সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের একটি বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তার বক্তব্যে স্পষ্ট নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দয়ায় মেয়র হয়েছেন।
বেগম খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার সুচিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাহিরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি করে আন্দোলনে নেমেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় বিএনপি সারাদেশে গণঅনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। ওই কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর মাসদাইর এলাকায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমূর আলম খন্দকারের বাসার ভেতরে পালন করা হয়।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২০ নভেম্বর শনিবার বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি গণ অনশন কর্মসূচি পালন করে।
গণ অনশনে সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে মেয়র আইভীকে উদ্দে্যে করে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমরা এই গণ অনশনটি এখানে না করে অন্য জায়গায় করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কোথাও অনুমতি পাইনি। সর্বশেষ চেয়েছিলাম শহীদ মিনারে করতে। কিন্তু সেখানেও করতে দেয়া হয়নি। যার দয়ায় সিটি কর্পোরেশনের মেয়র (ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী) সেই (বেগম খালেদা জিয়া) নেত্রীর জন্য শহীদ মিনারে অনশন করা যায় না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দয়া না করলে হয়তো আজ মেয়র হতে পারতেন না। কিন্তু সেই খালেদার জিয়ার অনুষ্ঠার শহীদ মিনারে করা যায় না।
ঘটনা সূত্রে, ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ছিলেন বর্তমান এমপি একেএম শামীম ওসমান। সেই সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছিলেন। নির্বাচনে বিএনপির সমর্থিত একমাত্র মেয়র প্রার্থী ছিলেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। কিন্তু ভোট গ্রহণের মাত্র ৭ ঘণ্টা আগে তৈমূর আলম খন্দকারের উপর থেকে বিএনপির সমর্থন সরিয়ে নেন বেগম খালেদা জিয়া। সমর্থন সরিয়ে নিলে তৈমূর আলম খন্দকারও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
নির্বাচনে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়ার সময় তৈমূর আলম খন্দকার বলেছিলেন, কুরবানীর গরুকেও গোসল করিয়ে কুরবানী দেয়া হয়, কিন্তু আমাকে গোসল ছাড়াই কুরবানী দেয়া হলো।
২০১৬ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও তৈমূর আলমকে প্র্রার্থী করতে চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু ২০১১ সালের নির্বাচনে কেনো তৈমূর আলমকে বসিয়ে দেয়া হলে সেই কারনটি তিনি দলের কাছে জানতে চান। কারন জানার পরেই তিনি নির্বাচন করবেন। শেষ পর্যন্ত তাকে প্রার্থী না করে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী করা হয়। দুটি নির্বাচনেই মেয়র আইভী বিজয়ী হোন।
এখানে আরো উল্লেখ্যযে, বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন মেয়র আইভী। নিউজিল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেই তিনি মেয়র হোন। ওই সময় বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সর্দারকে নির্বাচনী মাঠে নামিয়ে তৈমূর আলম খন্দকার আড়ালে থেকে আইভীকেই সুযোগ করে দিয়েছিলেন বলেও বিএনপিতে এমন আলোচনা রয়েছে।