সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম
আগামী ১৬ই জানুয়ারি রবিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ৭জন মেয়র প্রার্থী সহ ২৭টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন শতাধিক নারী। প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের লড়াইয়ে কি হতে যাচ্ছে নতুন জনপ্রতিনিধি- এমন বিষয় নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের বেশকটি ওয়ার্ডে জরিপ চালিয়েছেন ‘সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম’।
যেখানে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করে কোন কোন প্রার্থীর সঙ্গে কার প্রতিযোগিতা হবে এবং এক্ষেত্রে কার বেশি জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে সেইসব বিষয়গুলো উঠে এসেছে। তেমনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ এবার জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন এ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার। যদিও কেউ কেউ বলছেন বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও বিএনপি নেতা এমএইচ মামুন মুল প্রতিদ্বন্দ্বী। এখানে মকসুদুর রহমান জাভেদ ও শাকিল আরো দুজন প্রার্থী থাকলেও তাদের নিয়ে ভোটারদের মাঝে আলোচনা নাই।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ১৭নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে এবারও বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর জয়ের সম্ভাবনা বেশি। যদিও এখানে সাবেক কাউন্সিলর অলি উদ্দিন ভূঁইয়া তার নির্বাচনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন। বাকিদের নিয়ে ভোটারদের মাঝে কোন আগ্রহ নেই। কেউ কেউ মনে করছেন অলিউদ্দিনের সঙ্গে বাবুর লড়াইও হতে পারে। এক্ষেত্রে জয়ের তালিকায় বাবুকেই রাখছেন ভোটাররা।
১৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী কবির হোসেনেরই জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটারগণ। যদিও এক্ষেত্রে কেউ কেউ বলছেন রিয়াদ হাসানেরও জয়ের সম্ভাবনা কম নয়। কারণ রিয়াদ হাসানের পক্ষে রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর ওবায়দুল্লাহ। আবার কবির হোসেনের পক্ষে রয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল। ফলে অনেকেই মনে করছেন দুজনের মাঝে তুমুল লড়াই হবে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন কবির হতে পারেন, আবার কেউ কেউ মনে আবার রিয়াদ হাসানেরও জয়ের সম্ভাবনা আছে।
১৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর অসিত বরুণ বিশ্বাস এবারও তিনি বিজয়ী হতে পারেন। এই ওয়ার্ডে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। যদিও আওয়ামী লীগ নেতা জিএম আরমান ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাকসুদ হোসেন রকি এখানে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা লড়াই করতে পারবেন বলে মনে করেন। তবে ভোটারগণ জয়ের দিক দিয়ে এগিয়ে রাখছেন অসিত বরণ বিশ্বাসকেই।
১৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধানের জনপ্রিয়তায় দুরাবস্থার কারনে এই ওয়ার্ডে এবার জয়ের তুমুল সম্ভাবনায় রয়েছে মনিরুজ্জামান মনির যিনি সাবেক কাউন্সিলর। আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও তাদের জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন না সাধারন ভোটারগণ।
১৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটারগণ। এবার যদিও তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রবিউল হোসেন নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পর আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন আরে কাউন্সিলর প্রার্থী যুবলীগ নেতা শাহ মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রবিউলকে বসিয়ে দেয়ার বিষয়টি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে পর্যন্ত গিয়েছে। যার ফলে এবার ফয়েজের দিকে আওয়ামী লীগের একটি সুদৃষ্টি রয়েছে। খোরশেদের জয় ফঁসকে যেতেও পারে।
১২নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকুর জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এইখানে এই ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম খানকে নিয়ে কর্মীসভা করেছেন। যেখানে শকুর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সেলিম খানের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেছেন। ফলে এই ওয়ার্ড নিয়েও রয়েছে বিরাট রাজনীতি। এক্ষেত্রে ১৩নং ওয়ার্ডের মতই এখানেও শকুর জয় ফঁসকে যেতে পারে।
