চোরাবালি
— কবি মহুয়া বাবর
দিনের আলো বালু পাহাড়ে গড়াগড়ি খায় যখন
সূর্য রশ্মির সোনালী আভায় বালুকণা কেমন
উজ্জ্বল আর চকচক করে তখন
মনে হয় যেন কোনো মরুর উদ্যান!
মনে পড়ে এই মরু পথেই উটের পিঠে চড়ে যুদ্ধে গেছে সহস্রাধিক দুর্দান্ত সৈনিক, পায়ে হেঁটে গেছে কতো কাফেলার দল
কিংবা প্রিয় নজরুলের অসংখ্য গানের অন্যতম
যা শুনে আজো আমরা মশগুল —
আয় মরুপারের হাওয়া, নিয়ে যা রে মদিনায়
যতদূর চোখ যায় যেনো প্রাচীন কোনো রূপসাগর
যেখানে মনি মুক্তা হীরা পান্না রত্নের অজস্র ভাণ্ডার
একটু স্পর্শ করলেই সব ঐশ্বর্য উছলে পড়বে হাতের মুঠোয়
এ যেনো এক অলৈকিক বাগান!
অথচ এই প্রান্তরে হারিয়ে গেছে কতো স্বপ্ন, কতো পথহারা পথিকের জীবন
হয়তো তার জন্য কেউ অপেক্ষায় ছিলো একদিন
সে কী তার স্বপ্নের স্মৃতি বয়ে বেড়াবে চিরদিন?
এই বালুকণা দেখার মতোই কখনো কখনো
আমরা স্বপ্ন দেখতে গিয়ে ভুল করে ফেলি
কেউ সারাজীবন এই ঘোরের মধ্যেই থেকে যায়
কেউ বা মরীচিকা জেনেও নিরাশার তরী বেয়ে যায়
তাই কারো কারো আর গন্তব্যে ফেরা হয় না
দিনের আলোয় দেখা স্বপ্নগুলো
রাতের চোরাবালিতে ঝরে গেলে আর ফেরা হয় না
অনিশ্চিত জেনেও বালুচরেই বেঁধে রাখে নিজের জীবন।