সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত ১ সেপ্টেম্বর ছিলো বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ওইদিন নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে র্যালীর আয়োজন করেছিলো জেলা ও মহানগর বিএনপি। র্যালী বের করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এবং এতে শাওন নামের যুবদল কর্মী নিহত হোন। কিন্ত সেদিন বিএনপির এত্ত নেতাকর্মীদের দেখা মিলেনি যা গত ৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে পাল্টা কর্মসূচিতে যত্ত নেতাকর্মীদের দেখা মিললো। এমনকি পাল্টা কর্মসূচিতে আসা সিংহভাগ নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি শাওনের গায়েবানা জানায়াতেও। অথচ শোক র্যালীতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের জমায়েত করেছেন মহানগর বিএনপির বিদ্রোহীরা।
এমনকি মহানগর বিএনপির নবগঠিত কমিটিতে পদ পাওয়া যেসব নেতারা বিদ্রোহ করে পদত্যাগ করেছেন তাদের অধিকাংশ নেতারা ১ সেপ্টেম্বর দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে ছিলেন না। পহেলা সেপ্টেম্বর ও ৬ অক্টোবরের কর্মসূচি দেখে অনেকেই মন্তব্য করেছে, জানাযার চেয়ে দোয়া মাহফিলে যেনো লোকজনের উপস্থিতি বেশি বিষয়টি তেমন হয়ে গেলো। মুলত বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যেসব নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছেন তাদের লাশের উপর রাজনীতি চলছে বলে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
ঘটনা সূত্রে, গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ নগরীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে র্যালী বের করতে যায় জেলা ও মহানগর বিএনপি। ওইদিন মহানগর বিএনপির তৎকালীন সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে পৃথকভাবে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের নিয়ে র্যালী বের করতে নামেন জেলা ও মহানগর বিএনপি। এতে পুলিশের বেদম লাঠিচার্জের শিকার হোন সাখাওয়াত ও মান্নান। ওইদিন জেলা ও মহানগর বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতাদের দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে নামতে দেখা যায়নি। দীঘক্ষন মান্নান ও সাখাওয়াতের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে লড়াই করেন। সেদিন রাজপথে আবু আল ইউসুফ খান টিপুও ছিলেন। ঘটনাস্থলে শাওন প্রধান নামের যুবদল কর্মী নিহত হোন।
এদিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। কমিটিতে সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করা হয়। কমিটি থেকে ১৫ জন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এদিকে ৬ অক্টোবর নিহত শাওন সহ সারাদেশের মহানগরীতে বিএনপির নিহত নেতাকর্মীদের জন্য শোক র্যালী কর্মসূচি দেন কেন্দ্রীয় বিএনপি।
কর্মসুচিতে পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় সাখাওয়াত ও টিপুর নেতৃত্বে মহানগর বিএনপি। সেদিন নগরীর মিশনপাড়া থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে শোক র্যালী করেন সাখাওয়াত ও টিপু। কিন্তু একই দিন পাল্টা কর্মসূচি পালন করেন বিদ্রোহীরা। তারা নগরীর ডিআইটি এলাকা থেকে র্যালী করেন।
বিদ্রোহীদের সঙ্গে ছিলেন জাকির হোসেন, আতাউর রহমান মুকুল, নুরউদ্দীন, আব্দুস সবুর খান সেন্টু, আবুল কাউসার আশা সহ বেশকজন শীর্ষ নেতা। তারাও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের নিয়ে র্যালী করেন। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পহেলা সেপ্টেম্বর দলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে যেদিন শাওন নিহত হলো সেদিন এত্ত নেতাকর্মীদের নিয়ে বিদ্রোহীরা কোথায় ছিলেন? মুলত সাখাওয়াত ও টিপুকে কাউন্টার দেয়ার জন্যই লোক দেখানো এই পাল্টা কর্মসূচি। ভবিষতে এদের ছায়াও দেখা যাবে না বলে মনে করছেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা। কারন যারা পাল্টা র্যালী করেছেন তাদের বেশির ভাগ নেতারা বিগত সময়ে সরকারি দল আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রকাশ্যে সভা মঞ্চে ওঠে রাজনীতি করেছেন।