১১নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর জমসের আণী ঝন্টু নির্বাচন করছেন না। তবে তার ছেলে শাহাদাত হোসেন বাবুকে নির্বাচনের মাঠে নামালেও জনগণের মাঝে তিনি জায়গা করে নিতে পারেননি। গত নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান হওয়া অহিদুল ইসলাম ছক্কু এবার জয়ীদের তালিকায়। যদিও সাইফুল ইসলাম রিয়েল ও সেলিম আহমেত হেনা সহ আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও শক্তির দিক দিয়ে ভোটারগণ ছক্কুকেই এগিয়ে রাখছেন।
১০নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন এবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন দুর্বল। এখানে লিয়াকৎ আলী লেকু ও সিরাজ খান জনপ্রিয়তায় খোকনের দ্বারে কাছেও নেই।
৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা এবারও জয়ের পথে। যদিও তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোহসীন ভূঁইয়া। তিনি লড়াই করলেও রুহুলের জয় দেখছেন ভোটারগণ। বিএনপি নেতা সাগর প্রধান ও দেলোয়ার হোসেন খোকন সহ আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থী থাকলেও জয়ী হওয়ার মতো জনপ্রিয়তা তাদের এখানে নেই বলে ভোটারগণ জানান।
৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ সাদরিলেে এবার দুরবস্থা। বিগত পাঁচ বছরে তার কাছ থেকে সাধারণ মানুষ কোন ধরনের সেবাই পাইনি হয়রানি ছাড়া। জন্ম সনদ সহ বিভিন্ন সনদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছে। তার পিএস নাজমুল অর্থ ছাড়া সনদ দেয়নি বলে অভিযোগ। যে কারণে এবার জয়ের পথে রয়েছেন আনিসুর রহমান। সাদরিলকে বয়কট করতে চান ওয়ার্ডবাসী।
২২নং ওয়ার্ডের বর্তমান সুলতান আহমেদ ভূঁইয়ার জয়ের সম্ভাবনা। যদিও এখানে সাবেক নারী কাউন্সিলর যিনি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। তিনি হলেন ইসরাত জাহান খান স্মৃতি। তিনি এবার সাধারণ ওয়ার্ডে নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছেন। একইসঙ্গে যুবলীগ নেতা খান মাসুদ নির্বাচনে থাকলেও সুলতানকে ভোটের জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রাখছেন ভোটাররা।
২৩নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন দুলাল প্রধান মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। যে কারণে এবার জয়ী তালিকায় রয়েছেন গত নির্বাচনে দ্বিতীয় হওয়া বিএনপি নেতা আবুল কাওসার কাউসার আশা। ২৪নং ওয়ার্ড এবারও কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির নেতা আফজাল হোসেন। তার সঙ্গে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকলেও আশরাফুল ইসলামকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হচ্ছে। তবে সাধারণ ভোটাররা জয়ের দিক দিয়ে আফজালকেই এগিয়ে রাখছেন।
অন্যদিকে ১৬,১৭ ও ১৮নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এবারও জয়ের সম্ভাবনায় রয়েছেন না পূজা আফসানা আফরোজ বিভা হাসান। যদিও তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে জুয়েল ভূঁইয়া ও সাবেক কাউন্সিলর খোদেজা খানম নাসরিন নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। তবে জনপ্রিয়তায় বিভা হাসানকেই নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন ভোটারগণ।
১৩,১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান নারী কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নি এবারও জয়ের দিকে এগিয়ে রয়েছেন। ভোটাররা মনে করছেন পপি রানী সরকার তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে লড়াই করলেও এদিকে বিন্নিকে এগিয়ে রাখছেন ভোটারগণ।
৪,৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে এবার জয়ের তালিকায় রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা। এখানকার বর্তমান কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগমের এখানে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। নির্বাচনে ডলি বেগম ও সুমী বেগম নামে আরো দুজন থাকলেও তাদের নিয়ে ভোটারদের তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। ফলে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা।