সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, আমাদের বর্তমান নেতা তারেক জিয়া। আমরা কার নির্দেশ পালন করব? তারেক জিয়ার নির্দেশ পালন করব। আমরা কোন ইন্ডাস্ট্রির প্রেসক্রিপশনের নির্দেশ পালন করব না। সেই প্রেসক্রিপশনে আমরা আন্দোলন সংগ্রামও করব না, জাতীয় নির্বাচন করব না। আমরা বলতে চাই আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক। তারেক রহমানের নির্দেশে এই ফ্যাসিস শেখ হাসিনার সরকার পতনের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করার জন্য মহানগর মহানগর বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করছি। বিএনপিকে শক্তিশালী করার জন্যই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা কারো চোখ রাঙানিতে ভয় পাই না। আমরা কারো প্রেসক্রিপশনকে ভয় পাই না। আপনারা যে যাই বলুন সাখাওয়াত হোসেন খান ও টিপু কারো কাছে মাথা নত করবেনা। কোন রক্তচক্ষুকে ভয় পাবে না। নারায়ণগঞ্জের কোন স্থানীয় পরিবারের আদর্শ ক্রীত হয়ে রাজনীতি করি না। আমরা রাজনীতি করি শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক হিসেবে জিয়া পরিবারের রাজনীতি করি। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য তারেক রহমান আমাদেরকে যে দায়িত্ব দিয়েছে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হলো আমরা তা বাস্তবায়িত করবো করবো।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, আজকে এখানে বিএনপির সম্মেলন ও ইফতার পার্টিকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আজকে আমরা সম্মেলন করতে সফল হয়েছি। মুসলমানদের যে ইফতার সেই ইফতার পার্টি আজকে কিছুদিন ধরে সরকার ঈর্ষান্বিত হয়ে বিএনপি ইফতার পার্টিকে বন্ধ করে দিচ্ছে। কোথায় কোন ইফতার পার্টি করতে দিচ্ছে না।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপি’র আওতাধীন ১১নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সম্মেলন ও ইফতার মাহফিলে তারা এসব কথা বলেন। বুধবার ( ১৯ এপ্রিল ) বিকেল চারটায় মহানগরীর কিল্লারপুল এলাকায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, আজকের সরকারি দেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। আজকে বাজারে গেলে মানুষ কাঁদে। আজকের দ্রব্য মূল্যে এমন একটা অবস্থায় পৌঁছে গেছে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আজকে এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রতিদিন মিথ্যা কথা বলছে। কয়েকদিন আগে একটি পরিসংখ্যান এসেছে বাংলাদেশের মানুষ গরিব থেকে আরও গরীব হচ্ছে। এই সরকারের আমলে গরিব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সরকার ১৯৭৫ সালে এ দেশে দুর্ভিক্ষ উপহার দিয়েছিল। আবার ২০২৩ সালে এসে দেশে নতুন করে দুর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। তারা দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে ঘরে ঘরে চাকরি দিবে বলে ক্ষমতায় এসেছিল। সরকারের আমলে আজকে চাল ৬০ থেকে ১০০টাকা কেজি মত হয়ে গেছে। আজকে ঘরে ঘরে চাকরি নাই। দেশকে আরেকটি খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে গেছে। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা তারা আজকে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা বাজারে গিয়ে যত দামি হোক তারা দ্রব্য ক্রয় করে। সাধারণ মানুষের কি অবস্থা। তারা এক বেলা খেলে আরেক বেলা না খেয়ে থাকে। কি অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, সরকার ১৫ বছর যাবৎ এদেশের মানুষের উপর জবর দখল করে বসে আছে। এই সরকার দিনে ভোট না করে রাতের বেলায় সিল মেরে ক্ষমতায় এসেছে। এর আগে ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৭৪ টি আসনে তারা বিজয়ী হয়েছিল। সরকার নির্বাচন গুলোকে তামাশা পরিণত করেছে। সরকারি দেশের গণতন্ত্রকে নিয়ে ছিনিবিনি খেলছে। মানুষের ভোটার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বর্তমানে দেশের যে অবস্থায় এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে এই সরকারের বিরুদ্ধে। ঈদের পরে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে আন্দোলনের ডাক দিবেন মহানগর বিএনপি নেতাকর্মীরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সেই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এদেশে মানুষের তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। হত্যা, গুম, খুন এগুলো বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা অধীনে এদেশে আর কোন নির্বাচনে হতে দেওয়া হবে না। কারণ হাসিনা হলো বিড়াল চৌকিদার। বিড়ালের কাছে কি শুটকির নৌকা পাহাড় দিতে দেওয়া যায়। কারন বিড়ালের কিন্তু শুটকির প্রতি অনেক টান থাকে। আমরা শেখ হাসিনাকে তিনবার দেখেছি এদেশের মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছে। আজকে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচন করেছেন সেটা ভুলে যান। এটা ২০২৩ সাল। বিশ্ব বিবেক জেগে উঠেছে। এই সরকারকে আর এভাবে ভোট করতে দিবে না। বিশ্ব রাজনীতি থেকে শুরু করে জাতিসংঘ থেকে শুরু করে এ সরকারের প্রতি আজকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। আমরা এই সরকারকে বিশ্বাস করি না, আর জনগণও বিশ্বাস করে না । তাই অবিলম্বে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো মিলে যে ১০দফা কর্মসূচি দিয়েছে সেই ১০দফার প্রথম দাবি হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এবং একটি তত্ত্বাবধায় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন। এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচন নয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আর এই সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে। এবং এই নির্বাচন কমিশনকেও পদত্যাগ করতে হবে। এরপরে এই দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিষ্ঠিত হবে জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই ক্ষমতায় আসবে।
সম্মেলন শেষে হাবিবুর রহমান মিঠুকে সভাপতি ও আবুল হোসেন রিপনকে সাধারণ সম্পাদক এবং শেখ মোহাম্মদ দিপুকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
মহানগর ১১নং ওয়ার্ড বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান মিঠু’র সভাপতিত্বে ও সহ- সমন্বয়ক আবুল হোসেন রিপনের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, উদ্বোধক মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ রেজা রিপন, বিশেষ অতিথি মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান, রাশিদা জামাল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ রানা, সদস্য সচিব এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান, মাকিত মোস্তাকিম শিপলু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চঞ্চল মাহমুদ, নাজমুল হক, বিএনপি নেতা সাজ্জাদ হোসেন রোকন, মহানগর যুবদল নেতা নূরে এলাহী সোহাগ, সাইফুল ইসলাম আপন প্রমুখ।