সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
দীর্ঘ কাল ধরে সোনারগাঁয়ে মোগড়াপাড়া এলাকার লোকজন পুুরো সোনারগাঁবাসীকে নিয়ন্ত্রণ করতে আসছিল। সেই আওয়ামীলীগের রাজনীতিও মুঠোবন্ধি করেছিল মোগড়াপাড়া এলাকার লোকজন। সোনারগাঁয়ের উত্তর এলাকার লোকজনদের প্রতি অন্যায় অত্যাচার স্টীম রোলার চালিয়েছিল মোগড়াপাড়া এলাকার লোকজন। বিচার শালিসির নামে মানুষের উপর চলতো অত্যাচার নির্যাতন। পান থেকে চুন খসলেই মোগড়াপাড়ার উত্তর এলাকার অর্থাৎ নিচু এলাকার লোকজনদের উপর তাদের অত্যাচার শুরু হতো। কেউ মুখ ফুটে প্রতিবাদ করারও সাহস পায়নি।
মোগড়াপাড়া এলাকার লোকজনদের অত্যাচারের সীমা ঠেকাতে এক সময়কার প্রভাবশালী সাবেক এমপি আবু নূর মোহাম্মদ বাহাউল হক জাতীয়পার্টির রাজনীতি ছেড়ে যোগদান দেন আওয়ামীলীগে। মুলত সোনারগাঁয়ের গোয়ালদির প্রভাবশালীরা ছেয়েছিল মোগড়াপাড়া এলাকা থেকে প্রভাব ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু বাহাউল হক প্রভাবশালী এমপি এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হলেও তিনি সোনারগাঁয়ের নিচু এলাকার মানুষকে মোগড়াপাড়ার নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে পারেননি। যে কারনে তিনি যোগদান করেছিলেন আওয়ামীলীগে। ওই সময় থেকেই মোগড়াপাড়ার নিয়ন্ত্রন ও মোগড়াপাড়া থেকে প্রভাব ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন সোনারগাঁয়ের ভূঁইয়া বংশের বাহাউল হক।
স্থানীয়রা বলছেন, বর্তমানে মোগড়াপাড়ার প্রভাব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে নেমেছেন আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত ও তার চাচা মোশারফ হোসেন। তবে মোগড়পাড়ার সঙ্গে টক্কর দিয়ে একা বাহাউল হক না পাড়লেও এবার মোগড়াপাড়াকে কুপোকাত করতে পরোক্ষভাবে মাঠে রয়েছেন গোয়ালদির প্রভাবশালী তারা চার ভাই। যাদের মধ্যে একজন শিল্পপতি আবার আরেকজন পৌর মেয়র। ২০০১ সালে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন বাহাউল হক। ওই নির্বাচনে সরাসরি নৌকার বিরোধীতা করেছিলেন কায়সার হাসনাতের বাবা আবুল হাসনাত ও মোশারফ হোসেন সহ মোগড়াপাড়া। যার ফলে বাহাউল হক নির্বাচনে পরাজিত হন। তবে সেই প্রতিশোধ নিতে যাচ্ছেন বাহাউলরা চার ভাই। মোগড়াপাড়ার মানুষের নির্যাতন থেকে আগেই তারা মানুষকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছিলেন। এবার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিতে যাচ্ছেন ওরা চার ভাই।
জানাগেছে,৩১ মার্চ রবিবার নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেই মোগড়াপাড়ার হাসনাত পরিবারের সদস্য মোশারফ হোসেন। চাচার পক্ষেই কাজ করছেন কায়সার হাসনাতও। তবে নির্বাচনে পরোক্ষভাবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের পক্ষেই কাজ করছেন আবু নূর মোহাম্মদ বাহাউল হক, শিল্পপতি ফেরদৌস ভূঁইয়া মামুন, সোনারগাঁও পৌর মেয়র সাদেকুর রহমান ও জেলা পরিষদের সদস্য ফারুক ভূঁইয়া। তাদের মধ্যে সাহসী আবার সাদেকুর রহমান প্রকাশ্যেই হাসনাত পরিবারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কালামের পক্ষেই কাজ করছেন। এই নির্বাচনে কালামের পক্ষে রয়েছেন বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা। এবার মোশারফ হোসেন পরাচিত হলে মোগড়াপাড়া থেকে সোনারগাঁও নিয়ন্ত্রনের সকল রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে হাসনাত পরিবারের অস্তিত্বও সংকেটের দিকে যাবে। যে কারনে হাসনাত পরিবারও এবার টিকে থাকার লড়াইয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে ২০০১ সালের সেই প্রতিশোধের অপেক্ষার সুযোগ খুজছেন গোয়ালদির প্রভাবশালী চার ভাই।