সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে নেতৃত্বে এসে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করে আইনজীবী সমাজে ডায়নামিক আইনজীবী লিডার হিসেবে বহু আগেই সমাদৃত হয়েছেন অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল। যতবারই আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বে আসেন, ততবারই তিনি আইনজীবীদের কল্যাণে ব্যতিক্রমধর্মী উন্নয়ন করে যান। হাসান ফেরদৌস জুয়েল মানেই নতুন কিছু উন্নয়ন। এবারোও তার ব্যয় ঘটলো না। আইনজীবীদের কল্যাণে ‘ল’ইয়ার্স পার্সোনাল ডিপোজিট স্কীম’ চালু করেছে আইনজীবী সমিতি। আইনজীবী সমিতির এই ডায়নামিক সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের উন্নয়নযাত্রায় সঙ্গী হয়েছেন এবার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি। সবশেষ নারায়ণগঞ্জে হলো ‘শ্রম আদালত’। এই আদালতের সুফল পেতে শুরু করেছেন আইনজীবীরা।
‘ল’ইয়ার্স পার্সোনাল ডিপোজিট স্কীম’ সম্পর্কে আইনজীবী সমিতির সূত্রে জানাগেছে, এই প্রকল্পের অধীনে আইনজীবী সমিতির সদস্যগণ সরাসরি সমিতির অফিস থেকে ওকালতনামা, হাজিরা, বেইলবন্ড, ফাইল, সমন, নোটিশ ইত্যাদি ক্রয় করতে পারবেন। সমিতির কোন সদস্য যদি অফিস থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ওকালতনামা, হাজিরা, বেইলবন্ড, ফাইল, সমন, নোটিশ ক্রয় করেন তাহলে সমিতিতে উক্ত সদস্যের নিজস্ব ডিপোজিট স্কীমে নির্দিষ্ট অর্থ আইনজীবীদের জন্য জমা হবে।
একই সঙ্গে কোন আইনজীবী কতগুলো কবে কখন ওকালতনামা হাজিরা বেলবন্ড ক্রয় করেছেন তার হিসেব থাকবে। সেই হিসেবে তাদের ফান্ডে ক্রয়ের টাকার একটি অংশ জমা হবে। যা প্রতি বছরের জানুয়ারি মাসে আইনজীবীরা উত্তোলন করতে পারবেন। আইনজীবীরা চাইলে সেই ফান্ডের টাকা থেকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তাদের বার্ষিক ফি সমিতি পরিশোধ করে দিবে এবং অবশিংষ্ট টাকা আইনজীবীরা উত্তোলন করতে পারবেন। এবাবে প্রতি বছর চলতে থাকবে।
এ ছাড়াও আইনজীবী সমিতি থেকে ক্রয়কৃত প্রতিটি ওকালতনামায় বিচারপ্রার্থীর নিয়োগকৃত আইনজীবীর ছবি ও একটি গোপন পাসওয়ার্ড থাকবে। যে ওকালতনামায় ছবি দেখেই বিচারপ্রার্থী ও অন্যান্য আইনজীবীরাও সহজে নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবীকে সনাক্ত করতে পারবেন। এমনকি কারো সন্দেহ হলে ওকালতনামায় গোপন পাসওয়ার্ড মোবাইলে স্ক্যান করে নিশ্চিত হতে পারবেন।
এক্ষেত্রে কোনো আইনজীবীর মক্কেলের মামলা আরেক আইনজীবী পরিচালনা করতে পারবেন না , যতক্ষণ পর্যন্ত না অপর আইনজীবী অনাপত্তিপত্র দেয়। পূর্বের আইনজীবীর এনওসি জমা দেয়ার সঙ্গে নবনিযুক্ত আইনজীবীকে নতুন করে ওকালতনামা জমা দিতে হবে, কারন পূর্বের ওকালতনামায় পূর্বের আইনজীবীর ছবি থাকবে। শুধু তাই নয়, যেসব ভেন্ডার ওকালতনামা ক্রয় করছেন তাদের ভেন্ডার লাইসেন্সের একটি গোপন পাসওয়ার্ড থাকবে। ফলে সহজেই সনাক্ত করা যাবে ওকালতনামা আসল নাকি নকল। ফলে জাল ওকালতনামা তৈরির রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে প্রাচ্যের ডান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জ। শিল্পাঞ্চল খ্যাত এই নারায়ণগঞ্জের আইনজীবী সমাজ ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রত্যাশা পুরণ করেছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়। নারায়ণগঞ্জে শ্রম আদালত স্থাপনে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৯ মে সারাদেশের গাজীপুর, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় শ্রম আদালত স্থাপনে প্রজ্ঞাপন জারি করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়।
