হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরার পথেই আরেক মামলায় তারা আসামী!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

পুলিশি মামলার কারণে ঘর বাড়ি ছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। ১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরার পথেই নেতাকর্মীরা জানলেন আরেকটি মামলায় তারা আসামী। ফলে গ্রেপ্তার ভয়ে আবারো বাড়ি ছাড়া হলেন তারা। জামিন পেয়ে আদালত চত্বর ছাড়ার আগেই সংবাদ পেলেন, আরও একটি মামলার আসামি হয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু সহ অর্ধশত বিএনপির নেতাকর্মী।

পুলিশ জানায়, ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের মৌচাক এলাকায় বিএনপির ৫০/৫৫ নেতাকর্মী লাঠিসোটা, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে মহাসড়ক অবরোধ করে মিছিল করে ও স্লোগান দেয়। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। মিছিল থেকে ৩/৪টি গাড়ি ভাংচুর করা হয় এবং এসময় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

আসামী হওয়া ছাত্রদল নেতা জুয়েল রানা দাবি করেন, যে ঘটনার দায়ে পুলিশ মামলা করলো আমরা জানিইনা এসব ঘটনার বিষয়। আমি বা আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মী এদিন কোনো মিছিলও করেনি। এটাই সত্য। সরকারি দলের লোকজন আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য নিজেদের লোক দিয়ে মিছিলের নাটক করিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।

সূত্র জানিয়েছে, এর আগে ২৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের করার অভিযোগে বিএনপির ৩৯ জন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সানোয়ার হোসেন। এই মামলায় বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহর আগাম জামিন নেন আব্দুল হাই রাজু, এম এ হালিম জুয়েল, সাগর প্রধান, জুয়েল রানা, মাহবুব হোসেনসহ দলটির নেতাকর্মীরা।

তারা অভিযোগ করেন, জামিন পাওয়ার পর বাড়ি ফিরবো। কিন্তু তার আগেই শুনি আমাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নতুন করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত পনের বছর ধরেই এমন করে একের পর এক মামলা তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।

পুলিশ সূত্র জানা যায়, বুধবার ৩০ নভেম্বর ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জে মৌচাক এলাকায় মশাল মিছিল ও ককটেল বিস্ফোর এবং গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ এনে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি, জামায়তে ইসলামী ও গণঅধিকার পরিষদের ২১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। ১ ডিসেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক দেবাশিষ কুন্ডু বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে এ মামলা দায়ের করেন। মামলার বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান।

মামলার আসামিরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ ভুঁইয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু, মহানগর ছাত্রদলের সহ সভাপতি জুয়েল রানা, থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য পলাশ, ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রওশন আলী, সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজহারুল হক ময়ুর, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলজার হোসেন, মহানগর বিএনপি নেতা আনিস, বিএনপি নেতা জাকির, থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন, থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি জয়নাল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাজা মিয়া, থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তার হোসেন, যুবদল নেতা মাসুম গাজী, বিএনপি নেতা আফজাল হোসেনসহ অজ্ঞাত ৩৫ জন।