সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
গত ১৫ নভেম্বর বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন আহমেদকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর ইউটার্ণ নিয়েছে ফতুল্লা থানা বিএনপির রাজনীতিও। মুলত গত ২০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তৎকালীন কমিটির নেতারা ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেন। কিন্তু থানা কমিটি গঠনের পর আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল ও সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম টিটু একসাথে বসতে পারেননি। এমনকি পুরো কমিটির নেতাদের নিয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ দেখা যায়নি। ইউনিয়ন কমিটি গঠন তো দুরের কথা থানা কমিটি গঠনের সামান্য উদ্যোগও নিতে ব্যর্থ হয়েছেন রোজেল ও টিটু।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটির নেতারা মুলত দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায় শুরুতেই। আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল ও তার অনুগতরা মুলত বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শিল্পপতি মুহাম্মদ শাহআলমের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টায় নামেন। অন্যদিকে শহিদুল ইসলাম টিটু গিয়াসউদ্দীনের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে রাজনীতি করেন। থানা কমিটি গঠনের পর দুই ভাগে তারা দলীয় কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
থানা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার এমন ব্যর্থতার কারনে এই কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার সুযোগ পেয়েছে জেলা বিএনপি। নতুন কমিটি হলে রোজেলকে না রাখার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। কারন ইতিমধ্যে তিনি জেলা বিএনপির কমিটি থেকে হোচট খেয়েছেন। তিনি বিগত জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন, এরও আগের কমিটিতে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু তিনি নতুন কমিটিতে স্থান পাননি।
এদিকে থানা বিএনপির নেতৃত্বে পূনর্বহাল হতে চেষ্টায় নেমেছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার মনিরুল ইসলাম। তিনি দীর্ঘদিন নেতৃত্বের বাহিরে থাকলেও রাজনীতিতে সরব রয়েছেন। নতুন করে শীর্ষ পদে আসার আলোচনায় লুৎফর রহমান খোকা। তিনি জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বৃত্তহর ইউনিয়ন কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদেও রয়েছেন। মনিরুল ইসলামকে বয়সের কারনে না রাখার সম্ভাবনাই বেশি। এক্ষেত্রে ফতুল্লা থানা বিএনপির শীর্ষ দুই পদে লুৎফর রহমান খোকা ও শহিদুল ইসলাম টিটুকে দেখা যেতে পারে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ধারণা করছেন।
গত ২০ জানুয়ারি ঘোষিত ফতুল্লা থানা বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটিতে রয়েছেন আহবায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, যুগ্ম আহবায়ক নজরুল ইসলাম পান্না মোল্লা, আকবর হোসেন, ওমর আলী, রুহুল আমিন শিকদার, আব্বাস আলী বাবুল, অ্যাডভোকেট এসএম মাহমুদুল হক আলমগীর, অ্যাডভোকেট আল-আমিন সিদ্দিকী, মো: আলাউদ্দিন বারী, সদস্য সচিব মো: শহিদুল ইসলাম টিটু, সদস্য পদে আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, রিয়াদ মো: চৌধুরী, রহিমা শরীফ মায়া, মো: নাদীম হাসান মিঠু, মো: আবু তাহের মোল্লা, আমজাদ হোসেন শিকদার, মো: বোরহান ব্যাপারী, এড.সৈয়দ মতিউর রহমান শাহীন, মো: গিয়াস উদ্দিন লাভলু, মো: রাসেদুল হক মিলকী, অ্যাডভোকেট জাহিদ হাসান রুবেল, আবু বখতিয়ার সোহাগ, কায়েস আহমেদ পল্লব, হাবিবুর রহমান রিপন, এনামুল হক মামুন, আবুল হোসেন, শাহজাহান আলী, মাহফুজুর রহমান , জুয়েল , জাহাঙ্গীর হোসেন।
এর আগে গত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি পদ থেকে শাহ আলমের পদত্যাগ গৃহীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমিটি ভেঙে দিয়ে তার পরদিন ২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসকে আহ্বায়ক ও নজরুল ইসলাম পান্নাকে সদস্য সচিব করে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো। পুরো কমিটিই শাহআলমের লোকজন দিয়ে গঠিত হয়।