সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
একদিনে নারায়ণগঞ্জের তিনটি থানায় ৩৯ জন মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুুলিশ। এসব মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীদের জামিন করাতে আদালতপাড়ায় দেখা গেল সরকার দলের বেশকজন শীর্ষ নেতাকেও। কারা এসব চিহ্নিত সন্ত্রাসী মাদক বিক্রেতাদের জামিনের ব্যবস্থা করতে আইনজীবীদের পিছনে ঘুরছেন তাদের দিকেও জেলা পুলিশের নজর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। যারা এসব সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতাদের জামিন করাতে আইনজীবীদের পিছনে দৌড়াচ্ছেন তারাই মুলত নারায়ণগঞ্জের মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের শেল্টারদাতা।
নারায়ণগঞ্জে গত ২৪ ঘন্টায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৩৯ জন মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। যার মধ্যে জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী সরকারি দলের নেতা মোফাজ্জল হোসেন চন্নুকেও অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযানে ফতুল্লায় ২৩ জন, সদর মডেল থানায় ১৩ জন ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যার মধ্যে মোট ৩৯ জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোফাজ্জল হোসেন চুন্নুও।
জানাগেছে, সন্ত্রাসী মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু সরকার দলের সঙ্গে রাজনীতি করে আসছিলেন। তিনি জেলার একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও ৩৯ জন মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার আদালতে পাঠানো হলে নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়ায় আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের দেখা যায় এসব মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীদের জন্য আইনজীবীর সহায়তা নিতে। রবিবার সকাল থেকেই সরকারি দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের আদালতপাড়ায় দেখা যায়। রবিবার মহানগর আওয়ামীলীগের একটি অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাকেও আদালতপাড়ায় দেখা গেল। যার বিরুদ্ধে বন্দর থানা এলাকায় মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রনের অভিযোগ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ জানিয়েছে, ২০ এপ্রিল শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে সদর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযানে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে যাচাই বাছাই করে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
আসামিরা হলো- মাদক বিক্রেতা সজিব, পলাশ, মো. শামীম, আবদুল খালেক, নাজমুল হাসান, সোহেল, মো. আল রাহাত, মো. আল রাজু, মো. মাসুদ ওরফে জামাই মাসুদ, শিরিন আক্তার, শামীম, মো. নুরুল হক ওরফে বুড়া ও জোসনা বেগম।
অন্যদিকে ফতুল্লা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু সহ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। সন্ত্রাসী সময় চুন্নুর কাছ থেকে ৫ শতাধিক ইয়াবা ট্যাবলেট ও একটি বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানার ১০টি মামলাসহ বিভিন্ন থানায় ১৯টি মামলা বলে জানায় পুলিশ।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আসলাম উদ্দিন বলেন, পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের নির্দেশে ফতুল্লার চাঁদমারী, মাসদাইর, পঞ্চবটি, লামাপাড়া সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অস্ত্র ও মাদক সহ চুন্নুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মোট ২৩ জন মাদক বিক্রেতা ও সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ২৩ গ্রাম হেরোইন ও ৭৫ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর শাহিন পারভেজ জানিয়েছেন, ৭ মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।