সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ২ নভেম্বর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বরাবর ৩৪জন চেয়ারম্যান প্র্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। নির্বাচনে তিনটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা প্রায় শতভাগ নিশ্চিত স্থানীয়দের মতে। একই সঙ্গে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিজয়ও নিশ্চিত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। একইভাবে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্র্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ানের এবারও জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী ইউনিয়নবাসী। তবে জাতীয়পার্টির আরেকটি ইউনিয়নে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখছেন স্থানীয়রা যেখানে জাতীয় পার্টি মনে করছেন সেখানেও তাদের প্রার্থী বিজয়ী হবে।
স্থানীয়দের মতে- উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ। এবারের নির্বাচনেও তার শক্ত প্রতিদ্বন্ধি চেয়ারম্যান প্রার্থী নেই। নৌকা প্রত্যাশিরাও ইতিমধ্যে জিন্নাহকে সমর্থন করেছেন। ফলে তার পরাজয়ের কোনো সম্ভাবনাই দেখছেন না ইউনিয়নবাসী।
একইভাবে কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোশারফ ওমর। আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি বেশকজন বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করলেও শেষতক টিকবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। তবে তারা থাকলেও মোশারফ ওমরের জনপ্রিয়তা ব্যাঘাত ঘটাতে পারবেনা বলে স্থানীয়দের মত। এখানে শঙ্কা থাকলেও শেষতক মোশারফ ওমরের বিজয় নিশ্চিত দেখছেন স্থানীয়রা।
পিরোজপুুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্ভি। তিনি এবারও নৌকা প্র্রতীকে মনোনিত হয়েছেন। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারিকালে ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের অবদানের ভুলে যাওয়ার মত নয়। সকল শ্রেণি পেশার মানুষ থেকে শুরু করে গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ভুমিকা রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ফলে এই ইউনিয়নে তিনি অপ্রতিরোধ্য একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। তাকে পরাজিত করার মত কোনো প্রার্থী এখানে নাই। ফলে তার বিজয় শতভাগ নিশ্চিত এখানে।
শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবারও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রব। তিনি উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি পদে রয়েছেন। এখানে তার জনপ্রিয়তার দ্বারে কাছেও নাই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিতর্কিত নাসির উদ্দীন মেম্বার। যুবলীগ কর্মী হত্যার আসামি নাসির মুলত চরাঞ্চল বালু মহাল নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ধনকুবের বনে যাওয়া ব্যক্তি।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবারও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ দেওয়ান। গত নির্বাচনে তিনি নৌকার প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান উদ্দীন চুন্নুকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন। এবার আব্দুল বাতেন নামে একজনকে নৌকাপ্রতীক তুলে দেয়া হয়েছে। অনেকের মতে- আব্দুল বাতেন মেম্বার পদেও তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। কেউ কেউ এলাকায় ছড়িয়েছে আব্দুল বাতেন মুলত এখানে ইউসুফ দেওয়ানের ড্যামী প্রার্থী। ফলে এবারও ইউসুফ দেওয়ানের জয় আরো সহজ হয়ে গেলো।
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল হাসেম। এখানে নৌকা প্রতীকের প্র্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মোল্লা। গত নির্বাচনেও আবুল হাসেম জয়ের কাছাকাছি গিয়েও ফলাফল আনতে পারেননি। এখানে জাতীয় পার্টির দাবি- গত নির্বাচনে ভোটে আবুল হাসেম জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু জোর করে তার জয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। এবার সেই সুযোগ দেয়া হবে না। বিভিন্ন কারনে আব্দুর রশিদ মোল্লার জনপ্রিয়তাও শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছেন। ফলে এখানে আবুল হাসেমের জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ইউনিয়নবাসী।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন গত নির্বাচনে মেম্বার পদে পরাজিত প্রার্থী হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া। এখানে লাঙ্গল প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী লড়াইয়ে নেমেছেন আশরাফুল মাকসুদ ভুঁইয়া। নৌকার প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের নাম চূড়ান্ত হওয়ার পরেই আশরাফুলের বিজয় নিশ্চিত ধরে নিয়েছেন স্থানীয়রা। গত নির্বাচনে এখানে নৌকা প্রতীকের প্র্রার্থী ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান হা-মীম সিকদার শিপলু ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির নেতা সাবেক চেয়ারম্যান আবু হানিফ ভুঁইয়া। ওই নির্বাচনেও কারসাজি করে নৌকার প্রার্থীকে জয় করানো হয় বলে জাতীয় পার্টির অভিযোগ। তবে এবার সে রকম সুযোগ দেয়া হবে না বলে জাতীয় পার্টির দাবি।
বারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক পেয়েছেন নব্য আওয়ামীলীগার হাইব্রিড খ্যাত শিল্পপতি মাহাবুবুর রহমান বাবুল। এখানে বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি জহিরুল হককে বঞ্চিত করে বাবুলের হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দেয়া হয়। ফলে আওয়ামীলীগের বৃহত্তর অংশ বাবুলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়াও গত নির্বাচনে বাবুলের ছোট ভাই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরোধীতা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। এখানে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনিত হয়েছেন আবু দাইয়ান মেম্বার। তিনি বর্তমান চেযারম্যান জহিরুল হকের আত্মীয় হয়। ফলে এখানে বাবুলের জয়ের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না স্থানীয়রা। যদিও কেউ কেউ মনে করছেনে এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে নৌকা ও লাঙ্গলের। যেখানে জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকবে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীর।