সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
অবশেষে বিজয় দিবস পালনের মাধ্যমে বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠলো নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্বে। নতুন করে রাজনৈতিক মাঠে নেমেছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির। তিনি মুলত সঙ্গ দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহামুদকে।
জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বর্তমান কমিটির নেতাদের সঙ্গে গা ভাসালেও এতদিন আড়ালেই ছিলেন মামুন মাহামুদ। তার সদস্য সচিব পদের স্থলে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক খোকনকে রাখা হয়েছে। সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রবিকে রাখা হয়েছে যুগ্ম আহ্বায়ক। এতেই তুষ্ট হয়ে রবি গিয়াস ও খোকনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাজনীতি করে আসছিলেন। তবে নিজের শক্তির জানানি দিলেন মামুন মাহামুদও।
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে জেলা বিএনপির পৃথক ব্যানারে কর্মসূচি পালন করেছেন কাজী মনির ও মামুন মাহামুদ। এদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল। ফলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বের বাহিরে জেলা বিএনপির পৃথক শক্তিশালী বলয়ের শোডাউন দেখা গেলো সেদিন।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি মুহাম্মদ উদ্দীনের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ নগরীতে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেদিন তাদের সঙ্গে ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন, যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম টিটু, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, লুৎফর রহমান খোকা, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মাহামুদুর রহমান সুমন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আহমেদ, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হাই রাজু প্রমূখ।
অন্যদিকে পৃথকভাবে জেলা বিএনপির ব্যানারে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও জেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহামুদের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীতে শোডাউন করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান নেতাকর্মীরা। তাদের সঙ্গে ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেলও।
সেদিনের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জেলা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও পৃথক পৃথকভাবে জেলা বিএনপির দুটি শোডাউনে অংশগ্রহণ করেছেন। ফলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে বিরোধ বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে ওঠলো। জেলা বিএনপির কমিটি গঠনের পর গিয়াসউদ্দীনের উপর যেভাবে নেতাকর্মীরা হুমরি খেয়ে পড়েছিলেন সেই স্রোতে কাজী মনির ও মামুন মাহামুদের কাছে বিরাট ধাক্কা খেলেন গিয়াস। কাজী মনির ও মামুন মাহামুদ নিজেদের অবস্থান জানানি দিলেন পুরোনো রূপে।
কমিটি গঠনের সূত্রে জানাগেছে, বিরাট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ গিয়াস উদ্দিনকে আহবায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ভাগিয়ে আনা হয়। গত ১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার এই কমিটির অনুমোদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও গোলাম ফারুক খোকন নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক পদে রয়েছেন।
কমিটিতে ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে অধ্যাপক মামুন মাহামুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক পদে মনিরুল ইসলাম রবি, যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম টিটু, যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, যুগ্ম আহবায়ক লুৎফর রহমান খোকা, যুগ্ম আহবায়ক মোশারফ হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ জুয়েল আহমেদকে রাখা হয়।
কমিটিতে শর্ত জুড়ে দেয়া হয় যে, জেলা বিএনপির আওতাধীন কমিটির অনুমোদনের ক্ষেত্রে আহ্বায়ক, ১নং যুগ্ম অহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের যৌথ স্বাক্ষর প্রয়োজন হবে। কমিটির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মাহামুদ আগের কমিটির সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি ছিলেন আগের কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক।
শহিদুল ইসলাম টিটু ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব পদে রয়েছেন। জেলা যুবদলের সভাপতি পদে থাকাবস্থায় তিনি ফতুল্লা থানা বিএনপির সদস্য সচিব হোন। মাসুকুল ইসলাম রাজীব গত কমিটিতে সদস্য ছিলেন। তবে এর আগের কমিটিতে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
লুৎফর রহমান খোকা জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক। কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি। জুয়েল আহমেদ আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। এর আগে তিনি উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। মোশারফ হোসেন সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। এর আগে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন তিনি।