সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী জাতীয় নির্বাচনের বছর খানিক সময় বাকি। ১২ অক্টোবর থেকে সারাদেশে বিভাগীয়ঢ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে টানা এই কর্মসূচির সমাপ্তি হবে। এরি মাঝে সারাদেশে আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় শোক র্যালী কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। নারায়ণগঞ্জেও ৬ অক্টোবর মহানগর বিএনপি ও ১০ অক্টোবর জেলা বিএনপি বৃহত্তর আকারে শোক র্যালী কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু ১০ অক্টোবর থেকে দেখা যাচ্ছে রণপ্রস্তুতি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে বিএনপি।
১০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ডিআইটি এলাকা থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে শোক র্যালী করে জেলা বিএনপি। দুপুর থেকে জেলার সোনারগাঁও, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর ব্যানারে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে ডিআইটি এলাকায় জমায়েত হয়। ওই সময় প্রতিটি মিছিলের নেতাকর্মীদের হাতে বাঁশের লাঠি, কাঠের লাঠি, কাঠের টুকরো, পাইপ, চেলা কাঠের লাঠি নিয়ে শোক র্যালীকে অংশগ্রহণ করে। এসব লাটিতে লাগানো ছিলো কালো পতাকা। নেতাকর্মীদের হাতে এসব লাঠি নিয়ে মিছিলগুলো রীতিমত রণপ্রস্তুতি দেখা গেলো।
এর আগে রাজধানীর গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীতে বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে লাঠি হাতে মিছিল করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারপর থেকে লাগাতার কর্মসূচিগুলোতে লাঠি হাতে মিছিল করে যোগদান করতে দেখা যায়। পরদিন মেট্রো পলিটন পুলিশ রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলোতে লাঠি হাতে না আসার পরামর্শ দেন। কিন্তু পুলিশের এমন বক্তব্যের পর সারাদেশে বিএনপির কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের হাতে লাঠি দেখা যাচ্ছে।
গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে নগরীর ২নং রেলগেট এলাকায় র্যালী বের করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। ওই সময় শাওন প্রধান নামে যুবদল কর্মী নিহত হোন। বিএনপি দাবি করে পুলিশের গুলিতে শাওন নিহত হয়েছেন। এমন অভিযোগে আদালতে মামলার আবেদনও করেছিলো বিএনপি। শাওন যখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রায় আড়াইহাজার ঘন্টা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটে। মারমুখী হয়ে ওঠে নেতাকর্মীরা।
এরপর মুন্সীগঞ্জে গত ২১ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জে জেলা বিএনপি কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়। কয়েকঘন্টা সংঘর্ষে শাওন ভুঁইয়া নামের একজন নিহত হোন। ওই সময় মারমুখী নেতাকর্মীদের পাল্টা হামলায় পুলিশ পানিতে লাফিয়ে পড়তে বাধ্য হয়।
এর আগে ৩১ জুলাই ভোলায় কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় পুলিশের গুলিতে বিএনপির কর্মী আব্দুর রহিম নিহত হোন। তবে উপরোক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মী নিহত হলেও কর্মসূচিগুলোতে দিনকে দিন নেতাকর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি রণপ্রস্তুতি নিয়ে আন্দোলনে আসছে নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বেশকজন শীর্ষ নেতা সান নারায়ণগঞ্জকে বলছেন, গত১৫ বছরে নেতাকর্মীরা একেকজন ডজন ডজন মামলার আসামি হয়েছেন। হামলা মামলার শিকার হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। যে কারনে হামলা মামলার ভয় নেতাকর্মীদের মন থেকে ওঠে গেছে। নেতাকর্মীরা এখন গণতন্ত্রের মুক্তির লড়াইয়ে বুকের তাজা রক্ত দিতেও প্রস্তুত। যে কারনে পুলিশের গুলিকেও নেতাকর্মীরা ভয় পায় না।