সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জে গরম হয়ে ওঠেছে রাজনৈতিক পরিস্থিতি। গত দুই সপ্তাহ ধরে টানা আন্দোলন কর্মসূচিতে সক্রিয়তা দেখিয়ে আসছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। একই সঙ্গে জেলা ও জাতীয় পার্টির কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন রূপে জানানি দিয়েছে নারায়ণগঞ্জের জাতীয় পার্টি। গণ দাবি নিয়ে ইতিমধ্যে আন্দোলনেও নেমেছে জাতীয় পার্টি। তবে সরকারি দল আওয়ামীলীগের নীরব ভুমিকা ছিলো দীর্ঘদিন যাবত। জাতীয় ও দলীয় কর্মসূচি পালনেও আওয়ামীলীগকে দেখা গেছে ঢিমেতালে ভাব। সবশেষ এবার সরকারি দল আওয়ামীলীগও সামনের নির্বাচনকে টার্গেট করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। ১১ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হলো।
দেশে বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে মাসব্যাপী আন্দোলন করে আসছে বিএনপি। সারাদেশে সেইসব কর্মসূচি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপিও পালন করেছে। এরি মাঝে এসব কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ভোলায় বিএনপির দুই নিহত হয়েছেঁন। এর প্রতিবাদে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো প্রায় প্রতিদিন বিক্ষোভ মিছিল সভা সমাবেশ পালন করে আসছে। ১১ আগস্ট কেন্দ্রীয় বিএনপি মহাসমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে। সেইসব কর্মসূচিগুলোতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা পৃথক পৃথকভাবে মিছিল নিয়ে যোগদান করেছেন। একই সঙ্গে যারা আগামীতে নিজ নিজ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী তারাও শোডাউন করে এসব কর্মসূচিগুলো পালন করে আসছেন।
এদিকে গত ৩১ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টি। জেলা কমিটিতে সানাউল্লাহ সানুকে সভাপতি ও আবু নাঈম ইকবালকে সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর কমিটিতে মোদাচ্ছেরুল হক দুলালকে সভাপতি ও আফজাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে পুর্ণাঙ্গ দুটি কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটির নেতারা নির্বাচিত হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার হাত ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। নেতাকর্মীরা সান নারায়ণগঞ্জের কাছে দাবি করেন পূর্বের চেয়ে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টি দিনকে দিন শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও নানা ব্যর্থতার পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও কমিটি গঠনের পর জেলার রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজারে আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন কিংবা জেলার নেতা হিসেবে সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলের খবরদারি দেখা যায়নি। এমনকি জেলা আওয়ামীলীগের কোনো কর্মসূচিতেও রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতাদের অংশগ্রহণ দেখা যায়না। মুলত দুটি এলাকায় স্থানীয় দুজন প্রভাবশালী এমপি কেন্দ্রীয় নেতাদের মাধ্যমে জেলার নেতাদের দিয়ে কমিটি ভাগিয়ে নেয়। যে কারনে হাই ও বাদলকে সোনারগাঁও নিয়ে পড়ে থাকতে হয়।
ফতুল্লায় প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান। সেখানেও তাদের খবরদারি জোরালো নেই। সোনারগাঁয়ে কমিটি গঠন নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা এমনকি হাই ও বাদলকে সভা করতে গেলে বিদ্রোহীদের হামলার শিকার হয়েছিলেন সোনারগাঁয়ে। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ কমিটিকেই আবারো সংস্করণ করে আহ্বায়ক কমিটি দেয় তারা। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ এসব কারনে শক্তিশালী সংগঠন হয়ে ওঠছে না। তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়েছে। কারন রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার আওয়ামীলীগের রাজনীতি যেনো জেলা আওয়ামীলীগের বাহিরের কোনো এলাকায় পরিনত হয়েছে। অবশেষে সেই আড়াইহাজারে দেখা গেলো জেলা আওয়ামীলীগের সভা।