সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে রাজপথে কঠোর ভুমিকা রেখেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা। ২০০৩ সালে রাজনীতির কঠিন পরিস্থিতিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হোন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির। তিনি যেমন একজন পরিচ্ছন্ন ও স্বচ্ছ রাজনীতিক, ঠিক তেমনি তার মতই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পরিচ্ছন্ন নেতাদের মাধ্যমে উপজেলা/থানা যুবলীগের কমিটিগুলো গঠন করা হয়। ওই সময় বর্তমান মহানগরীরতে শহর যুবলীগের কমিটিও গঠন করে জেলা যুবলীগ।
নারায়ণগঞ্জে যুবলীগের কমিটি এখনো বহাল থাকলেও জেলায় বেশকজন যুবলীগ নেতার প্রতি আওয়ামীলীগের অবজ্ঞা পরিলক্ষিত হয়। অথচ ১৫ বছর পেরিয়ে গেছে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায়। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সারাদেশে যুবলীগের নামে বিতর্ক সৃষ্টি হলেও নারায়ণগঞ্জে যুবলীগের দুএকজন বাদে অধিকাংশ যুবলীগ নেতারা স্বচ্ছতার সহিত রাজনীতি করেছেন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি সন্ত্রাসী ঝুটসন্ত্রাসী দখলবাজির মত অভিযোগ ওঠেনি।
নেতাকর্মীরা বলছেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির একজন স্বচ্ছ রাজনীতিক। তিনি যদিও মাঝখানে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এসেছিলেন। জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব চেয়েও তিনি পাননি। অথচ যে কমিটির তিনি সভাপতি, সেই কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠ হয়েছেন। কিন্তু আবদুল কাদির রয়ে গেছেন অবহেলিত। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেই চলে আসছেন আব্দুল কাদির।
একই দশা বন্দর উপজেলা যুবলীগের। এখানে যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিব আল মুজাহিদ পলু ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাতেম খন্দকার। এই দুই নেতা বিএনপি জামাত জোট সরকার আমলে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ভুমিকা পালন করলেও নিজ দল ক্ষমতায় পরেও দলের কোনো স্বাদ নিতে পারেননি। দলের কর্মকান্ডে সক্রিয় থাকা ছাড়া তারা বন্দরে কোনো ধরণের বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়াননি। পলু নিজের আইন পেশা পরিচালনা করেই চলে আসছেন। স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন এই যুবলীগের দুই নেতা নিজ দলের অবজ্ঞা পেয়েছেন শুধু। একই দশা পরিচ্ছন্ন সাংগঠনিক সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম জুয়েলেরও।
তৎকালীন শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আহম্মদ রেজা উজ্জল। তিনিও স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক। তার বোন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হলেও তাকে কোনো ধরণের টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত পাওযা যায়নি গত ১৫ বছরেও। এখনো তাদের কমিটি বহাল থাকলেও স্বচ্ছতার সহিত রাজনীতি করে আসছেন উজ্জল।
সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি গাজী মুজিবুর রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহআলম রুপম। তারাও স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক। ২০১১ সালে সোনারগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে দলের সমর্থন নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করেছিলেন গাজী মুজিবুর রহমান। ওই নির্বাচনে তিনি জয়ের কাছাকাছি গিয়েও আওয়ামীলীগের একটি অংশের ষড়যন্ত্রের কারনে হেরে যান। তারপর থেকে তাকে আওয়ামীলীগে অবজ্ঞা দেখে আসছে কর্মীরা। উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহআলম রুপম। বর্তমানে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনকেই উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হলেও শাহআলম রুপমের ঠাই হয়নি কমিটিতে। গাজী মুজিবুর রহমান আছেন অনেকের পেছনে সদস্য পদে মাত্র।
রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন। আওয়ামীলীগ সরকার ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও তিনি যেনো দলের ক্ষমতাতে নেই। নিজের পদটুকু টিকিয়ে রাখা ছাড়াও শাহিনের ভাগ্যে জুটেনি কিছুই। এমন অবস্থাই চলছে যুবলীগের স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন নেতাদের প্রতি। আওয়ামীলীগই যেনো ত্যাগী ও পরিচ্ছন্ন নেতাদের মুল্যায়ণ করতে পারছেনা।