সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের বহুল প্রচারিত ‘দৈনিক সময়ের নারায়ণগঞ্জ’ পত্রিকা অফিসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ১২ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর চাষাঢ়ায় প্রেসিডেন্ট রোড এলাকার সিরাজ ম্যানশনের ৪তলায় অফিসে হামলার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সন্ত্রাসীরা অফিসের সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর এবং সিসিটিভির ডিভাইস নিয়ে যান।
হামলাকারীরা নিজেদেরকে আজমেরী ওসমানের লোকজন পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের প্রাণনাশের হুমকি দেন। আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
অফিসের প্রহরী হাফিজ উদ্দিন বলেন, হঠাৎ করে শতাধিক লোকজন অফিসে উঠতে চায়। আমি বাধা দিতে গেলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি একা সবার সঙ্গে পারছিলাম না।
অফিসে থাকা সময়ের নারায়ণগঞ্জের স্টাফ রিপোর্টার আরিফ হোসাইন কনক বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অফিসের নিচে অর্ধশত মোটরসাইকেল অবস্থান করে। পরে মোটরসাইকেল থেকে শতাধিক ব্যক্তি ওপরে আসে। অফিসে ঢুকেই অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন। এসময় তারা ১১ ফেব্রুয়ারি সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকার লিড নিউজ ‘যা ছিল খসড়া চার্জশিটে’ সংবাদটি কেন প্রকাশ হয়েছে তার কৈফিয়ত জানতে চান। ওই নিউজের জন্য ক্ষমা না চাইলে পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া ও সম্পাদককে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ১৫ মিনিট তারা অফিসে অবস্থান করে। যাওয়ার সময় হুমকি দিতে দিতে চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা অফিসে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে অফিসে থাকা সিসিটিভির ডিভিআর ডিভাইস খুলে নিয়ে যান। এছাড়া একটি পিসির হার্ডডিস্কও খুলে নিয়ে যায়। ভাঙচুর করে ক্যামেরা।
ফুটেজে দেখা গেছে, অফিসে হামলার আগে শতাধিক লোকজন মোটরসাইকেলে শহর মহড়া দেন। ওই মহড়া শেষ করেই সময়ের নারায়ণগঞ্জ অফিসে হানা দেন।
সময়ের নারায়ণগঞ্জ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক জাবেদ আহমেদ জুয়েল বলেন, সম্প্রতি ত্বকী হত্যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। ১১ ফেব্রুয়ারি র্যাবের প্রকাশিত খসড়া চার্জশিট নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। মূলত সেই খসড়া চার্জশিট র্যাব প্রকাশ করে এবং ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি গণমাধ্যমের সেটি সরবরাহ করে। প্রতিবেদনে সেটাই হুবহু তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে মনগড়া কোনো বক্তব্য নেই। কিন্তু তারা যেভাবে অফিসে হানা দিয়েছে সেটা ন্যক্কারজনক। তারা অফিসের সিসি ক্যামেরার ডিভিআর মেশিন ও একটি পিসির হার্ডডিস্ক নিয়ে গেছে। ভাঙচুর করেছে ক্যামেরা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, আলামত সংগ্রহ, অফিসের স্টাফদের কাছে থাকা ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম গণমাধ্যমে বলেন, বিষয়টা শুনেছি। পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।