সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
অনেকটা ‘খাল কেটে কুমির আনা’ বাগধারার মত ঘটনা। নেতৃত্ব হারানোর পর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের রাজনীতিতে দেয়া দীর্ঘ শ্রম তুলে দিয়েছিলেন এক সময়কার ছাত্রদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফের হাতে। খোরশেদের বিশ্বস্ত রানা মুজিব ও রশিদুর রহমান রশুর মত নেতাকর্মীদের পেছনে রেখে জোসেফকে সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন খোরশেদ। খোরশেদের সেই নেতাকর্মীরা এখন জোসেফের পালে দুলছে, যেখানে খোরশেদের বিশ্বস্তদের আম-ছালা দুটোই যাওয়ার দশা। খোরশেদের তৈরিকৃত মহানগর যুবদলের একটি অংশ এখন পুরোপুরি জোসেফের নিয়ন্ত্রণে। জোসেফ তাল মিলাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির মুলধারার রাজনীতিতে।
ঘটনা সূত্রে জানাগেছে, গত ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছিলো কেন্দ্রীয় যুবদল। কমিটিতে সিনিয়র সহ সভাপতি পদে ছিলেন মনোয়ার হোসেন শোখন, সাধারণ সম্পাদক মমতাজউদ্দিন মন্তু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে সাগর প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুর রহমান রশু।
আংশিক কমিটি ঘোষণার ৫ মাস পর খোরশেদকেই সভাপতি রেখে ২০১ সদস্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের কমিটি বাতিল করে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল। মমতাজউদ্দীন মন্তুকে আহ্বায়ক ও মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে রয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক পদে সাগর প্রধান, যুগ্ম-আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টি ও শাহেদ আহমেদ।
এরি মাঝে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হোন মাজহারুল ইসলাম জোসেফ। তৎকালীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও তার ছোট ভাই মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বলয়ে রাজনীতি শুরু করেন জোসেফ। মহানগর যুবদলের কমিটির নেতৃত্ব ভাগিয়ে নিতে জোসেফকে মাঠে নামায় তারা। কিন্তু তারা দীর্ঘদিন খোরশেদের পাশে থেকে রাজনীতি করেছেন তাদেরকে জোসেফের পেছনে রাখা হয়। ব্যানার বানিয়ে জোসেফের নেতৃত্বে ঝুলে দেন নেতাকর্মীদের। নেতাকর্মীরা অবাক বনে গেলেও জোসেফের পেছনেই শ্লোগান দিতে থাকেন। কিন্তু আজোবধি জোসেফের হাতে নেতৃত্ব ওঠেনি।
মহানগর যুবদলের বিদ্রোহী করলেও সাম্প্রতিককালে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির একাধিক কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন জোসেফ। জোসেফের পাশে থাকা বেশির ভাগ নেতাকর্মীরা এক সময় খোরশেদের অনুগামী ছিলেন। যারা খোরশেদের লোকজন ছিলেন তারাই এখন জোসেফের বলয়ে পরিনত হয়েছেন। বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জের যুবদলের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা মহানগর বিএনপির মুলধারায় অংশগ্রহণ করে যাচ্ছেন। ফলে মহানগর যুবদলের বিরাট শক্তও হারিয়েছেন খোরশেদ।