সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির রাজপথের তৃণমুল নেতাকর্মীদের একমাত্র ভরসার স্থল আজহারুল ইসলাম মান্নান। হামলা মামলা নির্যাতিত নিপীড়িত জেল জুলুম হুলিয়ার শিকার নেতাকর্মীদের ছায়াও তিনি। বেশকবার নিজেও কারাভোগ করেছেন। একাধিকবার হামলা ও ডজন ডজন মামলার শিকার হয়েছেন। গত ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে গিয়ে নগরীর ২নং রেলগেট এলাকায় পুলিশের বেদম লাঠিপেটার শিকার হোন তিনি। সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীরা মান্নানকে তখন মানবপ্রাচীর তৈরি করে রক্ষা করতে গিয়ে অনেক নেতাকর্মী বেদম পিটুনি খেয়েছেন। সেই মান্নান রয়েছেন কারাগারে।
দেশের কঠিন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তৎকালীন সোনারগাঁয়ের বিএনপির অভিভাবক সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম জিয়া পরিবারকে মাইনাসের ষড়যন্ত্রে সংস্কারবাদীদের দলে চলে যান। শুরু হয় বিএনপির নেতৃত্বের টানাপোড়ান। সেই কঠিন পরিস্থিতিতেও ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়ে পরাজিত হোন রেজাউল করিম। তারপর থেকে রেজাউল করিম রাজনীতির মাঠ ছেড়ে দেন। একই সঙ্গে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি খন্দকার আবু জাফরের নিস্ক্রিয়তায় নেতৃত্ব শূণ্যতা সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে সোনারগাঁয়ের নেতাকর্মীদের আগলে রেখে রাজপথে পুরোদস্তর নেতৃত্বে দিতে থাকেন মান্নান। সেই থেকে সোনারগাঁয়ের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের ভরসাস্থল হয়ে ওঠেন তিনি।
নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে সক্রিয় আন্দোলনে থাকা, নেতাকর্মীরা হামলা মামলার শিকার হলে তাদের উদ্ধার ও জামিনের ব্যবস্থা করা। রাজপথে নির্যাতনে কেউ আহত হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, কেউ জেলে গেলে তার পরিবারের খোঁজখবর রাখা, সাহস যোগানো, কারাগারে গিয়ে কারাবন্দি নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখার মত কাজগুলো মান্নান ও তার ব্যক্তিগত লোকজন নিয়মিত করে আসছেন। জেলার সাতটি থানার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রয়েছে তার উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশে। মান্নানের নেতৃত্বে সোনারগাঁও বিএনপিও বেশ শক্তিশালী সংগঠন। মান্নান কারাগারে যাওয়ার পর প্রতিদিন সকাল দুপুর বিকেল সন্ধা রাতে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিলেই প্রমাণ করেছে। নেতাকর্মীদের সেই অভিভাবক ও ভরসাস্থল মান্নান এখন কারাগারে।
নেতাকর্মীরা জানান, ২২ মে সোমবার সোনারগাঁ থানার একটি নাশকতার মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নানসহ ৬জন নেতা-কর্মীর রিমান্ড নামঞ্জুর করেছেন আদালত। প্রয়োজনে তিন কার্যদিবসের মধ্যে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেদিন কারাগার থেকে কোর্টে আনার সময় মান্নানের হাতে পুলিশের হ্যান্ডকাপ পরিহিত ছিলো। ওই সময় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীও আদালতপাড়ায় ছিলেন। সে সময় মান্নান তার হ্যান্ডকাপ উচিয়ে নেতাকর্মীদের সাহস যোগান। কিন্তু তখন মান্নানের চোখে মুখে অশ্রু ও কান্নার আর্তনাদের দৃশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নেতাকর্মীরা জানান, মান্নান দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ্য। বিশেষ করে গত ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠবার্ষিকীতে পুলিশের নির্যাতনে তিনি আহত হোন। তারপর থেকে মান্নান বেশ অসুস্থ্য। এমন অবস্থায় তিনি কারাগারে। তার বেশ কষ্ট হচ্ছে কারাগারে।
সোমবার নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোনালিসা সোনিয়ার আদালতে আসামিদের হাজির করে পুলিশ ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে প্রয়োজনে তিন কার্যদিবসের মধ্যে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। মামলা নং- ৯(১২)২২।
সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের সঙ্গে কারাগারে রয়েছেন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, সোনারগাঁও পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মেম্বার, সোনারগাঁও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন, সোনারগাঁও পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব তানজিল, জামপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শাহ আলম।
এর আগে গত (১৫ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নানসহ ৬জন স্থায়ী জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন।