সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে ১৬ জুন চাষাড়ায় লোমহর্ষক মর্মান্তিক বোমা হামলার ঘটনার বিবরণ দিয়ে নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি একেএম শামীম ওসমান বলেছেন,চাষাড়া আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে বোম ব্রাস্ট করা হলো। আরটিএস ফুটানো হয়েছিল আমাদের উপরে। কেন? কি অপরাধ করেছিলাম আমরা? অপরাধ করেছিলাম, বলেছিলাম গোলাম আযম তুমি অবাঞ্চিত। কারন তোমরা আমাদের ৩০ লাখ মা বোনদের সম্ভ্রম নিয়েছো, ৩০ লাখ মানুষকে শহীদ করেছো। তোমরা আমাদের মা বোনকে চোখের সামনে বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করেছো তাই অবাঞ্চিত করেছি।
বোমা হামলায় আহত হওয়া শামীম ওসমান বলেন, আমাদের ২০ মানুষকে মারা হলো। আমার একটা পা অচল হয়ে গেল। চন্দন শীলের পা উড়ে গেল। রক্তের উপরে শুয়ে ছিলাম। রক্ত কতটা গরম আমি সেটা জানি। আমি জানতাম না বেচেঁ আছি কিনা। আমার যখন জ্ঞান ফিরলো তখন আমি জানতাম না আমার এতগুলো মানুষ মরে গেছে, আমাকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করলো আপনি কি কিছু বলবেন? কানে কিছু শুনছিলাম না। আমি একটা উত্তর দিয়েছিলাম শেখ হাসিনাকে বাঁচান। আমি বলিনি মাগো আমারে বাঁচান। চন্দনও বলেনি আমাকে বাঁচান। আমি সেদিন বলেছিলাম আমাকে নয় শেখ হাসিনাকে বাঁচান। কারন আমার মত শামীম ওসমান মরে গেলে কিছু হবে না। হয়তো আমাকে যারা ভালবাসেন দুএকদিন মরে রাখবেন। খুব একটা ক্ষতি হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা না থাকলে বাংলাদেশটা পিছিয়ে যাবে আরও একশো বছর।
২৭ এপ্রিল শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের উদ্যোগে ৩য় বারের মত ‘বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক’ শিশু কিশোরদের সঙ্গীত, আবৃত্তি, চিত্রাংকন প্রতিযোগীতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শামীম ওসমান।
এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছার স্মৃতিচারণ করে শামীম ওসমান বলেন, কাকে মারলাম আমরা? কাদের মেরে ফেললাম? আমরাইতো মারলাম। বাইরের লোক তো আইসা মারে নাই। পাকিস্তানীও মারেনি, বৃটিশিও মারেনি, আমরাই মেরেছি তাদেরকে। ছিঃ আমার লজ্জা হয়। বিশ^াস করেন ঘৃনা হয় নিজের প্রতি। কাদের মারলাম আমরা? আমরা জাতির পিতাকে মেরে ফেলেছি। মেরে ফেলাতে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। আল্লাহর রহমত ৭৫ এ সবাই মেরে গেছে, তার দুইটা মেয়ে বেঁচে গেছেন।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে শামীম ওসমান বলেন, জাতির জনকের আরেকটা মেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা যিনি আমাদের আপনাদের বাচ্চাদের হাল ধরেছেন। মাত্র ৩১ বছর বয়সে তিনি হাল ধরেছেন। আপনারা মা বোনের জাত মন অনেক বড়। মায়ের জাতের মন অনেক উঁচু। আপনাদের পায়ের তলে জান্নাত, আপনাদের পায়ের তলে স্বর্গ। একবার চিন্তা করেন ৩১ বছর বয়সে বাবা মা ভাই সবকিছু হারিয়ে কেন হাল ধরলেন? কারন বাঙালার মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার গণতন্ত্রের জন্য।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাচ্চারা তোমরা একটা বিষয় খেলা করো। তোমাদের পূর্ব পুরুষরা তাদের মেরে ফেলেছে, তোমরা তাদের ঘৃণা করো।
অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বার্হী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক ও নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খালিদ হায়দার খান কাজল সহ অন্যান্যরা।