সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, আজকের এই শেখ হাসিনার সরকার ১৪ বছর যাবত এ দেশকে লুটেপুটে খাচ্ছে। একটা গণতান্ত্রিক দেশে সর্ব প্রথম মৌলিক অধিকার হলো ভোটাধিকার, সেই ভোটের অধিকারও মানুষের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে এই স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার। আজকে দেশের মানুষ ভোট দিতে ভুলে গেছে। এই সরকার দেশের মানুষকে ভোট দিতে ভুলিয়ে দিয়েছে। তাই দেশের মানুষ এখন আর ভোটকেন্দ্রে যেতে চায় না। কেনো যেতে চায়না কারণ এই সরকারের আমলে যেদিন ভোট হওয়ার কথা সেদিন ভোট হয় না। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে ভোট দিতে হয় না। প্রশাসনের লোক পুলিশ দিয়ে আগের দিন রাতেই ব্যালট পেপার নৌকা মার্কায় সিল মারে আগের দিন রাতেই তা ভরে রাখে। পরেরদিন নামে মাত্র ঘোষণা দেয়। সুতরাং এই শেখ হাসিনার সরকার আমলে আর কোন সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব নয়। অবিলম্বে বিএনপি ১০ দফা দাবি মেনে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। আর তা না হলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটানো হবে ইনশাল্লাহ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র আওতাধীন বন্দর উপজেলা বিএনপির অন্তর্গত ধামগড় ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র পৃথক পৃথক দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার (৩ জুন) সকাল ১১টায় ধামগড় ইউনিয়নের ইস্পাহানী সেনের বাড়ি ও বিকেল চারটায় মুছাপুর ইউনিয়নের পিচকামতাল এলাকায় এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এড. সাখাওয়াত বলেন, বিএনপি হলো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নিজ হাতে গড়া দল। আজকে কোটি-কোটি মানুষ এই দলের সমর্থক। এই দল যারা করে তারা দেশপ্রেমিক। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মতন তারাও দেশকে ভালোবাসে। দেশের মানুষকে ভালোবাসে, দেশের সম্পদ লুটেপুটে খায় না। তারা দেশের মানুষের কল্যাণে ও সমাজের কল্যাণে কাজ করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বন্দর উপজেলা ধামগড় ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপিকে একটি সুসংগঠিত সংগঠন হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। সকলকে নিয়েই ধামগড় ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি করতে চাই। আমরা চাই সম্মেলনের মাধ্যমে আজকে যে কমিটি হবে খুব দ্রুত সময়ের মাধ্যমে নয়টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করে আগামী দুদিনের মধ্যে আমাদের কাছে জমা দিবেন। যারা এই কমিটিতে আসবে তাদেরকে অবশ্যই রাজপথের পরীক্ষিত হতে হবে। যারা রাজপথে নেই ওই সকল নামিদামি নেতাদের আমাদের এই কমিটিতে দরকার নাই। যারা আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ময়দানে থাকবে এবং ইতিমধ্যে যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে মামলা মোকদ্দমা খেয়েছেন ওই ধরনের নেতাকর্মীদের পদ- পদবী দিয়ে তারপর অন্যদের দিতে হবে এটাই আমাদের নির্দেশনা। কাউকে বাদ দেওয়া চলবে না, যারা দল করতে চায় প্রত্যেককে মূল্যায়ন করতে হবে। আমরা সবাইকেই মূল্যায়ন করবো কাউকে অবমূল্যায় করা হবে না।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস দুর্ভিক্ষের ইতিহাস আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্রকে হত্যা করার ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস দুর্নীতির ইতিহাস। এদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে হরণ করেছে। এর জন্য আওয়ামী লীগসহ শেখ হাসিনাকে কঠিন মূল্য দিতে হবে। আজকে আওয়ামী লীগের এমপি মন্ত্রীদের বলতে চাই, দুর্নীতি করে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। আপনাদের লুটপাটের প্রতিটি টাকার হিসাব নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশের বাইরে আমরা যাব না। যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে দলের জন্য কাজ করছে তাদেরকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। রাজপথের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে আমরা দলকে সুসংগঠিত করব। আপনাদের সবাইকে নিয়ে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে উৎখাত করা হবে। সে আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির প্রতিটি ইউনিট গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে সেই প্রত্যাশা ব্যাক্ত করছি।
সম্মেলন শেষে জাহিদ খন্দকারকে সভাপতি ও মো. মোহসিনকে সাধারণ সম্পাদক, আলমগীর হোসেনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং মো. হাবিব উল্লাহ আপনকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মো.সালাউদ্দিনকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবির হোসেনকে সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক করে ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ও তাঁরা মিয়াকে সভাপতি ও শাহিন আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক, মাসুদুর রহমানকে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং জসিম উদ্দিনকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আব্দুর রহিমকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা করেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সমন্বয়ক তাঁরা মিয়ার সভাপতিত্বে ও সহ- সমন্বয়ক শাহিন আহমেদ’র সঞ্চালনায় এবং ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সমন্বয়ক জাহিদ খন্দকারের সভাপতিত্বে ও সহ- সমন্বয়ক মো. মহসিন’র সঞ্চালনায় পৃথক পৃথক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ রেজা রিপন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা.মজিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান দুলাল, মাহমুদুর রহমান, বন্দর উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম হিরণ, বন্দর থানা বিএনপি’র আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ পনেছ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ রানা।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বন্দর উপজেলা বিএনপি’র মহিউদ্দিন শিশির, হারুন অর রশিদ লিটন, শাহাদুল্লাহ মুকুল, শাহিন আহমেদ, তারা মিয়া, শাহিন শাহ্ মিঠু, সদস্য সম্রাট হাসান সুজন, বন্দর থানা যুগ্ম আহবায়ক আসাদুজ্জামান বাদল, নাছির উল্লাহ্ টিপু, ইকবাল হোসেন, সোহেল খান বাবু, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চঞ্চল মাহমুদ প্রমুখ।