সোনারগাঁ থানার মামলায় আসামীদের নামের তালিকা দিচ্ছে রেজাউল করিম: মান্নান

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানা পুলিশের কাছে বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম তালিকা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান। আশিক ও শফিক নিহতের ঘটনায় আবু হানিফ ও কুলসুম নামে বাদী হয়ে রেজাউল করিমের দেয়া তালিকা পৃথক দুটি হত্যা মামলার এজাহারে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। এ ছাড়াও দীর্ঘ ১৬ বছর পর হটাত করে সরব হওয়ার কারনে রেজাউল করিমের বিষয়ে কঠোর সমালোচনাও করেছেন মান্নান। নেতাকর্মীদের কাছে উনাকে জবাবদিহি করতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহআলম মুকুল রাজনীতিতে হটাত সরব হওয়ার বিষয়েও কঠোর সমালোচনা করেছেন মান্নান।

২৩ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে সোনারগাঁও উপজেরার সমান্দি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রেগামুক্তি কামনায় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনয় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেছেন একাধিকবার কারানির্যাতিত বিএনপি নেতা মান্নান।

আজহারুল ইসলাম মান্নান আরো বলেছেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করবো না। তবে দল করি দলকে ভালোবাসি, জনগণের সেবা করার জন্য। কিন্তু অনেকে দল করে ব্যবসা করার জন্য। আমরা দল ব্যবসার জন্য করি না। অতীতেও করি নাই, এখনো করিনাই। আমার বয়স ৬৪ চলতেছে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমল থেকে দল করি। আজকে সোনারগাঁয়ে অনেকে আছে দলের বদনাম করার জন্য, দলকে উল্টাপাল্টা করার জন্য, নতুন নতুন অতিথি পাখি মাঠে নেমেছে। আমার নেতা তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশ কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান, হিন্দুদের বাড়িঘর যেনো কোনো ক্ষতি না হয়। আমরা প্রতিটি এলাকায় পাহাড়া দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা থানা, উপজেলা পরিষদ, এসিল্যান্ড অফিস, বারদী লোকনাথ আশ্রম, হাসপাতাল সহ যেখানেই হিন্দুসম্প্রদায়ের বাড়িঘর ছিল সেখানে দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে পাহাড়ার ব্যবস্থা করেছি। যারা অতিথি পাখি নতুন নতুন আসছে তাদের কিন্তু কোনো খবর ছিল না। তারা মনে আমি সুন্দর, আমার চেহারা বড়, লম্বা, আমি আগে লুটপাট কইরা এই দেশ খাইয়া গেছি, এখনো সেই চিন্তা। উনার সাথে যারা রাজনীতি করতে চায় আমরা কিন্তু সবাইকে কমিটিতে আনতে পারবো?আজকে আমি সভাপতি আছি, কালকে নাও থাকতে পারি, হয়তো অন্য কেউ হবে, কারন এই দল তো আমার বাপের না। আগে জাফর ভাই ছিলেন, এখন আমি হইছি, সামনে আরেকজন হবে, আমরা কিন্তু সবাইকে খুশি করতে পারবো না। যারা দল করতে চায়, তারা কি চায় তারা আমাদের সাথে বসুক, তারা যদি দল করে তাহলে দলের মত দল করতে হবে। আর যদি দল করে, দল না কইরা এইটা সেইটা করতে চায় তাদের পিঠের চামড়া থাকবে না, আমার বাড়ি কিন্তু চরে।

তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছসাবেক দলের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল সম্পর্কে বলেন, বকুল কইরা একটা ছেলে আছে সোনারগাঁও মহিলা কলেজে চাকুরী করে। ১৫/১৬ বছর বিএনপি যারা করতো, প্রতিটি লোকে মামলা খাইতো, কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। সে ফেসবুকে ছাড়ে বড় নেতা সোনারগাঁয়ের, গণমানুষের নেতা ফেসবুকে ছাড়ে। এমন কোনো নেতাকর্মী আছে যে, যাদের বিরুদ্ধে ২০টা, ২৫টা মামলা নাই? তাদের কোনো মামলা নাই। সে দিনে করে একটা, রাতে করে আরেকটা। রাতে গিয়া খোকার লগে বইয়া থাকতো, রাত বইরা খোকার লগে বিএনপি দমানোর পরামর্শ করতো। আরেকটা তার আত্মীয় আছে, রাজাকারের পোলা, উদ্ধবগঞ্জের বটতলার তমিজউদ্দীননের পোলা, সেই রাজাকারের পোলাার লগে রাত বইরা বসে থাকতো। সোনারগাঁয়ে কোনোদিন রাজনীতি করেনি। এহন সে সোনারগাঁয়ের নাকি গণমানুষের নেতা? যাইহোক গণমানুষের নেতা হোক। আমরা চাই দলের কাজ করুক।

তিনি জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহআলম মুকুল সম্পর্কে বলেন, আরেকটা হইলো চৌরাস্তা বাড়ি, তার নাম মুকুল। সে নামকাওয়াস্তে বিএনপি করে, তার আপন চার ভাই আওয়ামীলীগ করে। তার ভাই জাহাঙ্গীর সোনারগাঁও থানায় বিএনপি নোকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার লিস্ট দিতো। অথচ মুকুল বিএনপির আমলে সোনারগাঁয়ের ওসি থেকেও চাঁদা খাইতো। আজকে সেতো বিএনপি করেইনি, তার ভাইয়েরা আওয়ামীলীগ করে। আমার লগে যে কেউ পাশের চেয়ারে বসতে পারবো যারা ১৬ বছর দলটা করছে, মুকুল তো দল করেনি, রেজাউল করিমের লগে বসতে পারবো। কারন রেজাউল করিম নিজেই কাজ করেনি। নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ থাকবো যারা দলের সাথে বেঈমানী করেছে, যারা দলের কাজ করেনি, তাদের থেকে সবাই বিরত থাকবেন।

রেজাউল করিম সম্পর্কে মান্নান আরো বলেন, আমি এতদিন যতটুকু জেনেছি উনি নাকি ঘাট থেকেই নামতে পারতো না, ধরে নামাতে হতো, এখন নাকি জোয়ান হইয়া গেছে। এটা আশরাফ মোল্লা ভালো কইতে পারবো। উনার কত কত মিল ফ্যাক্টরী, বেতন চাড়া মাস্টার ছিল, তিনি অধ্যাপক না। উনাকে জিঙ্গেস কইরেন উনি কোন কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। উনাকে যদি বেগম খালেদা জিয়া নমিনেশন দেয় আমরা উনার পক্ষেই কাজ করবো, কিন্তু জনগণের সাথে, নেতাকর্মীদের সাথে জবাবদিহি করতে হবে, এই ১৬ বছর খবর নেন নাই, কোথায় ছিলেন আপনি?

এতে উপস্থিত ছিলেন- সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী নজরুল ইসরাম টিটু, বিএনপি নেতা শাফির উদ্দীন মজনু, সোনারগাঁও পৌরসভা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া সহ অন্যান্য নেতাকর্মরা।