দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনে ৬১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন। যার মধ্যে ৪৭ জনের মনোনয়ন বৈধ ও ১৪ জনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেছে নারায়ণগঞ্জ রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া। বাতিলের মধ্যে রয়েছে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী জেলা বিএনপির সেক্রেটারি অধ্যাপক মামুন মাহামুদ ও বিএনপির প্রার্থী মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এবং গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনিত প্রার্থী বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশারফ হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন রয়েছেন। তবে ৫টি আসনের বর্তমান ৫ এমপির কারোরই মনোনয়ন বাতিল হয়নি।
২ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র যাচাই বাছাই করে বৈধ প্রার্থী ও বাতিল প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার রাব্বী মিয়া। এ সময় জেলা নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি নৌকা প্রতীকে মনোনিত প্রার্থী গাজী গোলাম দস্তগীর, বিএনপির মনোনিত প্রার্থী চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুইয়া, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম চন্দন, স্বতন্ত্র হাবিবুর রহমান, ইমদাদ উল্লাহ, আজম খানের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। এখানে মোট ১০ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। যাদের মধ্যে ৮ জনের মনোনয়ন বৈধ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রেহেন আফজাল ও জাকের পার্টির প্রার্থী মাহফুজুর রহমানের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার) আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, বিএনপির মনোনিত প্রার্থী সাবেক এমপি আতাউর রহমান খান আঙ্গুর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুর রহমান সুমন, কমিউনিস্ট পাটির প্রার্থী হাফিজুল ইসলাম, জাকের পার্টির মুরাদ হোসেন জামাল, ইসলাম আন্দোলনের নাসির উদ্দীনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। এখানে ৮ জনের মধ্যে ৭ জনের মনোনয়ন বৈধ ও অপরজন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হানিফ হৃদয়ের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁও) আসন থেকে জাতীয়পার্টির বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, বিএনপি মনোনিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার, তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মজিবুর রহমান মানিক, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী আব্দুস সালাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সানাউল্লাহ নূরী, জেএসডির প্রার্থী ফখরুদ্দীন ইব্রাহীম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ হোসেন জামাল, জাকের পার্টির প্রার্থী মোস্তফা আমির ফয়সাল ও কল্যান পার্টির প্রার্থী রাশেদ ফেরদৌসের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এখানে ১৫ জন মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। যার মধ্যে সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ নেতা মোশারফ হোসেন, জাতীয়পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের পালিত মেয়ে অনন্যা হুসেইন মৌসুমী, আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম, বিএনএফ প্রার্থী শাহাব উদ্দীন হোসেন ভুইয়া ও গণফোরামের প্রার্থী সিরাজুল হকের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়। তবে এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন সোনারগাও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর। তিনি মনোনয়ন পত্র দাখিল করেননি। ফলে এখানে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আজহারুল ইসলাম মান্নান।
নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান, বিএনপির মনোনিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য মুহাম্মদ শাহআলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিমাংসু সাহা, ন্যাপের প্রার্থী ওয়াজিবুল্লাহ অজু, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের প্রার্থী সেলিম মাহামুদ, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী ইকবাল মাহামুদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্র্টির প্রার্থী মাহামুদ হোসেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিমউদ্দীনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এখানে ১৬ জন মনোনয়ন দাখিলকারীর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দীন ও তার ছেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মুহাম্মদ কাউসার, জেলা বিএনপির সেক্রেটারি মনোনিত প্রার্থী মামুন মাহামুদ, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের শ্রমিক উন্নয়ন কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী কাউসার আহমেদ পলাশ ও কেন্দ্রীয় জাতীয়পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দীন খোকা মোল্লার মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনে জাতীয়পার্টির প্রার্থী বর্তমান এমপি একেএম সেলিম ওসমান, বিএনপির মনোনিত প্রার্থী সাবেক এমপি আবুল কালাম, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা সাবেক এমপি এসএম আকরাম, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হাফেজ কবির হোসেন, সাম্যবাদী দলের প্রার্থী সাঈদ আহমেদ, বাসদের প্রার্থী আবু নাঈম খান বিপ্লব, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট মন্টু চন্দ্র ঘোষ, ইসলামিক ফ্রন্টের প্রার্থী বাহাদুর শাহ, জাকের পার্টির প্রার্থী হাসান জামাল, কল্যাণ পার্টির প্রার্থী আফতাব ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আবুল কালামের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়।
এ আসনে ১২ জন মনোনয়ন দাখিলকারীর মধ্যে একমাত্র বিএনপির মনোনিত প্রার্থী কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
রিটার্নিং অফিসার রাব্বী মিয়া প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যাদের মনোনয়ন বাতিল ও বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এসব বিষয়ে কোন প্রার্থী আপিল করতে পারবেন। তবে আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহার আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে করতে হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হবে।