সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সন্তান খুনের বিচার চেয়ে মামলাও করেছিলেন জালাল মিয়া। কিন্তু সন্তানের বিচার তো তিনি পেলেন না। উল্টো নিজেই সেই আসামীদের হাতে খুন হতে হয়েছিল তাকে। সেই খুনের আসামী যখন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তখন সাধারণ জনগণ রয়েছেন বেশ আতংকে। ভোটারদের দাবি তিনি ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে রূপগঞ্জে আরও খুনের ঘটনা ঘটতে পারে।
জানাগেছে, রূপগঞ্জের মাছিমপুুর এলাকার জালাল মিয়া হত্যা মামলার আসামী মোহাম্মদ সোহেল ভূঁইয়া। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে খুনের মামলার আসামী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভোট গ্রহণের আগেই আতংকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই হত্যাকান্ডের ঘটনার পর এলাকায় এক আতংকের নাম মোহাম্মদ সোহেল ভূঁইয়া। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন চশমা প্রতীকে।
জানাগেছে, ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নজরুল ইসলাম বাবু হত্যা মামলার আসামী সোহেল ভূঁইয়া। বাবুকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে ও গুলি করে খুন করেছিল তাওলাদ, লতিফ, হানিফ, ইকবাল সহ ২৫ জন সন্ত্রাসী। পরবর্তীতে নিহতের বাবা জালাল মিয়া বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলাটি নারায়ণগঞ্জ আদালতে বিচারধীন অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৪ মে সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন মামলার বাদী জালাল মিয়া। আদালতে স্বাক্ষীদের উপস্থিত করানোর আগেই খুন হন জালাল মিয়া।
এ ঘটনায় জালাল মিয়ার স্ত্রী শেলিনা বেগম বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্ল্যেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৮/১০জনকে আসামী করে আরেকটি খুনের মামলা রূপগঞ্জ থানায় দায়ের করেন। এই মামলায় মিরকুটিরছেও এলাকার আওলাদ হোসেনের ছেলে সোহেল ভূঁইয়া ১৪নং আসামী।
মামলায় সেলিনা বেগম দাবি করেছেন- ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে নজরুল ইসলাম বাবুকে স্থানীয় ১৫ জন সন্ত্রাসী বাসা থেকে ডেকে নিয়ে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনায় তার স্বামী জালাল মিয়া বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাক্ষীদের আদালতে উপস্থিত করানোর জন্য চেষ্টা করায় ২০১৫ সালের ১৪ মে জালাল মিয়ার তার মেয়ে মুক্তা আক্তারের সঙ্গে দাড়িয়ে থাকাকালীন সময়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় মাইক্রোবাসে করে সোহেল সহ আসামীরা জালাল মিয়াকে তুলে নিয়ে যায়। তখন সিএনজি করে তাদের মাইক্রোবাসের পিছু নেয় জালাল মিয়ার স্ত্রী ও স্বজনেরা। মাইক্রেবাসে মিরকুটিরছেও এলাকায় থামিয়ে জালাল মিয়াকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে। জালাল মিয়াকে উদ্ধারে সেখানে তার স্বজনেরা গেলে সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করতে করতে স্থান ত্যাগ করেছিল। পরবর্তীতে জালাল মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সেলিনা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন যেখানে আসামী হন সোহেল মিয়া।
এসব অভিযোগ ও মামলার বিষয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহেল ভূঁইয়ার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে জালাল মিয়া হত্যা মামলা রয়েছে। মামলায় আমি জামিনে আছি। এই মামলায় দুইবার তদন্ত হয়েছে যেখানে আমার কোন সম্পৃক্ততা পায়নি। যে কারনে অব্যাহতি দিয়েছিল আমাকে। এখন মামলাটি পিবিআইতে তদন্তধীন রয়েছে। আমি এখান থেকেও অব্যাহতি পাবো ইনশাহআল্লাহ। কারন আমি এই হত্যাকান্ডে জড়িত নই।
তিনি আরও বলেন, আমি হলফনামায় মামলার বিষয়টি উল্লেখ্য করেছি। এর আগে কলেজ জীবনে একটি হত্যা মামলা হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আমি অব্যাহতি পেয়েছি। নির্বাচনে আমার সঙ্গে যারা প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন আমি আশা করি তাদের ৪ জনের সমান ভোটের চেয়েও আমি বেশি ভোট পাবো ইনশাহআল্লাহ।’