২০১৫ সাল থেকে শ্রম আদালত স্থাপনের জন্য এমপি শামীম ওসমান ও এমপি সেলিম ওসমানের মাধ্যমে চেষ্টা করে আসছেন আইনজীবী সমিতির সমিতির বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল। ওই সময় তিনি আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
২০১৫ সালে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় এসেছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ওই সময় নারায়ণগঞ্জে শ্রম আদালত স্থাপনের দাবি তুলেছিলেন অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল। নারায়ণগঞ্জ প্রাচ্যের ডান্ডি। শিল্পাঞ্চল খ্যাত নারায়ণগঞ্জে শ্রম আদালত স্থাপন জরুরী সেইসব বিষয়গুলো তিনি তুলে ধরেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী দুই এমপি শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যান তিনি।
হাসান ফেরদৌস জুয়েল সম্পর্কে আইনজীবীরা বলছেন- আইনজীবী সমিতিতে কোষাধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে আইনজীবীদের জন্য সর্বপ্রথম ডাইরেক্টরী তৈরিতে ভুমিকা রেখেছিলেন হাসান ফেরদৌস জুয়েল। সেই ধারাবাহিকতায় নানা উন্নয়ন কর্মকান্ডের সঙ্গে আইনজীবীদের কল্যাণে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ফান্ড বেনাভোলেন্ড ফান্ড তৈরি করেছিলেন তিনি। যে ফান্ড তৈরি করতে গিয়ে অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছিলেন। ওই সময় যারা বেনাভোলেন্ড ফান্ড তৈরিতে বিরোধীতা করেছিলেন আজকে তারাও এই ফান্ড তৈরির জন্য জুয়েলের প্রশংসায় মঞ্চমুখ। একই ধারাবাহিকতায় আইনজীবী সমিতির ভবন ও সমিতির কার্যক্রমে ডিজিটালাইজেশনের ছোয়া দিয়েছিলেন জুয়েল। বর্তমানে আইনজীবী সমিতির যাবতীয় কার্যক্রমে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার।
নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীদের সুবিধার জন্য বর্তমান যেই ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ কাজ চলমান সেই ভবনের রূপকার হাসান ফেরদৌস জুয়েল। ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তাও তিনি। পুরাতন ভবন ভেঙ্গে যখন ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণে জুয়েল এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখন অনেকেই বিরোধীতা করেছিলেন। কিন্তু জুয়েল থেমে থাকার মানুষ নন। তিনি আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে আইনজীবীদের বুঝিয়ে শুনিয়ে আকুতি মিনতি অনুরোধ করে সকলকে রাজি করিয়ে পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ডিজিটাল বার ভবন নির্মাণ শুরু করেন। ওই সময় জুয়েলের সঙ্গে উন্নয়নযাত্রায় ছিলেন সমিতির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া এবং পরবর্তী পরিষদের সাবেক সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান ছাড়াও বিগত কয়েকটি পরিষদের নির্বাচিত অন্যান্য আইনজীবী নেতারা।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের কল্যাণে ব্যতিক্রমধর্মী উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আইনজীবীদের জন্য চালু করা হয়েছে ‘ল’ইয়ার্স পার্সোনাল ডিপোজিট স্কিম’। ৮ মে রবিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল আমিন রনি।
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল পবিত্র রমজান মানে আইনজীবী সমিতির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও নারায়ণগগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন।