সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিএনপি-জামায়েত ইসলামীর জোট সরকার আমলে অনেকটা বৈরী পরিস্থিতিতে ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয়। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের আর সম্মেলন কিংবা কমিটিও হয়নি! দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ছাড়িয়ে গেলেও যুবলীগে নতুন কমিটি না হওয়ার কারনে গত ২০টি বছরে অনেক তরুণ নেতৃত্ব হোচট খেয়েছেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা দুএকজন মুল দল আওয়ামীলীগে ঢুকে গেলেও বাকিদের ভাগ্যে জুটেনি পদ পদবী।
২০১১ সালে গঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের আলোচিত কমিটির একঝাঁক তরুণ নেতৃত্বের অপমৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে শুধুমাত্র যুবলীগের কমিটি না হওয়ার কারনে। একইভাবে মহানগর যুবলীগের কমিটির ক্ষেত্রেও। ওই কমিটির আগের জেলা ছাত্রলীগের নেতারাও ঠাই পাননি যুবলীগে। এরি মাঝে মহানগর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠিত হওয়ার কারনে পূর্বের কমিটির নেতারাও যুবলীগের পাইপ লাইনে দাঁড়িয়ে গেছেন। ফলে ছাত্রলীগের তিন চার টার্মের কমিটি গঠন ও বিলুপ্ত হলেও যুবলীগের নতুন কমিটি হয়নি জেলা ও মহানগরীতে।
জেলা যুবলীগের সভাপতি আবদুল কাদির ইতিমধ্যে এক মেয়াদে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন শেষে সাবেক হয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি জেলা যুবলীগের সভাপতি পদে বহাল রয়েছেন। জেলা যুবলীগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল জেলা আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি পদে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। শহর যুবলীগের কমিটিই চলছে মহানগর যুবলীগ নামে। শাহাদাত হোসেন সাজনু সভাপতি ও আলী আহম্মদ রেজা উজ্জল সাধারণ সম্পাদক পদে। এই কমিটিরও মেয়াদ প্রায় ২০ বছরের কাছাকাছি সময়।
একই দশা হয়েছে জেলা কমিটির দেয়া বিভিন্ন থানা/উপজেলা যুবলীগের কমিটিরও। দুএকটি নতুন করে হলেও অনেকগুলোর অবস্থা তাই। ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী ইতিমধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে সাবেক হয়ে এখন তিনি থানা যুবলীগের সভাপতি! বন্দর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ পলু মহানগর আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন কয়েক মেয়াদে। প্রায় সবগুলো থানা উপজেলা যুবলীগের কমিটির নেতারাই এখন মুলদলের রাজনীতিতে সক্রিয়। অথচ ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা নেতাদের ঠাই হচ্ছেনা যুবলীগে কিংবা মুলদলেও। এভাবে নেতৃত্ব সৃষ্টিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে যুবলীগের সেশন জট।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানির নেতৃত্বে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছেন তাদের মধ্যে দুএকজন বিভিন্ন থানা/উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে পদে আসতে পারলেও বাকিরা রয়েছেন যুবলীগে পদায়নের আশায়। সানি ছাড়াও যাদের মধ্যে যুবলীগে আসার পাইপ লাইনে রয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রহমান নান্নু, মিনহাজুল ইসলাম রিয়াদ, শেখ রায়হান, জিয়াউল ইসলাম জিকু, নূরে আলম রঞ্জু, জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রলীগের শ্লোগান মাস্টার খ্যাত মিজানুর রহমান সজীব, ছাত্রলীগ নেতা সানি আহমেদ পরশ, মনির হোসেনসহ আরো বেশকজন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা যারা মুলত যুবলীগের কমিটি হলেই সেখানে তাদের ঠাই হতো। যুবলীগের কমিট ঠিক সময়ে সময়ে গঠিত হলে এরা যুবলীগের রাজনীতির মাধ্যমে হয়তো কেউ কেউ কোনো কোনো থানা/উপজেলা কিংবা পৌরসভা/ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে থাকতেন।
জেলা ছাত্রলীগের উপরোক্ত কমিটির পূর্বের কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিএম আরাফাত মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থাকলেও সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু এখনো ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিই। এদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু সহ এই কমিটির নেতারাও। এভাবে যুবলীগের সেশণ জটের কারনে অনেক উদীয়মান তরুণ নেতৃত্বের অপমৃত্যু ঘটছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।