সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
সর্বশেষ কত বছর পূর্বে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ইউনিয়ন ও ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যাযে সম্মেলন হয়েছে সেটা স্মৃতিচারণ করতেও অনেকের হিমশিম খেতে হবে। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সোনারগাঁয়ে ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন হয়নি। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে সোনারগাঁয়ে বিএনপি ছিলো দুইভাগে বিভক্ত। সেই বিভক্তি কাটিয়ে এবার আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে একজোট হয়ে উপজেলা বিএনপি। সোনারগাঁয়ে বিএনপিকে শক্তিশালী এক সংগঠনে পরিনত করছেন মান্নান। যার পাশে থেকে কাজ করছেন মোশারফ হোসেন।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসন থেকে একাধিকবার এমপি ও মন্ত্রী হলেও বিএনপির নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে থাকেননি রেজাউল করিম। সান নারায়ণগঞ্জকে নেতাকর্মীরা জানান ১/১১ এর সময় জিয়া পরিবারকে মাইনাসের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত রেজাউল করিম ২০১৪ সাল পর্যন্ত নির্বাচনের প্রত্যাশা করে নির্বাচন নাগাদ মাঠে নামতেন। কিন্তু সারা বছর রাজপথে আন্দোলন করতো মান্নানের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৮ সালে সোনারগাঁও আসন থেকে মান্নান বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পান। সেই নির্বাচনে সুবিধা করতে না পারলেও এর আগে মান্নান সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হোন।
কিন্তু বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে ডজন ডজন মামলায় আসামি হয়ে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে বরখান্ত হোন বারবার। ছয় মাসও তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। কিন্তু উল্টো দিকে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস ও বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল সরকারি দলের সঙ্গে প্রকাশ্যে সখ্যতা রেখে দায়িত্ব পালন করেছেন। আজাদ বিশ্বাস এখনও দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু মান্নান ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি সরকারি দল কিংবা জাতীয় পার্টির সঙ্গে আতাত করে চেয়ারম্যানি করেননি।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নেতাকর্মীরা রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে যারা মামলার শিকার হয়েছেন তাদের জামিনের ব্যবস্থা করেছেন মান্নান। ওই সময় মান্নান ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন খন্দকার আবু জাফর, যিনি এড়িয়ে চলেছেন দায়িত্ব। যেসব নেতাকর্মী আন্দোলন না করলেও ঘরে বসে মামলা খেয়েছেন তাদের জামিনের ব্যবস্থাও করেছেন মান্নান। মান্নান নিজেও জেল খেটেছেন দীর্ঘদিন। তবুও তিনি রাজপথধ ছাড়েননি, নেতাকর্মীদের ছাড়েননি। যে কারনে সোনারগাঁয়ের বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন মান্নানের নেতৃত্বে একজোট।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর জেলা বিএনপি প্রতিটি উপজেলা/ থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। যেখানে আজহারুল ইসলাম মান্নানকে আহ্বায়ক ও মোশারফ হোসেনকে সদস্য সচিব করে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করে জেলা বিএনপি। কমিটি ঘোষণার পর সোনারগাঁও উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে বিএনপির সম্মেলন করেন মান্নান ও মোশারফ। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় বিএনপির অতিরিক্ত মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের উপস্থিতিতে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সম্মেলন করেন মান্নান ও মোশারফ। সম্মেলনের কন্ঠভোটের মাধ্যমে মান্নানকে সভাপতি ও মোশারফকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন নেতাকর্মীরা।