প্রধানমন্ত্রী আমাকে চিনে: নান্নু, বারদীতে প্রধানমন্ত্রী আসলেও আমার হুকুম লাগবে: বাবুল

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়ন এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এক ত্রাহি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিরাট দূরত্ব বাড়িয়েছেন।  নির্বাচনের পূর্বে একটা সময় নৌকা প্রতীকে মনোনয়নের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাছে টানতে নানা কৌশল অবলম্বন করলেও নির্বাচিত হওয়ার পর বর্তমান চেয়ারম্যান লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছেন।  এমন আচরণ করছেন, নিজেকে চেয়ারম্যান নয় যেনো বিরাট মাপের কিছু একটা তিনি হয়েছেন।  যে কারণে লায়ন বাবুল আওয়ামী লীগের কাউকেই গোনায় ধরছেন না।  এবার তিনি বলেই ফেললেন বারদীতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আসলেও তার হুকুম লাগবে।

যদিও এর আগে বারদী ইউনিয়নের স্থানীয় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নুও অনেকটা মাহাবুবুর রহমান বাবুলের উদ্দেশ্যেই ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে চেনে, সাবধান হয়ে যান। ‘ একইসঙ্গে সেখানে বাবুলের প্রতি ইঙ্গিত রেখেই দশটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের টেনে নান্নু বলেছিলেন, ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একপাল্লায় রাখলে আর আরেক পাল্লায় থানা যুবলীগের সভাপতিকে রাখলে সভাপতির ওজন বাইড়া যাইবো, সমান হবে না।  অতএব সাবধান হয়ে যান।

মূলত বারদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যান বাবুলের বিরাট দূরত্বের কারণেই সরকার দল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে।  পাল্টাপাল্টি একেঅপরকে দমানোর ভয় দেখাচ্ছেন। আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ- বাবুল বিনাভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের গোনায় ধরছেন না।  বিনা ভোটের চেয়ারম্যানের কাছে কোণঠাসা আওয়ামীলীগ।  বিশেষ করে যুবলীগ নেতাকর্মীরা চরম অবহেলিত, হুমকি ধমকির শিকার।  যে কারনে যুবলীগ নেতাদের সাহস যোগাতে নান্নু যখন ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে চিনে’ বলে নিজেকে জাহির করেছিলেন, এবার বিনা ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান বাবুল বললেন ‘আমার বারদী ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রী আসলেও আমার হুকুম লাগবে।’

জানাগেল, এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের অবজ্ঞা ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে বক্তব্য রেখেছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু।  একই সঙ্গে তিনিও চেয়ারম্যানদের ইঙ্গিত করে হুমকি ধমকি দেন।  তিনি দাবি করেছেন সোনারগাঁও উপজেলার দশটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে এক পাল্লায় রাখলে আর সোনারগাঁও থানা যুবলীগের সভাপতিকে আরেক পাল্লায় রাখলেও সমান হবে না, সেখানে ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের চেয়ে থানা যুবলীগের সভাপতির ওজন অনেক বেশি হবে।

কর্মীসভায় সোনারগাঁও থানা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। আমাদের কেউ কিছু করতে পারবেনা ইনশাআল্লাহ। বারদী ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মীদের বক্তব্য শুনেছি। আমি পরিস্কারভাবে বলতে চাই যুবলীগের নেতাকর্মী শক্ত ভাষায়, শক্ত অবস্থানে থাকবে। দশটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আর সোনারগাঁও থানা যুবলীগের সভাপতিকে এক পাল্লায় দিলে এক সমান হবেনা, সভাপতির ওজন বাইড়া যাইবো বইলা দিলাম আপনাদেরকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে চিনে। প্রত্যেকটা ইউনিয়ন যুবলীগের নেতৃবৃন্দ আমাকে সম্মান করে। আপনাদের ভালবাসা এটা। আমার যুবলীগের নেতাকর্মীদের হুমকি দিবো, একদম মুখ তালা দিয়া থমু বইলা দিলাম। বারদী থেকে ঘোষণা দিলাম, আমার যুবলীগের নেতাকর্মীদের কেউ যদি আঘাত করতে চান তাহলে সাবধান হয়ে যান।

এদিকে গত শনিবার রাতে বারদী ইউনিয়নের পাইকপাড়া দেওয়ান বাড়ির বাৎসরিক ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মাহবুবুর রহমান বাবুল বলেছেন, আমি বারদীর ম্যাজিস্ট্রেট, প্রধানমন্ত্রী বারদী আসলেও আমার হুমুক লাগবে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন আমার পক্ষে কাজ করবে, কারো ফোনে প্রশাসন আসবে না।  আমি বাবুল যদি বলি সুইচ অফ, দিস ইস অফ।  কারন আমার যোগ্যতায় আমি চেয়ারম্যান হয়ে আসছি।

চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বাবুল (লায়ন বাবুল) আরও বলেন, ১৯৭৪ সালের পরে বারদীতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হয় নাই, এটা আপনাদের গর্ব আপনারাই ধরে রাখতে হবে। আমাকে কিলাইবে আপনারা হাত-পা ধরে বসে থাকবেন, আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।  আগের দিন ভূলে যেতে বলেন, বর্তমানে লায়ন বাবুল বারদীর চেয়ারম্যান।  শান্তির বাজার কারও বাপ-দাদার নয়, কেউ জামেলা সৃষ্টি করলে হাত-পা ভেঙ্গে আমাকে ফোন দিবেন, তা না হলে আমাকে ফোন দিবেন না।  হাত-পা ভেঙ্গে দিলে তাকে আমি এসে তাকে উদ্ধার করবো।  শান্তির বাজারে কেউ মহড়া দিলে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ না করলে আপনাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা মারমু। চোর-বাটপার আমাকে কি বলবে আমার বা….ও আসে না।