সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
২০০৬ সালে ক্ষমতা হারিয়েছে দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি। মাঝে দুই বছর ফখরুউদ্দীন ও মঈনু আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও রাজনীতির পক্ষে লড়াই করেছিলো দলটি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে আওয়ামীলীগ। সেই থেকে হামলা মামলায় কারাভোগ নির্যাতনের পরেও নারায়ণগঞ্জে অটল রয়েছে বিএনপি। আনুমানিক জেলা ও মহানগরীর প্রায় ৫০ হাজার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় আসামি হয়েছেন। হাফ ডজন, একডজন করে মামলার সংখ্যা ছাড়িয়েছে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর। কোনো কোনো নেতাকর্মীর মামলার সংখ্যা ২০ কিংবা ৩০ এ উপরেও ছাড়িয়ে গেছে। তবুও বিএনপির রাজনীতি ছাড়ছেনা নেতাকর্মীরা।
বিগত ১৪ বছর যাবত মামলায় আসামি হয়ে কখনো কারাগারে কখনো বা আত্মগোপনে পরিবার পরিজন ছাড়াই কাটিয়েছেন নেতাকর্মীরা। যাদের দিন শুরু হয় কোর্টের বারান্দায় উপস্থিত হয়ে। দিনভর বিভিন্ন মামলায় বিভিন্ন কোর্টে হাজিরা দিতে দিতেই যাচ্ছে বছরের পর বছর। কোর্টে হাজিরা শেষ করেই দৌড়াচ্ছেন দলীয় কর্মসূচি পালনে রাজপথে মিটিং মিছিলে।
এত্ত বছর পরেও এমন নাজেহাল অবস্থাধীনেও রাজপথে পুলিশের বন্দুকের নলের ডগায় দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে শ্লোগান দিচ্ছেন, গ্রেপ্তার হচ্ছেন, কারাগারে যাচ্ছেন, মামলা খাচ্ছেন, আবারো জামিনে মুক্তি, আবারো রাজপথে। কেউ কেউ রাজপথেই প্রাণ বিলিয়ে দিচ্ছেন। এভাবেই কাটছে হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজনীতি। তবুও দমেনি বিএনপি।
এমন অবস্থায় আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি। গত ১৫ নভেম্বর সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীনকে আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে জেলা বিএনপি এবং গত ১৩ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুকে সদস্য সচিব করে মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
এই কমিটি গঠনের পর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি চাঙ্গা হয়ে ওঠেছে। নারায়ণগঞ্জের নগরীতে জেলা ও মহানগর বিএনপি ইতিমধ্যে বেশকটি কর্মসূচিত বৃহত্তর আকারে পালন করেছেন। যেখানে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের সমাগম দেখা গেলো, যা অতীতে তেমনটা একটা দেখা যায়নি। মুলত পোড় খাওয়া নেতাকর্মী সহ আড়ালে আবডালে থাকা কিংবা মান অভিমানে দূরে থাকা নেতাকর্মীদের সংগঠিত করেছেন নেতৃত্বে থাকা এই ৪ নেতা। সান নারায়ণগঞ্জকে নেতারা জানান আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি নেতাকর্মীদের নিয়ে যোগদান করবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহাগর বিএনপি।
অন্যদিকে জেলার সাতটি থানায় বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নামে একটি করে মামলা করেছে পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতারা। এসব মামলায় যেসব ঘটনা দাবি করা হচ্ছে তা মামলা হওয়ার আগে গণমাধ্যম কর্মীরাও জানতে পারেনি। বিএনপি নেতারা দাবি করছেন- পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতারা নিজেরাই ঘটনা সাঁজিয়ে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করছে। অতীতে বিএনপির মৃত নেতাকর্মীদের নামেও মামলার ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলো, সেই তাদের দ্বারা সাঁজানো মিথ্যা মামলা করাও সম্ভব। মুলত ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঠেকাতেই এমন মিথ্যা মামলা হচ্ছে, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এসব করে নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।