা থানা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল গফুর অভিযোগ করেন, কুতুবআইল কাঠের পুল এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন ওরফে কাইল্যা গেসু দীর্ঘদিন যাবত এলাকার বাইরের স্কুল কমিটিগুলো নিয়ন্ত্রণ করতো। আমরা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ফতুল্লা থানা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক স্পিড বোট ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের পরামর্শ চলি।
আহত আকাইদের বাবা রাজ্জাক বলেন, আমরা ঝুট ব্যবসার সাথে জড়িত নই। গিয়াসউদ্দিন ওরফে কাইল্যা গেসু, তার ছোট ভাই জুট ব্যবসায়ী আজমত, মুরাদ, রাজিব, নজরুল, জসীম ও হেলাল রামারবাগ এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি বলেই দেশী ও বিদেশী অস্ত্র-সন্ত্র নিয়ে হামলা করেছে। তাঁরা রামারবাগে মাদকের একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে কাজ করছিল। আমার ছেলে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র। সে কিংবা আমি কেউই রাজনীতির সাথে জড়িতনা। আমরা শুধু মোস্তফা কামালের পক্ষে থাকাতেই এই হামলা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি। একই সাথে রামারবাগ এলাকায় নিরাপত্তা ও শান্তি ফেরানোর দাবি জানাই।
অন্যদিকে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বেপরোয়া আজমত আলী ও গেস ওরফে কাইল্লা গেসু বাহিনীর ৫০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২২ মার্চ শুক্রবার রাতে ফতুল্লার রামারবাগ এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকাবাসীর উপর সন্ত্রাসী হামলা চালানোর ঘটনায় ২৩ মার্চ শনিবার ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওই এলাকার মফিজ উদ্দীনের ছেলে হামলায় আহত আব্দুল গফর। এই মামলায় প্রধান আসামী করা হয় সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম হোতা চিহ্নিত ঝুট সন্ত্রাসী আজমত আলীকে। মামলায় আজমত আলী সহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ্যসহ আরও ২৫/৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ- ফতুল্লার কাঠেরপুল এলাকার চিহ্নিত ঝুট সন্ত্রাসী গিয়াস উদ্দিন ওরফে কাইল্যা গেসু ও তার ভাই আজমত আলী বাহিনী সরকারী দলের নাম ব্যবহার করে কুতুবআইলের শিল্পাঞ্চলের গার্মেন্টের ঝুট সেক্টর এককভাবে প্রভাব বিস্তার করে আসছিল। এলাকায় আজমত আলী ও গেসু বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যারা এলাকায় নারী ব্যবসা, মাদক ব্যবসা ও ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে আসছে। সেখানে এককভাবে প্রভাব বিস্তার করতে বিশাল একটি বাহিনী গড়ে তোলে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে নাজেহালের শিকার হতে হয়। সেই বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছাড়াও মাদক ব্যবসা করে বেড়ায় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
মামলায় আসামী করা হয় বাহিনীর প্রধান আজমত আলী ও কাইল্যা গেসু, মনির হোসেন মুরাদ, রাজিব, সজিব, জুয়েল, খন্দকার শাওন, জসিম, আশ্রাফ, ফয়সাল, রিপন, নাঈম, দেলোয়ার, শাকিল, হ্নদয়, শহিদ, ইমন, সোহেল, সানি, রাজু, তাহের আলী, সোলেয়মান, রহিম বাদশা, শামীম, ডালিমসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২৫/৩০জন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানাগেছে, আসামীরা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শত্রæতা করে আসছিল। এর জের ধরে গত ২২ মার্চ শুক্রবার সন্ধায় আব্দুল গফুরের ছেলে আজিম রামারবাগ মসজিদ সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসী হামলা চালায়। দেশী ও বিদেশী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আজিমকে আহতের খবর তার আত্মীয়স্বজনেরা এগিয়ে গেলে তাদের উপরও হামলা চালায় গেসু ও আজমত বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় ১৫ জন আহত হন। হামলাকারীরা পরে আহতদের দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হামলা ভাংচুর চালিয়ে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।