সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার আবজাল হত্যাকান্ডের মুলহোতাসহ শীর্ষ দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। ২২ জুলাই শনিবার বিকেলে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সিনিয়র এএসপি নিশাত তাবাসসুম।
তিনি জানান, গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিএসসি, নারায়ণগঞ্জ এর একটি আভিযানিক দল গত ২১ জুলাই শুক্রবার রাত ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড সাকিনস্থ মিতালী মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার চাঞ্চল্যকর “আবজাল” হত্যাকান্ডের মূলহোতা এবং র্শীষ কুখ্যাত সন্ত্রাসী রাসেল ওরফে বিয়াইস্তা রাসেল ও রায়হান ওরফে হিটলার রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব আরো জানায়, ভিকটিম আবজাল প্রধান একজন সিমেন্ট ব্যবসায়ী। ভিকটিম আবজাল প্রধান এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের সাথে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। গত ০৬/০৪/২০২৩ খ্রিস্টাব্দে ভিকটিম আবজাল প্রধান প্রতিদিনের ন্যায় ব্যবসার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে দেওভোগ মাদ্রাসা মার্কেট সংলগ্ন হাসেমবাগ যাওয়ার সময় গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা ও তার অন্যান্য সঙ্গীয় ১৫/১৬ জন এর একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দল ভিকটিম আবজালকে পূর্ব-শত্রুতার জের ধরে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে এবং এলোপাথাড়ি মারধর করতে থাকে। মারামারির এক পর্যায়ে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা ভিকটিম আবজালকে ধারালো অস্ত্রদ্বারা মাথায় স্ব-জোরে আঘাত করে এবং অন্যান্য সঙ্গীয় ১৫/১৬ জন মিলে ভিকটিমকে এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে মারাত্মক আহত ও অঙ্গহানী করে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম আবজালকে উদ্ধার করে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হসপিটাল এ নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ পাশবিক ও নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনাটি বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও মিডিয়ায় প্রকাশিত হলে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-২৪, তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২৩ খ্রিঃ। উক্ত হত্যাকান্ডের পর হতে এজাহারনামীয় আসামীরা কৌশলে আত্মগোপন করে পলাতক থাকে। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ এর একটি চৌকস গোয়েন্দা দল হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত পলাতক আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য গোয়েন্দা অনুসন্ধান শুরু করে এবং রাসেল ওরফে বিয়াইস্তা রাসেল ও রায়হান ওরফে হিটলার রায়হানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা বর্ণিত হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বলে স্বীকার করে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীরা পেশাদার কিলার গ্রুপের সদস্য, তারা টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন কিলিং মিশনে অংশগ্রহন করে। আসামী রাসেল @ বিয়াইস্তা রাসেল (৩০) এর বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট-৭টি মামলা চলমান রয়েছে এবং রায়হান ওরফে হিটলার রায়হান (২৫) এর বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় ২ টি হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে মোট-৫টি মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।
পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামীকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার অত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।