সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী ১১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১৬টি ইউনিয়নেই ছিল সরকারি দল আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী। যার মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। বাকি ১১টি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। যার মধ্যে ৩টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নৌকা প্র্রতীকের প্রার্থীদের ভোটের অবস্থা নাজুক। এই তিনটি ইউনিয়নেই নৌকার প্রতিদ্বন্ধি তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। যে কারনে নিজ নিজ ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা বলছেন- আনারসের ভার সইতে পারছেনা নৌকা। আনারসের ভারে ডুবন্ত নৌকা।
ইউনিয়নগুলোর সাধারণ ভোটারদের মত- এসব ইউনিয়নে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। কোনো কোনো ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা রাজনৈতিকভাবে ফিগার হলেও তাদের প্রতিপক্ষের লোকজন অবস্থান নিয়েছেন নৌকাবিরোধী প্রার্থীদের পক্ষে। একইভাবে সাধারণ ভোটার ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিয়েছেন মনোনয়নবঞ্চিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পক্ষে। ফলে নৌকার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের ভোটের অবস্থান বেশ শক্ত। সান নারায়ণগঞ্জকে অনেকেই বলেছেন এই তিনটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা চেয়েছিলেন বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে। কিন্তু প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা নানা বাধা বিপত্তি ও হুমকি ধমকির পরেও নির্বাচনী মাঠে থাকায় আনারস প্রতীকের প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে ক্রাস।
স্থানীয়দের সুত্রে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ সায়েম আহমেদ। স্থানীযদের দাবির প্রেক্ষিতে তিনি নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এমন পরিস্থিতিতে নৌকার প্রার্থীর মতিউর রহমান নৌকা প্রতীক পেলেও স্থানীয়রা তার কাছেও আসেনি। নেতাকর্মীদের ডেকেও মতির সঙ্গে গণসংযোগে আনতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে নৌকার পরাজয় যখন নিশ্চিত তখন মতিকে প্রভাবশালীরা নির্বাচন থেকে সরিয়ে নৌকা প্রতীক তুলে দেন সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের হাতে। জাকির হোসেন নৌকা প্রতীক পেলেও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সায়েম আহমেদের পক্ষে। সায়েম অহামেদ ও তার রাজনীতিতে থাকা নিরীহ লোকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের দুরে রাখার চেষ্টা করলে উল্টো স্থানীয় ভোটাররা জাকিরের বিরুদ্ধে চলে যায়। যার ফলে হেফাজত ইসলাম ও জামায়াত ইসলামের নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করছেন জাকির হোসেন। ফলে তার ভোটের অবস্থা বেশ নাজকু।
অন্যদিকে বন্দর উপজেলার মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী এমএ সালাম। তার প্রতিদ্বন্ধি শক্তিশালী প্র্রার্থী এখন শ্রমিকলীগ নেতা শেখ রুহুল আমিন। সালাম এবার বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে স্থানীয়রা জানান। সেই লক্ষ্যেই আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো সুসম্পর্ক তৈরি করেননি। তৃণমুল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের দ্বারে কাছেও যাননি নৌকা প্রতীক পাওয়ার পূর্বে। ফলে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ রুহুল আমিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামীলীগের সিংহভাগ নেতাকর্মী। ফলে এখানে নৌকার প্রার্থী সালামের নড়বড়ে অবস্থা।
এছাড়াও রূপগঞ্জের ভোলাবো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্র্রতীক পেয়েছেন তায়েবুর রহমান। তার প্রতিদ্বন্ধি বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু আনাসর প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করছেন। গত নির্বাচনে আলমগীর হোসেন টিটু বেশ জনপ্রিয়তা নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন। তরুণ এই চেয়ারম্যান ভোলাবো এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। নৌকার প্রার্থী তায়েবুর রহমান নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়ার পূর্বে এলাকাতেই যাননি। ফলে এখানেও নৌকার অবস্থান নাজুক।