সান নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় গার্মেন্টসের ঝুট দখলে নিতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে উভয় গ্রুপের ৫/৬ জন আহত হয়েছে। তবে এক গ্রুপের দুইজন গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়েছে। ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে ফতুল্লার শিল্পাঞ্চল বিসিক ২নং গলিতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর বিসিকের ঝুট সেক্টর দখল নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদ সহ বিএনপির অনেক নেতাসহ সন্ত্রাসী বাহিনী মরিয়া হয়ে উঠে। পুরো বিসিক শিল্পনগরীতে বিভিন্ন গ্রুপের লোকজন প্রতিনিয়ত মহড়া দিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে তৎপর ছিল। বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রাসেল মাহমুদ সহ তার বাহিনীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে বিসিকের ২নং গলি সহ মার্টিন গলির সকল কারখানার ঝুট সেক্টর দখল নেয়ার চেষ্টা চালায়।
এলাকাবাসী বিএনপি নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর বিসিকের ঝুট সেক্টর দখল নিতে একাধিক গ্রুপ তৎপর হয়ে উঠে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড রোধ এবং বিসিক শিল্পনগরীতে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ফতুল্লা থানা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পরামর্শে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা বিসিকের মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা করেন এবং শৃঙ্খল ভাবে যাতে গার্মেন্টের ঝুট বিক্রি হয় সেভাবে সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু কিছু সন্ত্রাসী এবং কয়েকজন দলের নেতা নেতৃবৃন্দদের সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের ক্ষমতার প্রভাবে ঝুট সেক্টর দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তারই বহি:প্রকাশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর ওরফে বরিশাইল্যা বিসিক জাহাঙ্গীর এর লোকজন একটা একটা গার্মেন্টের নামাতে গেলে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাসেল বাহিনীর লোকজন বাধা দেয় এবং তাদেরকে মারধর করে। পরে সংবাদ পেয়ে জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে লোকজন নিয়ে রাসেল বাহিনীর লোকদের ধাওয়া দেয়। পরে তাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় রাসেল বাহিনীর লোকজন জাহাঙ্গীর গ্রুপের দুজনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এসময় উভয় গ্রুপের আরো কয়েকজন আহত হয়। আর দুই গ্রুপের লোকদের হাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করতে দেখায় মালিক শ্রমিক ও সাধারন মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তখন খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কয়েকটি বাহিনী বিসিকে অবস্থান নিলে কৌশলে উভয় গ্রুপের লোকজন পালিয়ে যায়।
রাসেল মাহমুদ বলেন, জাহাঙ্গীর তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার লোকদের উপর হামলা চালায়। আমার লোকজন প্রথমে কাউকে কিছু বলে নাই কিন্তু আমার লোকদের উপর হামলা হওয়ায় শুধু মাত্র প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এলাকায় ছিলাম না সেই সুযোগ অস্ত্র নিয়ে আমার এলাকায় প্রবেশ করে তান্ডব চালানো হয়।
বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর জানান, আমার লোকজন একটা গার্মেন্টের ঝুট নামানোর জন্য মালিকের সাথে কথা বলতে যায়। তখন রাসেলের সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন রাস্তায় আটকে দেয় এবং মারধর করে এবং তাদের হাতে থাকা ছােড়া দিয়ে আঘাত করে। পরে সংবাদ পেয়ে আমরা লোকজন নিয়ে রাসেল বাহিনীর লোকদের ধাওয়া দিলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাসেল একটা হত্যা মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে গেলেও তার হুকুমে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার (ইনচার্জ) ওসি নুরে আজম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত আছে। কোন পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ দায়ের করে নাই।