সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের সন্ত্রাসী হামলায় ৫ জন বিজয়ী নৌকা প্রার্থীর সমর্থক আহত হয়েছেন। যার মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক। আহতদের পরিবারের অভিযোগ- নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ায় তার সমর্থকদের বেশ কয়েকটি বাড়িতে বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে ঘোড়া প্রতীকের সমর্থকেরা।
জানাগেছে, ৩১ মার্চ রবিবার রাতে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মান্দারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা রামদা, ছুরি, দেশীয় তৈরী পিস্তল, ককটেল ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে নৌকার সমর্থক জয়নাল আবেদীন, ডাঃ মোঃ বোরহান উদ্দিন, হাজী আবুল হোসেন, হাজী আব্দুস সালাম, নুরুদ্দিন, আরাফাত আলী, বিল্লাল, শরীফ, মাইনুদ্দিনের বাড়িঘর ভাংচুর করে লুটপাটসহ ৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। হামলায় মোঃ নুরুদ্দিন নামে একজনের অবস্থা গুরুত্বর। তাকে উদ্ধার করে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এলাকাবাসী জানান, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গত রবিবার আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ মোশারফ হোসেন বিজয়ী হন। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ায় উপজেলার বারদী ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের সমর্থক ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মান্দারপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমান হাবু মেম্বার ওরফে হাবু ডাকাতের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী জাকির, ফালান, ফারুক, রহিম, ডালিম ও মোতালিবসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা প্রথমে এলাকায় ককটেল ফাঁটিয়ে আতংক সৃষ্টি করে।
পরবর্তীতে হাবু ডাকাত তার সন্ত্রাসী বাহিনী রামদা, ছুরি, দেশীয় তৈরী পিস্তল ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে নৌকা প্রার্থী মোশারফ হোসেনের সমর্থক জয়নাল আবেদীনসহ একই গ্রামের ডাঃ মোঃ বোরহান উদ্দিন, হাজী আবুল হোসেন, আরাফাত আলী, বিল্লাল, শরীফ, মাইনুদ্দিনের বাড়িঘর ভাংচুর করে লুটপাট। এসময় হামলাকারীরা ৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। ঘটনার সময় বাঁধা দিতে গেলে হামলাকারীরা নুরুদ্দিনকে একা পেয়ে তাকে এলোপাথারী কুপিয়ে তার হাতে, পাঁয়ে ও মাথায় ছুরিকাঘাত করে মারাত্মকভাবে জখম করে। এসময় তারা বাড়িতে বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। সন্ত্রাসীদের হামলায় এসময় আহত নুরুদ্দিনের ডাক-চিৎকার শুনে তার স্বজনরা আহত নুরুদ্দিনকে উদ্ধার করে দ্রুত সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
এদিকে হামলায় আহত ডাঃ মোঃ বোরহান উদ্দিন অভিযোগ করেন, আমি দীর্ঘ বছর ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ঘটনার দিন গত রবিবার সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা সকলে মিলে ভোট কেন্দ্রে ছিলাম। সন্ত্রাসীদের হামলায় মারাত্মক আহত নুরুদ্দিন ভোট প্রদান শেষে বাড়ীতে ফিরার পর পরই স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের ঘোড়ার প্রতীকের সমর্থক হাবিবুর রহমান হাবু মেম্বার ওরফে হাবু ডাকাত তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে প্রথমে এলাকায় ককটেল ফাঁটিয়ে আতংক সৃষ্টি করে এবং বাড়ীঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। সন্ত্রাসী হাবু ডাকাত দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো। সে সহ তার লোকজন বিভিন্ন অপরাধ ও অপকর্মের সাথে জড়িত এবং সে কয়েকটি মামলার আসামীও। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সে আমাদেরকে দীর্ঘদিন যাবত ঘোড়া প্রতিকে ভোট দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভূক্তভোগীরা সন্ত্রাসী হাবু মেম্বার ওরফে হাবু ডাকাতের এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার চান। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এব্যাপারে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান হাবু মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই। তবে আমার কর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।