সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আওতাধীন সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সদস্য সচিব মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মানহানি মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল রানা। ২৮ফেব্রুয়ারি সোমবার নারায়ণগঞ্জ আদালতে ওই মামলাটি তিনি প্রত্যাহার করে নেন। মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে রাসেল রানা সান নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘কারো হুমকি ধমকি কিংবা ভয়ভীতিতে ভীত হয়ে মামলা প্রত্যাহার করিনি। দলীয় স্বার্থে মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছি। এতে অন্য কোনো বিষয় নেই।’
নেতাকর্মীদের সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর সোনারগাঁও থানা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করে। কমিটিতে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে আহ্বায়ক ও মোশারফ হোসেনকে সদস্য| সচিব করা হয়। এই কমিটি গঠনের শুরু থেকেই সমালোচনা শুরু হয়। পরবর্তীতে উপজেলার দশটি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে মামলার মুখোমুখী হয়েছিলো সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি। ইউনিয়ন কমিটি গঠনে দলীয় প্যাডে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অমর হিসেবে লেখায় মামলা করেছিলেন জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রাসেল রানা। মুলত ইউনিয়ন কমিটি গঠনে নেতাকর্মীদের ক্ষোভের বহিপ্রকাশ হিসেবে এই ইস্যূতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিলো।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ- ইউনিয়ন কমিটিগুলোতে যারা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয়, সরকারি দল আওয়ামী ও জাতীয় পার্টির হয়ে রাজনীতি করে আসছিলেন তাদেরকে পদায়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে যারা মান্নানের বিরোধী বলয়ে রাজনীতি করেন তাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়নি। মোগরাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়েছে আতাউর রহমানকে। তিনি জাতীয়পার্টিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করে আসছিলেন। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে নিষ্ক্রিয় ও সরকারি দলের সঙ্গে রাজনীতি করে আসা তাদেরকে দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সেলিম সরকার দুই ডজন মামলার আসামি হলেও তাকে মুল্যায়ণ করা হয়নি। যারা মুলধারার রাজনীতি করে আসছেন সেইসব সিনিয়র নেতাদের কোনো মতামত নেয়া হয়নি। এক রাতেই দশটি কমিটি নিজেদের মতগড়া মত ঘোষণা করেন মান্নান ও মোশারফ।
অন্যদিকে জীবিত বেগম খালেদা জিয়াকে দলীয় প্যাডে অমর লেখায় জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল রানা বাদী হয়ে আজহারুল ইসলাম মান্নান ও মোশারফ হোসেনকে বিবাদী করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবীও ছিলেন সনসান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম। মামলার পর তিনিও উপজেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে উপজেলা বিএনপির কমিটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সোনারগাঁও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শহিদুর রহমান স্বপন, অ্যাডভোকেট আব্দুর রহিম ও রাসেল রানার বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিয়ে নানা কুৎসা রটানো শুরু করেছেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে সোনারগাঁয়ে ছাত্রদলের ব্যানারে তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন মান্নান অনুগামী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। যদিও আগের দিন মান্নান ও মোশারফের বিরোধীরা একজোট হয়ে সভাও করেছেন। যেখানে বিএনপির নেতা শাহআলম মুকুল, ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, যুবদল নেতা শহিদুর রহমান স্বপন ও আশরাফ প্রধান সহ অনেক নেতারাই উপস্থিত ছিলেন। মান্নান ও মোশারফের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন নেতাকর্মীরা। মান্নান ও মোশারফের বিরুদ্ধেও সোনারগাঁয়ে জুতা ঝাড়ু মিছিল করেছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। কয়েকদফা এই কর্মসূচি চলে আসছিলো। কিন্তু হটাত করে খুব দ্রুত মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাসেল রানা।