গাজী সেলিম খোকার পথে বড় বাধা হতে পারে তৃণমুল বিএনপি!

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনের বর্তমান সংসদ সদস্যদের আবারো এমপি হওয়ার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে তৃণমুল বিএনপি। যদি আওয়ামীলীগের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক জোট কিংবা মহাজোট হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে তৃণমুল বিএনপিকে নারায়ণগঞ্জের দুটি আসন ছাড়তেই হবে। যেখানে তৃণমুল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জের একটি আসনে নির্বাচনী মাঠে নেমেই পড়েছেন।

বাকি দুটি আসনে রয়েছে গত নির্বাচনে মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির দুজন এমপি। এই দুটি আসনেই আবারো তাদের এমপি হওয়া নিয়ে বেশ শঙ্কা তৈরি হয়েছে, কারন কেন্দ্রে জাতীয় পার্টি ঘোষণা দিয়েছে এককভাবে সারাদেশে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিবে। যদিও এককভাবে নির্বাচনে ভোটে অংশগ্রহণ করে তাহলে নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু সেটা অনুমেয়।

ঘটনা সুত্রে, সরকারের সঙ্গে তৃণমুল বিএনপির সম্পর্ক খারাপ এমনটা বলা যাবে না। যদিও তৃণমুল বিএনপি এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবুও শঙ্কা রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ-১(রূপগঞ্জ) আসনে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন খোদ তৈমূর আলম খন্দকার নিজেই। এ আসনে তিন মেয়াদে এমপি হয়েছেন গাজী গোলাম দস্তগীর। তিনি পাট ও বস্ত্রমন্ত্রীও। তৈমূর আলম তার দল থেকে এ আসনেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন এবং এখান থেকেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন।

অন্যদিকে বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান আবু হানিফ ঢাকা-১৭, নারায়ণগঞ্জ-২(আড়াইহাজার), নারায়ণগঞ্জ-৩(সোনারগাঁ) আসনে তৃণমুল বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। যদিও রাজনৈতিকবোদ্ধারা ধারণা করছেন তিনি তিনটি আসনে নির্বাচন করবেন না। হয়তো আড়াইহাজার আসনে নির্বাচন করবেন। কিন্তু সোনারগাঁও আসনটি নিয়ে ‍তৃণমুল বিএনপির গভীর কোনো কৌশলগত রাজনীতি রয়েছে। এখানে হয়তো পেছনে কোনো শক্তিশালী প্রার্থী তৃণমুল বিএনপির রয়েছে। জোট হলে এ আসনটি তৃনমুল বিএনপি দাবি করবে সেটা বলা যায়। এ আসনে মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টিতে এমপি আছেন লিয়াকত হোসেন খোকা।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনের বিষয়েও তৈমূর আলম বারবার বলে আসছেন তিনি এ আসনেও বেশ জনপ্রিয়। এ আসনে মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির এমপি আছেন সেলিম ওসমান। যদি জোট হয় এবং গাজীকে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে না সরানো হলে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সিফট হতে পারেন তৈমূর আলমও। যদিও এ আসনে তৃণমুল বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন অ্যাডভোকেট ভাসানী। মোট কথা নির্বাচনের পূর্বে এই তিনটি আসনে যে কোনো ঘটনা অঘটন ঘটতেও পারে বলে অনেকের ধারণা।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি সংসদীয় আসনের বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে এখন আলোচনায় তৃণমুল বিএনপির দুই আইনজীবী প্রার্থী। যারা নারায়ণগঞ্জ জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে তারা তৃণমুল বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। দুটি আসনে তৃণমুল বিএনপি থেকে যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তাদের মধ্যে এই দুই আইনজীবী নেতাই বেশ হেভিওয়েট প্রার্থী। সেই হিসেবে স্থানীয় ভোটাররা মনে করছেন তৃণমুল বিএনপি থেকে তারাই হচ্ছেন চূড়ান্ত প্রার্থী।

তৃণমুল বিএনপির দলীয় সূত্রে, নারায়ণগঞ্জ-৫(সদর-বন্দর) আসনে তৃণমুল বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী ভুঁইয়া। মুলত তৃণমুল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের একনিষ্ঠ বিশ্বস্থ এই ভাসানী। নারায়ণগঞ্জ-৪(ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে তৃণমুল বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন অ্যাডভোকেট আলী হোসাইন। তিনিও অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের একনিষ্ঠ বিশ্বস্থ একজন। হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন যাবত রাজনীতি করে আসছিলেন।

তবে এখানে উল্লেখ্যযে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দীর্ঘদিন এমপি ছিলেন প্রয়াত জাতীয় পার্টির নেতা নাসিম ওসমান। এ আসনে ২০১৪ সালে উপ-নির্বাচনে এমপি হোন সেলিম ওসমান। তারপর ২০১৮ সালেও তিনি এমপি হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে টানা দুই মেয়াদে এমপি হিসেবে রয়েছেন একেএম শামীম ওসমান। ফলে ভিন্ন কিছু না ঘটলে সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের সঙ্গে ভোটের লড়াইয়ে মুখোমুখী হতে যাচ্ছেন অ্যাডভোকেট ভাসানী ও অ্যাডভোকেট আলী হোসাইন।