সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বলয় ভিত্তিক রাজনীতিতে জর্জরিত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি। এখানকার নেতারা নেতৃত্বের প্রতিযোগীতায় যেনো নিজ দলের নেতাদের মধ্যে একে অপরের শত্রু। যারা এই আসনে এমপি হতে চান এবং যারা উপজেলার শীর্ষ নেতৃত্ব নিতে চান তারা দলের কর্মীদের মাঝে গ্রুপিং সৃষ্টি করেছেন। এক বলয়ের নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা নির্যাতন হলেও অপর বলয়ের নেতাকর্মীরা কোনো প্রতিবাদ করেনি। সান নারায়ণগঞ্জকে অনেকে জানান এখানে উল্টো অভিযোগ রয়েছে নিজ বলয়কে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারি দলের সহযোগীতা নিয়ে বিএনপির অপর বলয়কে ঘায়েলের রাজনীতিও এখানে চলে আসছে।
তেমনি দেখা গেলো ছাত্রদল নেতা অনিক নিহতের পর। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলায় ছাত্রদল নেতা নিহত হলেও কোনো প্রতিবাদ ওঠেনি বিএনপি থেকে। কারন নিহত অনিক দিপু ভুঁইয়া বলয়ের কর্মী। তাৎক্ষনিক কোনো মিছিল কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমেও বিএনপির কঠোর প্রতিবাদ দেখা গেলো না। এর কয়েক মাস পূর্বে ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি মাসুদুর রহমানের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর ও তার পিতা মাতাকে মারধর এবং উল্টো ছাত্রদল নেতার পিতা মাতা সহ আসামি করে মামলা হলেও বিএনপি থেকে এর কোনো প্রতিবাদ আসেনি।
ঘটনা সুত্রে জানাগেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়েদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাহিদ হাসান ভুঁইয়ার নেতৃত্বে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মশাল মিছিল করে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের মশাল মিছিল শেষে মিছিলকারীদের ওপর স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি অমিত হাসান অনিক নিহত হয়েছেন। নিহত অমিত হাসান অনিক কাঞ্চন পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন। নিহত অমিত হাসান অনিক রূপগঞ্জের চরপাড়ায় দাইমুদ্দিন হাসপাতাল এলাকার আমীর হোসেনের ছেলে।
উপজেলা বিএনপির এমন নীরবতায় প্রশ্ন তুলেছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য মাসুকুল ইসলাম রাজীব তার ফেসবুকে লিখেছেন, রূপগঞ্জে এত বড় বড় নেতার সমাহার, অনিককে হত্যার এতক্ষণ পার হবার পরেও সবাই মিলে একটি প্রতিবাদ মিছিল করা গেলোনা? বদলা ট্যাংক ফুটো করেই নিব ইনশাআল্লাহ।
এর আগে ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে অমিত হাসান অনিক নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
নেতাকর্মীরা জানান, তারেক জিয়া ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে একটি মশাল মিছিল বের করেন রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা ১০-১২টি মোটরসাইকেলে করে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। ভুলতা গাউছিয়া মুন্সি পাম্পের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রদল ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে অনিককে ধাক্কা দিয়ে ঢাকা বাইপাস সড়কে চলন্ত মাইক্রোবাসের নিচে ফেলে দেয় হামলাকারীরা। এতে অনিক গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মিছিলের প্রায় শেষ পর্যায়ে হঠাৎ লাঠিসোটা, রামদা ও রড নিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় মোট ছয়জন আহত হয়। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় ছাত্রদল নেতা অনিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনিকের মৃত্যু হয়।