নারায়ণগঞ্জে পুলিশের বন্দুকের সামনে যুবদল নেতার গুলাইল!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

গত ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশ করেছে বিএনপি। ওই সমাবেশে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের নিয়ে যোগদান করেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেই সমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের হামলার ঘটনায় মহাসমাবেশের মাঝখানেই স্থগিত করতে হয় সমাবেশ। এরি মাঝে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ ও আওয়ামীলীগের হামলায় বিএনপির নেতাকর্মীরা আহত ও নিহত হোন। এ ঘটনায় পরদিন ২৯ অক্টোবর সারাদেশে হরতাল পালনের ঘোষণা দেয় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সেই হরতাল সমর্থনে ২৯ অক্টোবর রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর চাষাড়া প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করে মহানগর বিএনপি। হরতালের সমর্থনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের দিকনির্দেশনায় মিছিল বের করতে গেলে পুলিশ নেতাকর্মীদের মিছিলে লাঠিচার্জ করে এবং দুই পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারসেল নিক্ষেপ, রাবার বুলেট ও ছোররা গুলি ছোড়ে। ওই সময় বেশকজন নেতাকর্মী আহত ছাড়াও গুলিবিদ্ধ হোন ৫জন যুবদল নেতা। পুলিশের বন্দুকের গুলির সামনে মুখোমুখী সংঘর্ষে লিপ্ত হোন বিএনপির নেতাকর্মীরা। ওই সময় যুবদলের এক নেতার হাতে গাছের ডাল দিয়ে বানানো গুলাইল দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়তে দেখা যায়। যুবদলের ওই নেতা একাধিকবার পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে গুলাইল দিয়ে ইটের টুকরা ছুড়েন। যদিও তিনি নিজেও পুলিশের গুলিতে আহত হোন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের বন্দুকের সামনে গুলাইল দিয়ে ইটের টুকরা ছুড়েছেন বন্দর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সম্রাট হাসান সুজন। তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সাবেক সদস্য এবং বন্দর উপজেলা যুবদলের সভাপতি প্রার্থী। গুলিবিদ্ধ হয়েও পুলিশের সঙ্গে তিনি গুলাইল দিয়ে হরতাল সমর্থনে বের হওয়া মিছিল থেকে ইটের টুকরো ছুড়েছেন। এমনটা বেশকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে জানা গেছে, রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে নগরীর চাষাড়া, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব, মিশনপাড়া ১নং রেলগেইট, মন্ডলপাড়া, নিতাইগঞ্জসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এ সময় তারা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ মিছিলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এক দফা দাবিতে শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। বিএনপি’র নেতাকর্মী- সমর্থক আহত ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করছি।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ও মিশনপাড়ায় আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উসকানিতে গুলি করেছে। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জুয়েল, মহানগর যুবদলের নেতা ওয়াদুদ সাগর, সুজন ও সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন খান, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, বন্দর উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ লিটন, বিএনপি নেতা শেখ সেলিম আহমেদ, চঞ্চল মাহমুদ, মহিউদ্দিন শিশির, বাবু, জাহিদ খন্দকার, মহাসিন, যুবদল নেতা তরিকুল ইসলাম, সম্রাট হাসান সুজন, অদুদ সাগর, বন্দর উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাইয়ান সাকিবসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।