সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির রাজনীতিতে এক সময় যেসব ছাত্র নেতারা রাজপথ কাপিয়েছেন সেইসব ছাত্র নেতাদের হাতে নেই বিএনপির রাজনীতি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ওঠে আসা কিংবা ভাসমান লোকদের হাতে ওঠেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির রাজনীতি। যেখানে ছাত্রদলের নেতৃত্ব দেয়া নেতাদের অধিকাংশরা রয়েছেন নেতৃত্বের বাহিরে। দুএকজন বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদে থাকলেও নেতৃত্ব পর্যায়ে নেই। সাবেক অনেক ছাত্রদল নেতারা নেতৃত্বে আসার চেষ্টা করলেও তাদেরকে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না, উল্টো বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে। তুখোর অনেক সাবেক ছাত্র নেতারা দলের নানা সাংগঠনিক কর্মকান্ডের প্রতি বিরাগভাজন হয়ে দলের সক্রিয় রাজনীতির বাহিরে চলে গেছেন। তবে রাজনৈতিক বোদ্ধারা মনে করছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও বিএনপিতে সাবেক ছাত্রদল নেতাদের নেতৃত্বে আনা প্রয়োজন। বিএনপির বর্তমান ব্যর্থ নেতৃত্ব বাদ দিয়ে রাজপথ কাঁপানো পরীক্ষিত নেতাদের হাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃত্ব প্য়োজন।
নেতাকর্মীরা বলছেন, কাজী ইফতেখার কায়েস রুমেল এক সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও কয়েক বছর বিএনপিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি এখন পুরোদমে ব্যবসায়ী। মোশারফ হোসেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জাহিদ হাসান রোজেল জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। জাহিদ হাসান রোজেলকে ফতুল্লা থানা বিএনপির নেতৃত্ব দেয়া হলেও নিজ দলের বিরোধী বলয়ের কারনে তার হাত থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নেয়া হয়। মোশারফ হোসেন কেন্দ্রীয় যুবদলের রাজনীতি থাকলেও তাকে নারায়ণগঞ্জে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। অথচ তার কর্মী গোলাম ফারুক খোকন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
মাজহারুল ইসলাম জোসেফ ছিলেন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি। তিনি মুলদল তো দুরের কথা মহানগর যুবদলের নেতৃত্বে আসার জন্য রীতমত লড়াই করে যাচ্ছেন। জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীবের নেতৃত্বে আসার সুযোগ তৈরি হলেও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে আসতে পারেননি, অথচ তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। একই দশা সরকার আলম ও জয়নাল আবেদীনের মত সাবেক ছাত্রদল নেতাদেরও। তাদেরকে যেনো বিএনপি বাদ দিয়েই রাজনীতি করতে চায়। ছাত্রদলের সাবেক আরেক নেতৃত্ব আনোয়ার হোসেন আনুকে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে আসতে লেগে গেছে বহু বছর। এ পদে থাকলেও তার কর্তৃত্ব রাখা হয়নি। মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান রোমেন আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও রাজনীতিতে বেশ সক্রিয় ছিলেন পুরোদমে। কিন্তু যোগ্য এই নেতৃত্বকে জায়গা করে দেয়নি বিএনপি। তবে রাজনীতির ভেতরেই আছেন সরব তিনি।
মহানগর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আবুল কাউসার আশা, ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আক্তার খন্দকার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন সিদ্দিকী আগুন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার সাদাত সাযেম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক দিদার খন্দকার ও সরকারি তোলারাম কলেজ সংসদের সাবেক জিএস শাহআলম ভুঁইয়ার মত সাবেক ছাত্রদল নেতাদের নেতৃত্ব নাই বিএনপি কিংবা এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোতে। আশাকে মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক করা হলেও বলয়ভিত্তিক রাজনীততে ছিটকে গেছেন তিনি।
আক্তার খন্দকার আছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটিতে নামকাওয়াস্তে। আল আমিন সিদ্দিকীকে এখনো বক্তাবলী ইউনিয়নের নেতৃত্বেই রাখা হয়েছে। দেলোয়ার হোসেন খোকন পড়েছেন বলয়ভিত্তিক মাইনাসের রাজনীতিতে। একই দশা জাকির হোসেনেরও। সায়েম ও মাহাবুবকেও রূপগঞ্জে সুযোগ দিচ্ছেনা বিএনপি। দিদার খন্দকারের ঠাই হয়েছে ওয়ার্ড বিএনপির বিদ্রোহী কমিটির নেতৃত্বে। জিএস শাহআলম জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে আসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ।