সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
আগামী ৮ মে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীতার বিষয়ে ৭জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম আলোচনায় ছিলেন, যাদের মধ্যে ৩ জন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ রশিদকে সমর্থন জানিয়েছেন। এবার স্থানীয় এমপিকে ব্যবহার করে আরো এক প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানোর অজুহাতে রীতিমত হুমকি ধমকি দেয়ানো হয়েছে। তবে স্থানীয় এমপির হুমকি ধমকিতে উপেক্ষা করে এখনো নির্বাচনের বিষয়ে সম্বাব্য ৪জন প্রার্থী আলোচনায় রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, নির্বাচনের শুরুতেই চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে জোরালো আলোচনায় চলে আসেন এই পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। গণদাবির মুখে তাকে নির্বাচনী মাঠে নামতে হয়। উপজেলাবাসী রীতিমত মুকুলকে চাপ প্রযোগ করে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতে আতাউর রহমান মুকুল পুরোদমে নির্বাচনী মাঠে নেমে গেলে তিনি যেখানেই নির্বাচনী গণসংযোগ করতে যাচ্ছেন সেখানেই গণজোয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ তফসিল ও ভোটের আনুষ্ঠিকতা শুরুর আগেই বন্দরের মাঠে তিনি আলোড়ন সৃষ্টি করেন।
মুকুল ছাড়াও নির্বাচনী মাঠে আলোচনায় ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ রশিদ, সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দীন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এমএ সালাম, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান। স্থানীয় এমপি একেএম সেলিম ওসমানের আহ্বানে কাজিম উদ্দীন, সালাম ও দেলোয়ার প্রধান নির্বাচনী আলোচনা থেকে সরে গিয়ে রশিদকে সমর্থনের ঘোষণা দেন।
এদিকে নির্বাচনী মাঠে পুরোদমে প্রচারণায় আছেন আতাউর রহমান মুকুল ও মাকসুদ হোসেন। সুফিয়ান ও এম এ রশিদ আলোচনায় থাকলেও ভোটের মাঠে প্রচারণায় নেই। মাঝে সুফিয়ানকে সরব দেখা গেলেও তিনি তেমন একটা সরব নন। তবে প্রতিটি এলাকায় দৌড়াচ্ছেন আতাউর রহমান মুকুল। রীতিমত পুরো মাঠ ঘুছিয়ে নিয়েছেন আতাউর রহমান মুকুল। ওদিকে তার পিছু ছুটছেন মাকসুদ হোসেনও।
এমন পরিস্থিতিতে গেলো দুদিন পূর্বে বন্দরের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে রশিদের পক্ষে সমর্থনের কথা জানান এমপি সেলিম ওসমান। ওই সময় ৩জন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় তাদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং একই সময়ে তিনি মাকসুদ হোসেনকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বানের সঙ্গে হুমকি ধমকিও দেন। আতাউর রহমান মুকুলকে নির্বাচন থেকে সরে আসার আহ্বান জানালেও মুকুলের প্রসংশাও করেছেন তিনি। মুলত সুফিয়ানকে ঠেকাতে হলে মুকুলকে মাঠে দরকার। রশিদকে দিয়ে সুফিয়ানকে ঠেকানো যাবে না। ফলে আতাউর রহমান মুকুল ভোটের মাঠে থাকছেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
ওই দিন সেলিম ওসমান বলেছেন, ‘মুকুল আমার ছোট ভাই। মানুষ তাকে ভালোবাসে এটা সত্য। কিন্তু সবকিছুর একটা সময় আছে।’ গত নির্বাচনে এমএ রশিদ বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে এবার সরকারি দল চায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা হোক। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, বিনা ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান এমএ রশিদের ভোটে এবারো ভরসা নাই। কারন তিনি সুষ্ঠ ভোটে জয়ী হতে পারবেন না। এখানে সুষ্ঠু ভোট হলে বিপুল ভোটে মুকুল বিজয়ী হবেন। আর সে কারনেই এমএ রশিদ আবারো বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য এমপির কাধে ভর করেছেন।