দিনকাল নারায়ণগঞ্জ ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে এমপি সেলিম ওসমান বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি করছেনা। বিএনপির উপর ভর করে নির্বাচন করছেন ড. কামাল হোসেন। যাতে করে আপনাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সারা জীবন জেল থেকে বের হতে না পারে। আপনাদের নেতা তারেক রহমান সারা জীবন বাংলাদেশে আসতে না পারে। তাই তারা বিএনপি নেতাদের বাদ দিয়ে বেছে বেছে বসন্তের কোকিলদের মনোনয়ন দিচ্ছেন।
রবিবার ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন সুরুজ্জামান টাওয়ারে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সিটি কর্পোরেশনের বন্দর থানাধীন ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলদের সাথে মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জনপ্রতিনিধিরা নেতা নন। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের গোলাম। আর জনপ্রতিনিধিদের উন্নয়ন কাজ করতে যারা সহযোগীতা করেন তারাই হচ্ছে জনপ্রতিনিধিদের নেতা। জনপ্রতিনিধি হতে গেলে অবশ্যই জনগণের গোলাম হতে হবে। কারন আপনার দায়িত্ব পালনের জন্য সরকার আপনাকে সম্মানী ভাতা প্রদান করেন। আর সেই সম্মানী ভাতা আপনি কাউকে দেন না। তাই জনপ্রতিনিধিরা দেশের পাবলিক সার্ভেন্ট।
তিনি বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছি নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই যেনো আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী দেওয়া হয়। তিনি আমাকে বলেছেন, আমার বিশ্বস্ত লোক দরকার। তিনি আমাকে মহাজোট থেকেই নির্বাচন করার জন্য বলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিশন ২০২১ এর ঘোষণা দিয়েছেন। আর আমি নারায়ণগঞ্জ বন্দরের উন্নয়নের জন্য ভিশন ২০২০ ঘোষণার প্রেক্ষিতে আপনাদের কাছে ২ বছরের সময় চাই।
সেলিম ওসমান আরো বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই নৌকা প্রতীক দেওয়ার কথা জানিয়েছিলাম। উনার সাথে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক। সেই সুবাদে আমি উনাকে আপা বলি। কিন্তু উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যেখানে আছি সেখানেই থাকতে। আমি উনার নির্দেশ অনুসরন করেছি। কারন আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আদর্শ এবং শেখ হাসিনা ছাড়া কিছু বুঝি না। বঙ্গবন্ধুর পায়ে অস্ত্র জমা দিয়ে দেশের উন্নয়নে নেমেছিলাম।
মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে আবারো নিজের রাজনৈতিক গুরু সম্বোধন করে তিনি বলেন, গতকাল আনোয়ার ভাই ও রশিদ ভাই আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে মিটিং করেছেন। আনোয়ার ভাই বলেছেন সেলিম ওসমান যদি আনারস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন তাহলেও উনি সেলিম ওসমানের নির্বাচন করবেন। আনোয়ার ভাই রশিদ ভাই আমাকে দাওয়াত দিয়েছেন। আমি অবশ্যই তাদের কাছে যাবো। সবাইকে একত্রে নিয়ে মিলেমিশে সম্মিলিত ভাবে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করে যাবো জীবনে শেষ রক্ত বিন্দু থাকা পর্যন্ত।
জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগে সভাপতি এম.এ রশিদ এবং বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সেলিম ওসমান বলেন, বিগত সাড়ে ৪ বছরে বন্দরে আপনাদের সকলের সহযোগীতায় বন্দরে যে উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের যতটুকুই করতে পেরেছি তার সম্পূর্ন কৃতিত্ব এই তিনজন মানুষের আমি উনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
অপরদিকে শনিবার বন্দরে নারীদের সাথে মতবিনিমিয়কালে এমপি সেলিম ওসমানের সহধর্মিনী মিসেস নাসরিন ওসমান মৃত্যুর পর তাঁর বন্দরে স্বামী পাশে দাফন করার যে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন সেটিকে এমপি সেলিম ওসমান তাঁর জীবনের সব থেকে বড় পাওয়া বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন আমার জীবনে এর থেকে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে। আমার স্ত্রী সারা জীবন একজন বন্ধুর মত আমার ছিল আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এমনকি আমার মৃত্যুর পরেও আমি একা থাকবো না। সেখানেও আমার স্ত্রী আমার পাশে থাকবে। একজন স্বামী হিসেবে এর থেকে সৌভাগ্যের আর কিছু হতে পারে না।
মত বিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল সাগর, ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ, ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার, ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, ২৩নং নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন, ২৬ ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা, ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর শিউলী নওশেদ, ও হুসনে আরা বেগম, মহানগর আওয়ামী মহিলালীগের সভানেত্রী ইসরাত জাহান খান স্মৃতি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।