র‌্যাব-১১ এর অভিযানে শফিক বাহিনীর ৬ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১১) এর অভিযানে নরসিংদী জেলার শফিক বাহিনীর ৬ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাব। ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধায় র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল কাজী শমসের উদ্দীন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়- গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল ২৫ এপ্রিল রাত পৌণে একটায় নরসিংদী জেলার সদর মডেল থানাধীন সাটির পাড়া সিববাগ মোড় এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে মোঃ আনিসুল হক ওরফে আনিস (৩৮), সাং- সাটিরপাড়া, থানা- নরসিংদী সদর, জেলা- নরসিংদী, রাজু ভৌমিক (৩০), সাং- সাটিরপাড়া, থানা- নরসিংদী সদর, জেলা- নরসিংদী, মোঃ পাপন মিয়া (২২), সাং- করিমপুর (শাজাহান বাড়ী), থানা- নরসিংদী সদর, জেলা- নরসিংদী, এ/পি- সাং-কাউরিয়াপাড়া, থানা- নরসিংদী সদর, জেলা- নরসিংদী, মোঃ ফজলে রাব্বী (২৬), সাং- রাঙ্গামাটি, থানা- নরসিংদী সদর, জেলা- নরসিংদী, মোঃ রাব্বী (২৩), সাং-কাউরিয়াপাড়া, থানা- নরসিংদী সদর, জেলা- নরসিংদী, মোঃ মাসুদ মিয়া (৩০), সাং- মধ্য শিলমান্দি, থানা- নরসিংদী সদর, জেলা- নরসিংদী। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের দেহ তল্লাশি করে ২টি বিদেশী রিভলবার, ৭৮ রাউন্ড রিভলবারের গুলি, ৪২ রাউন্ড শটগানের গুলিসহ ১টি চাপাতি, ১টি চাইনিজ কুড়াল ও ১টি চাকু উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব- ১১ আরও জানায়, আসামিরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গত ২৬ মার্চ নরসিংদীর শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিক বাহিনীর প্রধান মোঃ শফিকুল ইসলাম বাবু নিহত হলে পুরো সন্ত্রাসী বাহিনীটি আনিসুল হক আনিসের নিয়ন্ত্রনে চলে যায়। সন্ত্রাসী আনিস শফিক বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। সন্ত্রাসী রাজু ভৌমিক শফিক বাহিনীর চাঁদাবাজি, ডাকাতি, ছিনতাই ও অবৈধ দখলদারির সমন¡য়কারী ছিল বলে জানা যায়। সন্ত্রাসী পাপন, রাল্ফী, মোঃ ফজলে রাল্ফী ও মাসুদ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে শফিক বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিল।

উল্লেখ্য যে, এই সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে পুরো নরসিংদীবাসী অতিষ্ঠ হয়ে আসছে। তাদের চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, তাদের হিং¯্রতা অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে সংক্ষুদ্ধ জনগণ কথা বলার এবং এর প্রতিকার চাওয়ার সাহস পেতো না। এই বাহিনীর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীতে কয়েকটি হত্যাকান্ড সংগঠিত হয়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি ছিল তাদের দৈনন্দিন বিষয়। তাদের চাঁদাবাজি ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শিল্পপতি পর্যন্ত বিস্তৃত্ব ছিল। এই বাহিনীটি নরসিংদী শহরে কয়েকটি বাড়ী, ফ্লাট ও জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। এসকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ অত্র ব্যাটালিয়নের একটি বিশেষ দল শফিক বাহিনীর সদস্যদের উপর গোয়েন্দা নজরদারী চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজী ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে মর্মে স্বীকার করেছে। উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব আরও জানায়- র‌্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেপ্তারসহ আইনশৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র‌্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাব-১১ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। উক্ত অপরাধ দমনের লক্ষ্যে র‌্যাব অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার জন্য র‌্যাব ফোর্সেস নিয়মিত সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে থাকে।