পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বিজয়

ডেস্ক রিপোর্ট, সান নারায়ণগঞ্জ

পাকিস্তানকে হারাতে এর আগে বাংলাদেশ চেষ্টা করেছে ১৩ বার। সাফল্যের দেখা একবারও পায়নি। এবার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে খুব যে বেশি কিছু বাংলাদেশ আশা করছিল তাও না। তবে তবুও দলের মধ্যে বিশ্বাস ছিল। আর সেই বিশ্বাসেই ফল এলো। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে টেস্টে হারালো বাংলাদেশ দল। তাও আবার ১০ উইকেটের ব্যবধানে।

২৫ আগস্ট রবিবার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান তাদের প্রথম ইনিংসে ৪৪৮ রান সংগ্রহ করে, তবে বাংলাদেশ মুশফিকের রহিমের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেই স্কোর পেরিয়ে ৫৬৫ রান তোলে। এতে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ১১৭ রানের লিড নেয়, যা তাদের শক্ত অবস্থানে নিয়ে যায়। পরে বাংলাদেশের বোলার বিশেষ করে সাকিব-মিরাজের ঘূর্ণিতে দিশাহারা হয়ে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।

ফলে বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় মাত্র ৩০ রানের। যা দুই ওপেনিং ব্যাটার সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসানের পার করতে সময় নেন ৬ ওভার তিন বল। এই জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।

এরআগে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে সাকিব-মিরাজের বোলিংয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। পঞ্চম দিনের শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে খেলেছে বাংলাদেশ। সকাল শুরু হয় বাংলাদেশের তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ দ্বিতীয় ওভারেই শান মাসুদকে আউট করে। যদিও প্রথমে আম্পায়ার আউট দেননি, তবে রিভিউ নিয়ে আউটের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

এরপর শরীফুল ইসলামের বলে বাবর আজমের কঠিন ক্যাচ ফেলেন লিটন দাস, যা দিয়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ব্যাটিং অস্ত্রকে আরও একবার জীবনদান করা হয়।

তবে বাবরের সেই জীবন বেশিক্ষণ টিকেনি। নাহিদ রানার বলে বোল্ড হয়ে তিনি ২২ রানে আউট হন। এতে প্রথম ইনিংসে ‘ডাক’ মারার পর দ্বিতীয় ইনিংসে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেননি বাবর।

তার বিদায় ঘটার পরের ওভারেই সাকিব আল হাসানের বলে সৌদ শাকিল স্টাম্পড হয়ে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।

তখন পাকিস্তান ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারায়। তবে এরপর মনে হচ্ছিল রিজওয়ান ও আবদুল্লাহ শফিক ম্যাচে পাকিস্তানকে ফেরত আনবে। দুই ব্যাটারের ৩৭ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব। তার বলে ৩৭ রানে আউট হয়ে ফেরেন শফিক।

পরের ওভারেই মিরাজের বলে ডাক মারেন সালমান আঘা। তখনও ক্রিজে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শাহিন আফ্রিদি। এরপর লাঞ্চ ব্রেকের পরই আঘাত হানেন মিরাজ। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন আফ্রিদিকে। পরে আবার আঘাত হানেন সাকিব। ফাঁদে ফেলেন নাসিমকে।

তবে এরপর বাংলাদেশকে অনেকক্ষণ ভোগান শেহজাদ ও রিজওয়ান জুটি। কিছুতেই যেন তাদের আউট করতে পারছিল না বাংলাদেশের বোলাররা। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রিজওয়ান। তাকে বোল্ড করে বাংলাদেশের পথের কাঁটা সরিয়ে দিয়েছেন মিরাজ। ৫১ রান করে বোল্ড হয়েছেন রিজওয়ান। এরপর মিরাজ ফেরান শেষ উইকেটকেও। ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম তার অনবদ্য ১৯১ রানের জন্য।