নারায়ণগঞ্জের সেই মিজু ও মামুনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা

সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:

নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ফতুল্লা মডেল থানায় লুৎফা বেগম নামের এক নারী বাদী হয়ে আজিজুল হক শুভ ও তার সহযোগি মিজানুর রহমান মিজু সহ ৪/৫ জনকে আসামি করে মারামারির অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

এ মামলার অভিযোগে দাবি করা হয়, নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া লূৎফা টাওয়ারের মালিক লূৎফা বেগমের সাথে জমি জমা নিয়ে বিরোধ চলছে মিজানুর রহমান মিজু, আল মামুন মাকসুদ, উত্তর চাষাড়ার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আজিজুল হক শুভর। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার বিচার শালিস হয়। এতে লূৎফা বেগম জিতে যায়। কিন্তু ঐ শুভ মাকসুদ গংরা তা মানতে পারেনা।

গত ৩০ এপ্রিল দুপুর ১টায় শুভ ও তার সহযোগিরা এসে লূৎফা বেগম ও তার লোকজনদের মারপিট করে। এই মারামারির পরে লূৎফা বেগম চিকিৎসাধীনে থাকে। পরে মৃত আব্দুর রউফের স্ত্রী লূৎফা বেগম সুস্থ্য হয়ে গত ৮ মে বুধবার ফতুল্লা থানায় এসে মামলা করেন শুভ মাকসুদ মিজুসহ ৪/৫জনকে আসামি করে।

অন্যদিকে ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের হাতে শহরের চিহ্নিত দুই চাঁদাবাজ মিজানুর রহমান মিজু ও মামুনকে গ্রেপ্তার হয়েছে। শহরের চাষাঢ়ায় অবস্থিত লুৎফা টাওয়ারের মালিক লুৎফর রহমানের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলায় এই দুই সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লুৎফা টাওয়ারের মালিক ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের দায়েরকৃত মামলায় মিজানু রহমান মিজু ও মামুনকে গ্রেপ্তার করে গত ৫ মে রবিবার সকালে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠায় সদর মডেল থানা পুলিশ। সকালে নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আতিক বিন কাদির এর আদালত আসামীদের কারগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে আগামী ৯ মে রিমান্ড শুনানীর দিন ধার্য্য করেন। এই মামলায় আরও দুই আসামী আজিজুল হক শুভ ও মানিক পলাতক রয়েছেন।

এর আগে মামলায় ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমি একজন ব্যবসায়ী। উল্লেখিত আসামিদের সাথে আমার পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের সদর থানাধীন র‌্যালীবাগানে আমার ৫৬ শতাংশ জমি এবং ফতুল্লা থানাধীন তক্কার মাঠে ১৫২ শতাংশ জমি দুটি জোরপূর্বক দখল করার পায়তারা করছে তারা।

এ ছাড়াও লুৎফর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা সদর থানাধীন বিবি রোডের লুৎফা টাওয়ারের গলির পিছনে আমার ব্যবসায়িক অফিসে এসে প্রায়ই আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে হুমকি প্রদান করতো। আমি আসামিদের চাঁদা না দেওয়ায় আমার উক্ত জমি দুটিতে গিয়ে আমার গোডাউনের ভাড়াটিয়াদের এই বলে হুমকি ধমকি দেয়ে যে, এখন থেকে গোডাউনের ভাড়া তাদের দিতে হবে এবং কোন ভাড়াটিয়া যদি আমাকে ভাড়া প্রদান করে তাহলে আসামিরা আমার ভাড়াটিয়াদের প্রাণে মেরে ফেলবে ও বিভিন্ন ক্ষতি করবে।

অভিযোগ করেন-আমার ভাড়াটিয়াগণ আমাকে বিষয়টি জানালে আমি বিবাদীগণকে এহেন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করি। কিন্তু বিবাদীগণ আমার অনুরোধ না শুনে প্রায় সময়ই আমার জমি দুটির গোডাউনের ভাড়াটিয়াদের গিয়ে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে।

তিনি মামলায় আরও উল্লেখ করেন, হুমকি ধমকির এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন বিবি রোর্ডের লুৎফা টাওয়ারের গলির পিছনে আমার ব্যবসায়িক অফিসে এসে আমাকে না পেয়ে আমার ম্যানেজার মো: রমজান আলীকে মারপিট করে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ম্যানেজার রমজান আলী বাদী হয়ে বিবাদীগণের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় গত ৬ফেব্রুয়ারী মামলা দায়ের করেন। বিবাদীগণ এতেও ক্ষান্ত না হয়ে তাদের দাবীকৃত চাঁদার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করতে থাকে।

তিনি বলেন, এরই ধারাবহিকতায় গত ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিবাদীগণ বেআইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন বিবি রোডের আমার ব্যবসায়িক অফিসের ভিতরে অনুপ্রবেশ করে আমার নিকট বিবাদীদের পূর্বের দাবীকৃত ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না পেলে আমাকে প্রাণে মেরে হলেও আমার জমি দুটি দখল করবে মর্মে হুমকি প্রদান করে। তখন বিবাদীদের আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে বিবাদীগণ চাপাতি দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করতে গেলে আমার বন্ধু সাইদ বিবাদীর আঘাত প্রতিহত করে আমাকে রক্ষা করেন। আমাদের চিৎকার চেঁচামেতিতে আশেপাশের স্থনীয় লোকজন এগিয়ে এলে উল্লেখিত বিবাদীগণ আমাকে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে এই বলে হুমকি প্রদান করে ‘তুই যদি চাঁদার টাকা না দিস, তাহলে তোর জীবন তো নিবোই, সাথে তোর পুরো পরিবারের জীবন নেবো’ বলে চলে যায়।