সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে সরকারি দল আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে সেশন জটের সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকা নেতাদের প্রত্যাশা থাকে, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব ছাড়ার পর পরবর্তীতে যুবলীগ কিংবা মুল দল আওয়ামীলীগের কমিটিতে স্থান পাবেন। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পুরণ হচ্ছেনা সরকারি দলের বিভিন্ন সংগঠনের কমিটিগুলো সেশন জটের কারনে। কমিটির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও বছরের পর বছর কিংবা যুগের পর যুগ ধরে চলছে একই কমিটি। যার বড় উদাহরণ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটি গঠনে সেশন জট।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, ২০১১ সালে জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতারা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করে ব্যাপক প্রসংশা পায়। রাজপথের সক্রিয় ভুমিকা ও বির্তকমুক্ত নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগ সেই সময় সারাদেশের মধ্যে মডেল উদাহরণ হয়ে ওঠে। কিন্তু ২০১৭ সালের দিকে জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হলে বিগত কমিটির নেতাদের পুরষ্কার করার বদলে তাদেরকে রাখা হয়েছে নেতৃত্বশূণ্য। যেখানে জেলা ছাত্রলীগের সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন নেতৃত্বশূণ্য থাকাবস্থায়।
নেতাকর্মীদের সূত্রে, জেলা ছাত্রলীগের ওই কমিটির সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন প্রয়াত মিজানুর রহমান সুজন। কমিটির একমাত্র ভাগ্যবান বলা চায় আতাউর রহমান নান্নু, যিনি ভাগ্যক্রমে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বাকিদের ভাগ্যে সদস্য পদটিও জুটেনি। এ ছাড়াও ওই সময়কার জেলা ছাত্রলীগের অন্যান্য সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাজপথে সক্রিয় ভুমিকা রাখা নেতারা এখন পদবিহীন। গুরুত্বপূর্ণ এসব পদের নেতাদেরই যখন এমন পদশূণ্য তখন পরের সারির নেতাদের কোথাও ঠাঁই হওয়ার আলোচনাও নেই।
এর কারন হিসেবে আওয়ামীলীগ নেতারা বলছেন- ২০০৩ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। যে কমিটিতে আব্দুল কাদির সভাপতি, আবু হাসনাত মোহাহম্মদ শহীদ বাদল, সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকিরুল আলম হেলাল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোন শাহ নিজাম। চারজনই এখন আওয়ামীলীগের মুল দলের রাজনীতিতে। যেখানে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে আব্দুল কাদির, সেক্রেটারি পদে শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে হেলাল ও যুগ্ম সম্পাদক পদে নিজাম। এই কমিটির মেয়াদেই জেলা ছাত্রলীগের পূর্বের কমিটির সভাপতি এহসানুল হাসান নিপুও রয়েছেন পদবিহীন, যে কমিটির সেক্রেটারি জিএম আরাফাত এখন মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন।
একইভাবে শহর যুবলীগের কমিটিরও একই দশা। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করা হলেও শহর কমিটি থেকে মহানগর যুবলীগের কমিটি গঠন করা হয়নি। এই কমিটির সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু ও সেক্রেটারি পদে আলী আহম্মদ রেজা উজ্জল রয়েছেন। তবে শহর কমিটির নেতারাই এখন মহানগর কমিটি হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। যুবলীগের কমিটি গঠনের এই সেশন জটের কারনে নেতৃত্ব সৃষ্টি কিংবা বিকশিত হচ্ছেনা, উল্টো নেতৃত্ব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অনেকে পদশূণ্য অবস্থায় রাজনীতি থেকে মিউয়ে যাচ্ছেন।