প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
জাতীয় পার্টি ও নারায়ণগঞ্জের দুটি আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের নিয়ে দেয়া আওয়ামীলীগের তিন নেতার বক্তব্যের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ২৬ জুন সোমবার রাতে জেলা জাতীয় পার্টির প্রচার সম্পাদক ফজলুল হক মাস্টার প্রেরিত বিবৃতিতে কঠোর জবাব দেয় জাতীয় পার্টি। বিবৃতিতে আওয়ামীলীগের তিন নেতার প্রতি উদ্দেশ্য করে নানা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টি। একই সঙ্গে আওয়ামীলীগের তিন নেতার নানা দিকও তুলে ধরেছে জাতীয় পার্টি।
বিবৃতিতে প্রশ্ন রেখে বলা হয় যে, মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি, জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় কমিটির সদস্য আপনারা কি জানেন জাতীয় পার্টির সমর্থন যদি না দিতো, মহাজোট গঠন না হতো আপনারা কোথায় থাকতেন?
একবার চিন্তা করেন তৎকালীন বিএনপিসহ চার দলীয় জোটের শত বাধা হুমকি থাকা সত্বেও ২০০৮ সালে প্রয়াত পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে গিয়ে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক হয়ে মহাজোট গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন। পরবর্তী সময় নির্বাচনের মাধ্যমে মহাজোট সরকার গঠন করে ও পরে ২০১৪ সালে পল্লীবন্ধু এরশাদ এর জাতীয় পার্টি ২০১৮ সালে মহাজোট পূণরায় সরকার গঠন করে।
আপনারা কেউ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কেউ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, কেউ জাতীয় পরিষদের সদস্য হয়ে টাকা কামিয়ে বড় বড় নেতা হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে একাধিকবার বলছেন পল্লীবন্ধু এরশাদের কারণে আমরা সরকার গঠন করতে পেরেছি এবং আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মাননীয় সড়ক ও পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি জাতীয় পার্টির সন্মেলনে গিয়ে বক্তৃতা করে বলেছে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আমরা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি এখনো ক্ষমতায় আছি। আমাদের প্রশ্ন আপনাদেরকে দলের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদের এমপি প্রয়াত পল্লীবন্ধু এরশাদ এর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে কার্পণ্য করেন না। আপনাদের এত গাত্রদাহ হয় কেন? আমাদের ভাবনার বিষয় এটা নারায়ণগঞ্জ ৫ ও ৩ আসন তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রয়াত পল্লীবন্ধু এরশাদ এর যৌথ সিদ্ধান্তে প্রার্থী দিয়েছে।
আপনাদের এত জ্বালা ধরে কেন? আপনাদের যদি এত খায়েশ থাকে একজন চাঁদপুর চলে যান, আরেকজন মতলব গিয়ে নির্বাচন করেন, আবোল তাবোল কথা না বলে শিষ্টাচারের মধ্যে থাকুন। একজন বলেছেন বর্তমান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের দূর্নীতিবাজ, কি দূর্নীতি করেছে প্রমাণ দিন? বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে যেটুকু সুবিধা ভোগ করেন সরকারের আইন অনুযায়ী ভোগ করেন। এমনকি সরকারি প্লট পর্যন্ত নেন না তিনি বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে সরকারের ভূল ত্রুটি সংশোধন করে সরকারকে সকল ভালো কাজে সহযোগিতা করছে।
দেশ ও জনগণের স্বার্থে সংসদে কথা বলছে এটা কি বিরোধী দলের কাজ নয়? নাকি সংসদে ফাইল ছুড়া ছুড়ি করলে বিগত বিএনপি সরকারের সময় এগুলো করেছে, জাতীয় পার্টি এসব থেকে বেড়িয়ে এসে গঠনমূলকভাবে ভূল ত্রুটি সংশোধন করার জন্য সংসদে কথা বলছে। এতে আপনাদের গা জ্বলে কেন? আপনারা নিজের স্বার্থে অপরের সমালোচনা করেন দলের ও দেশের চিন্তা করেন আপনারা কি করেন আর করবেন আমরা জানি।
গত পরশুদিন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ জাতীয় কমিটির সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু গতকালকে আমাদের নেতা জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মূহম্মদ এরশাদ, বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে যে কটাক্ষ মন্তব্য করেছেন। তার জন্য প্রকাশ্যে দিপু সাহেবকে ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে জাতীয় পার্টির একটা কর্মী বেঁচে থাকলেও তার কঠিন জবাব দিপু সাহেবকে দিবে।
এখানে উল্লেখ করতে চাই আনিসুর রহমান দিপু সাহেব যে দলের রাজনীতি করছেন, সেই দলের সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেই জানতে পারবে। ১৯৯৬ সালে একুশ বৎসর পরে কার সমর্থনে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় এসেছিল, ২০০১ সালে জাতীয় পার্টি সমর্থন দেয়নি বলে কোথায় গিয়েছেও নৌকা প্রতীক? ২০০৮ সালে যদি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি যদি পল্টন ময়দানে মঞ্চে উঠে আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষনা না করতো তাহলে দিপু সাহেবের দল আজকে কোথায় থাকতো? জাতীয় পার্টি যদি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে সহযোগিতা না করতো, তাহলে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীক সমুদ্রের তলদেশে থাকতো।
আর জি এম কাদের সাহেবকে নিয়ে মন্তব্য করার আগে নিজের চেহারাটা আয়নায় একবার দেখুন, দিপু সাহেবের দল আজকে দেশকে দেউলিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। একদলীয় শাসন কায়েম করছে, অর্থ পাচার করছে এর প্রতিবাদ একমাত্র জিএম কাদের করছে বলেই দিপু সাহেবদের চামড়ায় ঠোস পড়েছে।
সাবধান হয়ে যান নচেৎ জাতীয় পার্টির কর্মীরা দিপু সাহেবদের মতো কিছু লোককে পাবনায় চিকিৎসার জন্য পাঠাবে, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বাদল সাহেব ভিক্ষা করা প্রার্থী আপনি কাকে বলছেন? নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের মেজো সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব একেএম. সেলিম ওসমান নাকি নারায়ণগঞ্জ- ৩ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জননেতা লিয়াকত হোসেন খোকাকে বলেছেন আমাদের জানতে ইচ্ছে করে। কারন দুজনেই স্থানীয় লিয়াকত হোসেন খোকা এমপির পিতৃভূমি সোনারগাঁ আর বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব একে এম সেলিম ওসমান তার বড় ভাই চার চার বারের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব একেএম নাসিম ওসমান সাহেবের মৃত্যুর পরে উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আপনি কাকে ভিক্ষা করা প্রার্থী বলছেন?
যে পরিবারের সাথে থেকে আপনি এতবড় নেতা হয়েছেন, বিশাল অর্থ বিত্তবান হয়েছেন, যে পরিবারের আশ্রয় থেকে ঢাকায় ফ্লাট এর মালিক হয়েছেন। এত তাড়াতাড়ি ভূলে গেছেন? কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা দরকার আপনার, বাদল সাহেব নিজের চিন্তা বাদ দিন দল ও দেশের চিন্তা করেন।
বার্তা প্রেরক:
ফজলুল হক মাস্টার,
প্রচার সম্পাদক, নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টি।