সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনে ইতিমধ্যে বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী সহ আওয়ামীলীগের আরো ৩জন নেতা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেকেই ধরে নিয়েছেন এবারও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেতে পারেন বর্তমান মেয়র আইভী। কিন্তু তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে প্রশ্ন থেকে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে মেয়র আইভীর ভুমিকা কি? বিএনপি-জামাত জোট সরকার আমলে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে তার অবদান ত্যাগ ও ভুমিকা কি? তিনি কোথায় ছিলেন?
কিন্তু মেয়র আইভী নারায়ণগঞ্জে শক্তিশালী মেয়র প্রার্থী হিসেবে ধরা হলেও যারা দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে আসছেন তাদের ভাগ্যে কেনো মেয়র হওয়ার সৌভাগ্য খুলবে না? নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ৪০/৪৫ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন যারা এত্ত বছরে দলের জন্য প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাহলে তাদের কি হবে? যারা স্বৈরাচারবিরোধ আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনে সক্রিয় থাকতে গিয়ে হামলা মামলা জেল খেটেছেন তাহলে তাদের ভাগ্যে কি মেয়র হওয়ার তীলক লাগবে না? এসব নেতাদের সঙ্গে দলের প্রতি মেয়র আইভীর অবদান শূন্যের কোঠায়। তুবও কোনো মেয়র আইভীই হবেন নৌকার প্রার্থী?
নেতাকর্মীদের আরো প্রশ্ন- চলতি বছরে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে আওয়ামীলীগ অনেক যাচাই বাছাই করে মনোনয়ন দিয়েছে। বিগত সময়ে যারা আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তাদেরকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তাহলে মেয়র আইভী কেন নৌকা পাবেন? ২০১১ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ছিলেন একেএম শামীম ওসমান। ওই নির্বাচনে আইভী বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হোন। ২০১৬ সালে গত নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পান। তাহলে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বারবার কেনো নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হবেন?
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ৪০/৪৫ বছর ছাড়িয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু। তরুণ বয়সে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির চারবারের সাবেক সভাপতিও তিনি। একইভাবে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট খোকন সাহা। জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রায় দুই যুগ ধরে। গত জাতীয় নির্বাচনে তিনি তারা নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশি থাকলেও মনোনয়ন পাননি।
তাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড তো দুরের কথা কখনও সন্ত্রাসী মাদক ব্যবসায়ী ভুমিদস্যূদের আশ্রয় প্র্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে ওঠেনি। একমাত্র আইন পেশাকেই আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এখান থেকে যা আয় করেছেন তার সিংহভাগ দল ও দলের নেতাকর্মীদের পেছনে খরচ করেছেন। মোটকথা এই দুই রাজনীতিক স্বচ্ছ রাজনীতিক হিসেবে নারায়ণগঞ্জে পরিচিত। তাদের নিজস্ব কোনো বাহিনী নাই। তাদের অবৈধ কোনো আয়ের উৎস নাই। তাহলে তারা আর কত ত্যাগ স্বীকার করলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বা এমপি কিংবা মেয়র পদে অধিষ্ট হবেন? যদিও মেয়র পদে অ্যাডভোকেট খোকন সাহা দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও নাসিক নির্বাচন নিয়ে অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি।
অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল। তিনি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদেও রয়েছেন কয়েক যুগ ধরে। তারও নিজস্ব কোনো বাহিনী কিংবা বিতর্কিত লোকজন নাই। রাজনীতি নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও তিনি কখনও মাদক ব্যবসায়ী, ভুমিদস্যূ, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছেন এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে কখনো ওঠেনি। তিনি আইনজীবী হলেও সার্বক্ষনিক রাজনীতিতে বেশ সক্রিয়। তিনি মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তিনিও গত জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাশি ছিলেন।